বালা-মুসিবত থেকে রক্ষার উপায়



মুফতি মো. রফিকুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
অর্থ : যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট

অর্থ : যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট

  • Font increase
  • Font Decrease

কোনো রোগের কারণ ও উৎসমূল চিহ্নিত করার মাধ্যমে যেমন ওই রোগ থেকে প্রতিকারের উপায় তালাশ করা সহজ হয়, তেমনিভাবে বালা-মুসিবতের কারণ অনুধাবনের মাঝেই নিহিত রয়েছে তা থেকে উত্তরণের উপায়। নিম্নে সে বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-

তাওহিদ, রেসালাত ও আখেরাতে নির্ভেজাল বিশ্বাস
মানুষের যাবতীয় পঙ্কিলতা ও বিপর্যয়ের প্রধান কারণ হচ্ছে শিরক। অন্তর থেকে শিরক বিদূরিত হলে পাপের আশঙ্কা যেমন হ্রাস পায়, তেমনি জীবন থেকে পাপরাশি মৃতপাতার মতো ঝরে পড়ে। পাশাপাশি রেসালতের প্রতি নিখাদ বিশ্বাস ও বিশ্বনবীর মহিমাসমুজ্জ্বল পূতঃপবিত্র জীবনাদর্শ একনিষ্ঠ অনুসরণের মাধ্যমেই মানুষ গড়তে পারে পবিত্র মধুর জীবনধারা। আর আখেরাতের ওপর অকৃত্রিম বিশ্বাস এবং মহান প্রভুর সমীপে উপস্থিত হয়ে পার্থিব জীবনের যাবতীয় কর্মকাণ্ডের জার্রা জার্রা হিসাব প্রদানের ভয় মানুষকে রাখে সকল প্রকার অসৎ প্রবৃত্তি থেকে দূরে। ফলে মানুষের জীবন থেকে পাপপ্রবৃত্তি সমূলে উৎপাটিত হয়ে যায় এবং পাপের প্রগাঢ় তিমিরাচ্ছন্নতা যেসব বালা-মুসিবত ডেকে নিয়ে আসে, সেসব থেকেও সে পরিত্রাণ লাভ করে সুনিশ্চিতভাবে। তবে এসব বিশ্বাসমালা হতে হবে নির্ভেজাল, নিখুঁত ও সংশয়মুক্ত- যেন বিশ্বাসীর যাপিত জীবনের প্রতিটি পদক্ষেগে রচিত হয় তার বাস্তব ও কর্মময় সাক্ষ্য।

এ তিনটি মৌলিক শিক্ষা আত্মস্থ করেই আরবের আইয়্যামে জাহেলিয়াতের অসভ্য মানুষগুলো এমনভাবে পরিবর্তিত হয়েছিলেন। যার দ্বিতীয় দৃষ্টান্ত ধরাধামে আর কখনও পরিলক্ষিত হয়নি, আর সততা ইনসাফ ও বীরত্বে, মানবপ্রেম ও সৌহার্দ্য, সাধনায়-কৃচ্ছ্রতায়, ন্যায় প্রতিষ্ঠায় ও অন্যায় প্রতিরোধে, ত্যাগ ও সর্বমানবিক মমতা ও দায়িত্ববোধে উদ্দীপিত এসব সোনার মানুষই ছিলেন সর্বকালের সর্বশেষ্ঠ মানুষ।

পাপের আবিলতা থেকে মুক্ত থাকা
মানুষের স্বঘোষিত প্রকাশ্য শত্রু ইবলিসের প্রতারণার বিভ্রম যেহেতু সর্বক্ষণ তাকে ঘিরে রেখেছে, সেহেতু মানব প্রকৃতিতে পাপের প্রবণতা থাকা খুবই স্বাভাবিক। প্রবৃত্তি, সমাজ, পারিপার্শ্বিকতা ও প্রযুক্তির অপব্যবহার তাকে অধিকতর উৎসাহ জোগায় পাপের পঙ্কিল নর্দমায় সাঁতার কাটতে। এভাবে অব্যাহত পাপের কৃষ্ণথাবা মানুষের শ্বেতশুভ্র অন্তর্লোকে সৃষ্টি করে তমসাচ্ছন্ন মতিভ্রম। ফলে আসমানি গজবের নিরন্তর তরঙ্গপ্রবাহ মানবজীবনে বয়ে আনে ধ্বংসের তাণ্ডবনৃত্য। তাই যাবতীয় বালা-মুসিবত থেকে মুক্তিলাভের জন্য আমাদের পাপমুক্ত জীবন গড়ার প্রত্যয়ে কঠোর প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করতে হবে।

মুসিবত উত্তরণে সাধারণ করণীয় বিষয়
অন্যান্য বালা-মুসিবত উত্তরণে জরুরি যে বিষয়গুলো আমাদের গুরুত্বের সাথে স্মরণ রাখতে হবে সেগুলো হচ্ছে-

অন্তরে সাহস রাখা
বালা-মুসিবতের সময় গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য অন্তরে সাহস রাখা এবং মেজাজ স্থির রাখা। বিপদে ধৈর্যহারা হয়ে বিভিন্ন প্রকার শিরক কিংবা কুফরিসুলভ কথাবার্তা বললে, তা কখনোই বিপদ-আপদকে লাঘব করে না, বরং জিল্লতির মাত্রাকে বৃদ্ধি কারে দেয় শতগুণ!

হতাশ না হওয়া
বিপদ এবং মুসিবতে কোনোপ্রকার হতাশায় আক্রান্ত না হয়ে আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী থাকাই প্রত্যেক মুমিনের দায়িত্ব। কেননা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া কবিরা গোনাহ আর কোনো মানুষের জন্য শোভন কিংবা সমীচীন নয়, তার প্রতিপালকের করুণা থেকে হতাশায় নিপতিত হওয়া। কোরআন মাজিদে আশাব্যঞ্জক ভঙ্গিতে যেভাবে বিঘোষিত হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না।’ -সুরা যুমার : ৫৩

সুরা আলমনাশরাহে আল্লাহ পাক প্রদান করেছেন প্রশান্তিদায়ক প্রতিশ্রুতির কথা, ‘কষ্টের সঙ্গেই তো স্বস্তি আছে। নিশ্চয়ই কষ্টের সঙ্গেই আরাম আছে।’ -আয়াত : ৫-৬

মহানবীর হাদিস শরিফেও আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ে যাওয়াকে সর্বাপেক্ষা বড় গোনাহ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। -মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক

তাই বালা-মুসিবতের সময় আমাদের হতে হবে আশাদীপ্ত হৃদয়ে কর্মমুখর।

আল্লাহর ওপর নিশ্চিন্তে ভরসা রাখা
যে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করে দুশ্চিন্তা তার জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা প্রাণঘাতী মহামারিও তাকে উদ্বিগ্ন ও পেরেশান করতে সক্ষম হয় না। কেননা আল্লাহর ওপর নিশ্চিন্তে ভরসাস্থাপনকারী ব্যক্তি থাকে সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর কুদরতি জিম্মায়। ফলে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুলকারীর যাবতীয় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বুদবুদের মতো মিলিয়ে যায়, তার দুঃখ পরিণত হয় আনন্দে আর অনিরাপত্তার স্থান দখল করে নিরাপত্তার অচ্ছেদ্যজাল। সুরা তালাকে সে অভয়বাণী যেভাবে উচ্চারিত হয়েছে, তা এরকম- ‘যে আল্লাহর ওপর ভরসা করে, আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট।’ -আয়াত : ৩

আল্লাহর জিকির
বালা-মুসিবত উত্তরণে উঠতে-বসতে, চলতে-ফিরতে আল্লাহর জিকির তথা আল্লাহর গুণবাচক নামসমূহকে পরম শ্রদ্ধা ও যত্নে উচ্চারণ ও সেগুলো স্মরণ রেখেই যাবতীয় কাজকর্ম সম্পাদন করা একান্ত অপরিহার্য। পবিত্র কোরআনে যেমনটি ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি পরম করুণাময়ের জিকির থেকে বিমুখ থাকে, আমি তার জন্য এক শয়তানকে নিয়োজিত করে দিই। ফলে সে হয়ে যায় তার সাথী।’ -সুরা যুখরুফ : ৩৬

সুরা ত্বহায় বলা হয়েছে, ‘যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ থাকবে, তার জন্য হবে নিশ্চিত এক সংকুচিত জীবন।’ -আয়াত : ১২৪

জিকিরের মাধ্যমে অন্তরের প্রশান্তি অর্জিত হয়, বিপদ-আপদ বিদূরিত হয়ে যায় আর প্রতিপ্রাপ্য হয় মহান প্রভুর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা।

অর্থ : কষ্টের সঙ্গেই তো স্বস্তি আছে। নিশ্চয়ই কষ্টের সঙ্গেই আরাম আছে

 

কোরআন তেলাওয়াত
সর্বশেষ ও চূড়ান্ত আসমানি কিতাব কোরআন সুনিশ্চিতভাবে মানুষের জন্য শিফা ও রহমত। মানুষের দৈহিক ও আত্মিক আরোগ্য লাভের মাধ্যম। মহান আল্লাহপাক যেমনটি বলেছেন, ‘আমি কোরআনে যা কিছু নাজিল করেছি, যা মুমিনদের জন্য শিফা ও রহমত!’ -সুরা বনী ইসরাঈল : ৮২

মুসিবতের রাহুথাবায় জীবনের পথপরিক্রমা সংকীর্ণ হয়ে গেলে কিংকর্তব্যবিমুঢ় পথহারাকে এই কোরআনই বাতলে দেয় সঠিক পথের দিশা। তাই বালা-মুসিবতের সময় অধিকহারে অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াত খুবই ফলদায়ক ও তাৎপর্যবাহী।

একাকিত্ব পরিহার এবং সৎসঙ্গ অন্বেষণ
মুসিবতের সময় একাকিত্ব পরিহার করে নেক্কার ও বুদ্ধিদীপ্ত সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানো একান্ত অপরিহার্য। কেননা, নিঃসঙ্গ মানুষকে চিরশত্রু শয়তান সহজে ধোঁকা দিতে পারে। ফলে ইবলিশি কূহকে পড়ে বিপদমুক্তির আশায় অধিকতর বিপদের ধ্বংস-গহ্বরে নিমজ্জিত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

অধিকহারে দান-সদকা
হজরত রাসুলে মকবুল (সা.) বলেছেন, ‘গোপনে দান প্রতিপালকের ক্রোধকে নির্বাপিত করে।’ –তাবরানি

তিনি চন্দ্রগ্রহণের সময় নামাজ, দাসমুক্তি, বেশি বেশি জিকির এবং দান-সদকা করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। কেননা এসব কাজ বালা-মুসিবত থেকে পরিত্রাণ লাভের মাধ্যম। হাফেজ ইবনুল কায়্যিম এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিভিন্ন প্রকার বালা-মুসিবত প্রতিরোধে দান-সদকার তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব রয়েছে, যদিও দানকারী পাপী, অত্যাচারী; এমনকি ছোটখাটো কুফরিকারীও হয়।’

নফল নামাজ
হজরত রাসুলে কারিম (সা.) কোনো বিষয়ে চিন্তাগ্রস্ত বা পেরেশান থাকলে নামাজে নিমগ্ন হতেন বলে আবু দাউদ শরিফে বর্ণিত হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি। আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামও বিপদে নিপতিত হলে নামাজে মনোযোগী হতেন বলে বিশ্বনবীর আরেকটি বর্ণনা থেকে অবগত হওয়া যায়। মহাগ্রন্থ আল কোরআনেও বালা-মুসিবত উত্তরণে নামাজ আদায়ের তাকিদ দিয়ে বলা হয়েছে, ‘তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য কামনা করো।’ -সুরা বাকারা : ৪৫

ধৈর্যশীল হওয়া
বালা-মুসিবতে ধৈর্যধারণকারীদের জন্য মহাপ্রতিদানের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কোরআনে কারিমের নব্বই স্থানে সবরের কথা আলোচনা করেছেন। সুরা বাকারার ১৫৩ নম্বর আয়াতে তিনি বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয় আল্লাহ্ ধৈর্য অবলম্বনকারীদের সঙ্গে আছেন।’

মহানবী (সা.) এক বর্ণনায় সবরকে ‘জ্যোতি’ হিসেবে এবং আরেক হাদিসে ধৈর্যের বিনিময় ‘জান্নাত’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহতায়ালা ধৈর্যের চেয়ে উৎকৃষ্ট এবং ব্যাপকতর দান কাউকে দেননি।’ –সুনানে আবু দাউদ

হজরত আলী (রা.)-এর মতে, ‘ঈমানের ক্ষেত্রে সবরের উপমা হলো- দেহের মধ্যে মাথার ন্যায়, যার ধৈর্য নেই, তার ঈমান নেই।’

আমলে সালেহ করা
বিভিন্ন নেক আমলের মাধ্যমে মহামহিম স্রষ্টার নিকট বিপদ দূরীকরণের জন্য বিনীত প্রার্থনা উপস্থাপন করাও মুসিবত উত্তরণে সবিশেষ ফলদায়ক বলে হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনায় পাওয়া যায়। পবিত্র কোরআনেও বিভিন্নভাবে আমলে সালেহর মাধ্যমে বিপদমুক্তির কথা বর্ণিত হয়েছে। যেমন সুরা আরাফে বলা হয়েছে, ‘অবশ্যই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের অতীব নিকটবর্তী।’ -আয়াত : ৫৬

নবী কারিম (সা.) বলেন, ‘সৎকর্ম সম্পাদন বালা-মুসিবত, বিপদাপদ ও জিল্লতি থেকে রক্ষার মাধ্যম।’ -আত তারগিব

দোয়া 
বিপদ-আপদে তো অবশ্যই, যেকোনো প্রয়োজনে, প্রতি মুহূর্তে মানুষ তার মহান প্রতিপালকের নিকট কাতর প্রার্থনা জানাবে- এ তো খুবই স্বাভাবিক কথা। আল্লাহতায়ালা এই ধরনের আর্তিকে যে বিশেষ পছন্দ করেন, সেটাও হাদিসের বর্ণনা থেকে আমরা অবগত হতে পারি। কিন্তু সংকট উত্তরণের বিজ্ঞানসম্মত পন্থা কিংবা কার্যকর কর্মপদ্ধতি এড়িয়ে শুধু দোয়া-মোনাজাতের শিক্ষা নবী কারিম (সা.) দেননি। কেননা সংকট উত্তরণে যথাযথ উপায় অন্বেষণে অনিচ্ছুক অকর্মণ্য মানুষের প্রার্থনা মহান আল্লাহর দরবারে কোনো আবেদন জাগায় না। দৃষ্টান্ত হিসেবে আমরা মহানবীর নেতৃত্বে সংঘটিত সর্বাত্মক সশস্ত্র যুদ্ধগুলোর কথা এ প্রসঙ্গে স্মরণ করতে পারি। সেসব যুদ্ধে সৈন্যসংখ্যা কিংবা অস্ত্রশস্ত্র সবদিক দিয়ে কয়েকগুণ পিছিয়ে থেকেও মুসলিম সৈন্যদলের সিপাহশালার বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তার সৈন্যদলকে অমিতবিক্রমে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করতেন, তারপরই আল্লাহর দরবারে হতেন ফরিয়াদমুখর। সুতরাং বিপদাপদে আমাদেরও বাস্তবসম্মত, কার্যকর ও বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণের পরই মহান প্রভুর দরবারে আকুল আকুতি জানাতে হবে।

পাশাপাশি এ কথাও গভীর প্রতীতী রাখতে হবে যে, সমগ্র বিশ্ববাসীর সম্মিলিত কর্মপ্রচেষ্টাও বিফল, ব্যর্থ হতে বাধ্য যদি তাতে মহান প্রভুর ইশারা না থাকে। সুতরাং আমাদের গৃহীত শত পদক্ষেপও ফলশূন্য হতে পারে, যদি আমরা বিপদ-আপদে রাব্বে কারিমের দরবারে আকুতিমুখর ধরনা না দিই।

ফের বাড়ল হজ নিবন্ধনের সময়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত সময় অনুযায়ী আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।

সোমবার (২৭ মার্চ) নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৩৯ জন। কোটা পূরণে এখনো নিবন্ধন বাকি রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৯। এর মধ্যে সরকারিতে ফাঁকা ৫ হাজার ১০৮, বেসরকারিতে ৪ হাজার ৭৫১।

হজ অনুবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে কতজন হজ করতে যাবেন তা সৌদি সরকারকে জানানোর শেষ তারিখ আগামী ৯ মে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় শুরু থেকেই নিবন্ধনে ভাটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু তারা তো কাউকে ডেকে এনে নিবন্ধন করাতে পারেন না।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।

;

১৮ এপ্রিল পবিত্র লাইলাতুল কদর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে তারাবির নামাজ আদায় করেন। শেষ রাতে প্রথম সেহরি খাওয়া হবে।

এই হিসেবে আগামী ১৮ এপ্রিল (২৬ রমজান) মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মুসলমানদের জন্য রমজান মাস রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের বার্তা বয়ে আনে। সংযমের এ মাসে মুসলিমরা আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইবাদত-বন্দেগি করে থাকেন।

;

রোজার পুরস্কার মিলবে যেসব আমলে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মাহে রমজানে কোনোভাবেই আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টিমূলক কোনো কাজে লিপ্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সর্বোপরি মাহে রমজান ও রোজা মহান মালিককে সন্তুষ্ট করার সুবর্ণ অবসর। এ জন্য আমাদের মাহে রমজান ও রোজা হওয়া চাই হারাম, কবিরা গোনাহ ও নাফরমানি মুক্ত। মিথ্যা, প্রতারণা, অন্যায়, অত্যাচার, পাপাচার, সুদ, ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত হওয়া। তবেই আমরা রমজান ও রোজার পূর্ণাঙ্গ পুরস্কার গ্রহণ করতে পারব।

আল্লাহ পাককে সন্তুষ্ট করার, মুত্তাকি হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করতে পারব। এ লক্ষে রমজান মাসে কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার। এর অন্যতম হলো-

সময়ের অপচয়রোধ

জীবন সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টার সমষ্টি। এই ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র সময়ই আমার জীবন। জীবনের একটি মুহূর্ত বেখেয়াল, অবহেলায় কাটিয়ে দেওয়া মানে এই সময়টা নষ্ট করে ফেলা। সে আর কখনও ফেরত আসবে না। এক একটি মুহূর্ত জীবনে একবারই আসে। প্রত্যেকটি দিন আগমন করে আমাকে আহবান করে তাকে ভালোভাবে ব্যবহার করার জন্য। সে এও বলে দেয়, হিসাবের দিনেই কেবল সে আবার আমার সামনে হাজির হবে। যে ব্যক্তি সময়ের সদ্ব্যবহার করে, দুনিয়ার জীবনে সে সফলতা পায়। আমার রমজান ৩০ দিনের হলে ২৫,৯২,০০০ সেকেন্ডের সমষ্টি। রমজানের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে শুরু করে। আমার কাছে রমজানের প্রতিটি সেকেন্ড মূল্যবান। আমি, আপনি যদি হিসাব করে এই সেকেন্ডগুলো কাজে লাগাতে পারি, তবে আমি আপনি অবশ্যই সফল হতে পারব। একজন পরীক্ষার্থী যেমন প্রত্যেকটি সেকেন্ডের হিসাব রেখে উত্তর লিখতে থাকে। তেমনি আমার আপনারও এই মূল্যবান সময়ের যথাযথ কদর করে রোজা পালন করলে, এই বছরের রমজান আমার আপনার জীবনে এক ব্যতিক্রম রমজান মনে হবে এবং এক ব্যতিক্রম ফল বয়ে আনবে। তাই গল্পগুজব, আড্ডা, টিভি দেখা, ফেসবুক অনলাইনে সময় ব্যয়, অবসরে শুধু ঘুমানো, এখানে সেখানে ঘুরাফেরা করা ইত্যাদি কাজগুলো বর্জন করি। তবে আমার রমজান হবে প্রাণবন্ত।

কথা হোক কম

যখন আপনি আমি কথা কম বলব, তখন অনেক অনর্থক এমন কি ফাহেশা কথা থেকে বেঁচে যাব। জীবনের অনেক সময়ও বেঁচে যাবে। বেশি কথা বললে, গীবত, পরনিন্দা, মিথ্যা এ ধরণের অনেক কথা মুখ ফঁসকে বেরিয়ে যেতে পারে। যে সময় আমি অযথা গল্প কথায় লিপ্ত হব, এই সময়টাকে আমি কোরআন তেলাওয়াত, তাফসির অধ্যয়ন, হাদিস পাঠ, বিভিন্ন মাসনুন দোয়া, ইস্তেগফার, দরুদ শরিফ পাঠ, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো বিভিন্ন জিকিরে মশগুল হতে পারি। অনায়াসে অনেক বরকতের ভাগিদার হতে পারি।

কাজে গতিময়তা

কাজ ছাড়া জীবন অচল, আমরা কেউ চাকুরি করি, কেউ ব্যবসা, কেউ কৃষিকাজ ইত্যাদি। এই রমজানে আমার কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। কাজের গতি বাড়িয়ে দেই। কাজের গতি বাড়িয়ে কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। এই বেঁচে যাওয়া সময়টিকে আমি ইবাদত-বন্দেগি, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ, ইস্তেগফার পাঠে ব্যয় করি। তাহলে দেখা যাবে কাজের এই গতিময়তা পুরো বছর আমাকে বরকত দেবে। আমার অনেক সময় হাতে থাকবে, বিশেষভাবে মাওলাকে ডাকার জন্য আমার সময়ের অভাব হবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া বর্জন

রমজান মাস আমার জন্য আমার মহান রবের এক মহান উপহার। এই মাস সওয়াব কামাইয়ের মাস। এই মাস সোশ্যাল নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার মাস নয়। আপনার বিশেষ কোনো প্রয়োজনে আপনি নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু ফেসবুক, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রাম, ইউটিউভ ইত্যাদি মাধ্যমগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। আপনি হয়তো ভালো কিছু দেখতে চান, ভালো কিছু শুনতে চান। এই ভালো দেখার সঙ্গে, ভালো শোনার সঙ্গে কিছু খারাপও আপনার নজরে এসে যাবে। এই সময় আমি আপনি নেটওয়ার্কহীন অন্য ইবাদতে মশগুল হই। যার নেটওয়ার্ক আমার আর আমার রবের সঙ্গে সংযোগ করে দেবে- ইনশাআল্লাহ।

;

শুক্রবার থেকে রোজা শুরু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ বুধবার দেশের কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামী শুক্রবার থেকে রোজা শুরু হচ্ছে।

বুধবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠক করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি এ কথা জানায়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী ও কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।

বৈঠক শেষে জানানো হয়, বাংলাদেশের কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হবে রমজান মাস গণনা। সে ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার দেশের মসজিদগুলোতে বাদ এশা তারাবির নামাজের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র রমজানের কার্যক্রম শুরু করবেন। এরপর ওই দিন দিবাগত ভোররাতে সাহ্‌রি খেয়ে প্রথম রোজা রাখতে হবে।

;