হজযাত্রী নিবন্ধনের সময়সীমা শেষ হয়েছে বুধবার (৫ এপ্রিল)। এ বছর হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় সাত দফা বাড়ানোর পরও পূরণে বাকি রয়েছে আট হাজারেরও বেশি।
বুধবার (৫ এপ্রিল) রাতে হজ ওয়েব পোর্টালে দেখা যায়, ১ লাখ ১৮ হাজার ৯৫৪ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়েছেন। এর মধ্যে সরকারিভাবে ৯ হাজার ৯৯৩ জন এবং বেসরকারিভাবে ১ লাখ ৮ হাজার ৯৬১ জন নিবন্ধিত হয়েছেন।
সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন ও অবশিষ্ট ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন। সে হিসেবে এখনো কোটা পূরণে ৮ হাজার ২৪৪ জন হজযাত্রীর নিবন্ধন বাকি আছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছর হজে যেতে হজযাত্রী নিবন্ধন শুরু হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। ২৩ ফেব্রুয়ারি নিবন্ধনের শেষ সময় থাকলেও তা বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি করা হয়। তবে কোটার বিপরীতে খুবই কম সংখ্যাক হজযাত্রী নিবন্ধিত হন। পরে নিবন্ধনের সময় ৭ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সেই সময়েও কোটার অর্ধেকেরও কম হজযাত্রী নিবন্ধিত হয়।
সর্বশেষ নিবন্ধনের সময় ১৬ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ সময়ের মধ্যেও সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই নিবন্ধনের সময় ২১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরে সময় আরেক দফা বেড়ে হয় ৩০ মার্চ পর্যন্ত। ওই সময়ের মধ্যে কোটা পূরণ না হলে শেষে নিবন্ধনের সময় ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
আল্লাহর নিকট বান্দার দোয়া অপেক্ষা অধিক মূল্যবান জিনিস আর কিছু নেই
ইসলাম
দোয়া একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। দোয়া আমাদের জন্য সবসময় উপাদেয় ও উপকারী। দোয়ার মাধ্যমে ইবাদতে নিমগ্ন হলে আত্মা প্রশান্তি লাভ করে। মনের ভার কমে, পেরেশানি দূর হয়। জীবনের সব কাজ আল্লাহর নামে এবং দোয়ার মাধ্যমে শুরু করলে তা অত্যন্ত সফলতা ও স্বার্থকতা লাভ করে। তাই আমাদের উচিত সর্বদা দোয়ার মাধ্যমে কাজ শুরু ও শেষ করা। হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দোয়াই ইবাদতের মগজ।’ -সুনানে তিরমিজি : ৩২৯৩
দোয়া সম্পর্কে রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘আল্লাহর নিকট বান্দার দোয়া অপেক্ষা অধিক মূল্যবান জিনিস আর কিছু নেই।’ -সুনানে তিরমিজি : ৩২৯২
অন্য বর্ণনায় আছে, ‘যার জন্য দোয়ার দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে (যাকে দোয়ার তাওফিক দেওয়া হয়েছে), তার জন্য রহমতের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে।’ -সুনানে তিরমিজি : ৩৫৪৮
দয়াময় আল্লাহর দরবারে একাগ্রচিত্তে কাকুতি-মিনতিসহ দোয়া করলে কবুল হয়। কায়মনোবাক্যে বিনয়ের সঙ্গে দোয়া না করলে তা কবুল হয় না। এখানে দোয়া কবুলের কিছু সময় ও স্থান সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
১. সুরা ফাতেহা পাঠ করার পর, সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ করে দোয়া করলে তা কবুল হয়। -সহিহ মুসলিম : ৮০৬ ২. অনুপস্থিত ব্যক্তির জন্য দোয়া। কোনো মুসলিমের অগোচরে অন্য মুসলিমের জন্য দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়। -সহিহ মুসলিম : ৬৮২২
হজের স্থানসমূহের কৃত দোয়া তাড়াতাড়ি কবুল হয়
৩. জালেমের বিরুদ্ধে মাজলুমের দোয়া কবুল হয়। -সুনানে তিরমিজি : ৩৪৪৮ ৪. মা-বাবা তার সন্তানের জন্য দোয়া করলে, সেই দোয় কবুল হয়৷ -সুনানে তিরমিজি : ৩৪৪৮ ৫. নেককার সন্তানের দোয়া কবুল হয় (বাবা-মায়ের জন্য তাদের মৃত্যুর পর)। -সুনানে আবু দাউদ : ২৮৮০ ৬. আরাফাতের ময়দানে দোয়া করলে তা কবুল হয়। -সুনানে তিরমিজি : ৩৫৮৫ ৭. বিপদগ্রস্ত অসহায় ব্যক্তির দোয়া তাড়াতাড়ি কবুল হয়। -সুরা নমল : ৬২ ৮. সেজদায় দোয়া করলে তা কবুল হয় (তবে সেজদায় আরবিতে দোয়া করতে হবে)। -সুনানে নাসায়ি : ১০৪৫ ৯. হজের স্থানসমূহের কৃত দোয়া তাড়াতাড়ি কবুল হয়। যেমন- আরাফাতের ময়দান, মুজদালিফা, মিনা...। -ইবনে মাজাহ : ২৮৯২
১০. হজ পালন করা অবস্থায় হাজির দোয়া কবুল হয়। -ইবনে মাজাহ : ২৮৯৩ ১১. ওমরাহ করার সময় ওমরাহকারীর দোয়া কবুল হয়। -সুনানে নাসায়ি : ২৬২৫ ১২. আজানের পর ইকামতের আগ পর্যন্ত দোয়া কবুল হয়। -সুনানে তিরমিজি : ২১০ ১৩. দুশমনের মোকাবেলার (যুদ্ধ) দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়। -সুনানে আবু দাউদ : ২৫৪০ ১৪. বৃষ্টি বর্ষণকালে দোয়া করলে তা কবুল হয়। -সুনানে আবু দাউদ : ২৫৪০ ১৫. শেষ রাতের দোয়া অর্থাৎ তাহাজ্জুদের সময়কার (রাতের শেষ তৃতীয়াংশ) দোয়া কবুল হয়। সহিহ বোখারি : ১১৪৫
১৬. জুমার দিন (সারাদিন ও রাত) দোয়া কবুল হয়, বিশেষ করে দুই খুতবার মধ্যবর্তী সময় ও আসরের শেষ দিকে মাগরিবের আগে তালাশ করার জন্য নির্দেশ আছে। -সুনানে নাসায়ি : ১৩৮৯ ১৭. লাইলাতুল কদরের রাতের দোয়া কবুল হয়। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম ১৮. আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়কার দোয়া কবুল হয়। -সহিহ মুসলিম : ৬৬৮ ১৯. ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পর দোয়া করলে কবুল হয়। -সুনানে তিরমিজি : ৩৪৯৯ ২০. মুসাফিরের দোয়া কবুল হয় (সফর অবস্থায়)। -সুনানে তিরমিজি : ৩৪৪৮ ২১. রোজাদার ব্যক্তির দোয়া কবুল হয় (রোজা অবস্থায়)। -ইবনে মাজাহ : ১৭৫২ ২২. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া কবুল হয়। -সুনানে তিরমিজি : ২৫২৬
২৩. দোয়ায়ে ইউনুস পাঠ করে দোয়া করলে তা কবুল হয়। -সহিহ তিরমিজি : ৩৫০৫ দোয়া ইউনুস হলো- লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নী কুংতু মিনাজ জোয়ালিমীন।
হাদিসে মোট তিনটি ইসমে আজম এসেছে, এর যেকোনো একটি পড়লেই হবে, তবে এটিই বেশি প্রচলিত।
২৫. বিপদে পতিত হলে যে দোয়া পড়া হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) এবং (আল্লাহুম্মা আজিরনী ফি মুসিবাতি ওয়াখলিফলি খাইরাম মিনহা) তখন দোয়া কবুল হয়। -মিশকাতুল মাসাবিহ : ১৬১৮
২৬. জমজমের পানি পান করার পর দোয়া করলে তা কবুল হয়। -ইবনে মাজাহ : ৩০৬২ দু্ই হাত তুলে দোয়া করা, কারণ আল্লাহতায়ালা বান্দার খালি হাত ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন। -সুনানে আবু দাউদ : ১৪৮৮
আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে বেশি বেশি দোয়া করার তওফিক দিন এবং সবার দোয়া কবুল করে নিন। আমিন!
ঘানিম ফের বিশ্বকে মুগ্ধ করলেন দুই হাতে পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ করে
ইসলাম
এই সময়ের সবচেয়ে আলোচিত ও অনুপ্রেরণা সৃষ্টিকারী ব্যক্তিত্ব কাতারের নাগরিক ঘানিম মুহাম্মদ আল মুফতাহ। সবশেষ ফিফা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঘানিম কোরআন তেলাওয়াত করে বিশ্ববাসীকে মুগ্ধ করেছিলেন। ২১ বছর বয়সী বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এক যুবকের শরীরের অর্ধেক অংশ নেই। তার পরও তার কর্মকাণ্ডে মুগ্ধ বিশ্ববাসী। সেই ঘানিম ফের বিশ্বকে মুগ্ধ করলেন দুই হাতে পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ করে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-আরাবিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি ঘানিম আল-মুফতাহ ওমরাহ পালন করতে সৌদি আরব যান। ওমরাহ পালনের সময় মসজিদে হারামের প্রশাসন তাকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেয়। নিরাপত্তা কর্মীরাও তাকে সাহায্য করেন। তার জন্য ইলেকট্রিক হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করা হলেও তিনি হাতের সাহায্যেই স্বাচ্ছন্দ্যে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেন।
ঘানিম আল-মুফতাহ বলেন, ‘আমার পা না থাকলে কী হবে, আমার আল্লাহ আমাকে শক্তিশালী হাত দিয়ে কৃতজ্ঞ করেছেন। এ হাতই আমার পায়ের বিকল্প। আমি আল্লাহর দেওয়া এ হাত দিয়েই বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করবো।’
এ সময় পবিত্র কোরআনের একটি আয়াতও তিনি তেলাওয়াত করেন, ‘আল্লাহ কাউকে তার শক্তির বেশি বোঝা দেন না।’ -সরা আল-বাকারা : ২৮৬
এর আগেও ২০১৭ জানুয়ারি মাসে ঘানিম পবিত্র ওমরাহ পালন করেন। তথনও তিনি হাতে ভর দিয়ে পবিত্র কাবা তাওয়াফ করেন।
ঘানিম আল-মুফতাহ একজন ইউটিউবার এবং উদ্যোক্তা। ২০১৭ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে কাতারের সর্বকনিষ্ঠ উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেন। ইংল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ঘানিম গত বিশ্বকাপে ফিফার শুভেচ্ছাদূত মনোনীত হন।
ঘানিম তার পরিবারের সাহায্যে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গঠন করেন। তার মতো যারা পায়ে চলাচল করতে পারেন না, সংস্থাটি থেকে তাদেরকে হুইলচেয়ার উপহার দেয়া হয়। তিনি একজন ‘মানবদরদি নায়ক’ হিসেবে গোটা পৃথিবীতে পরিচিত। ২০১৪ সালে কুয়েতের আমির শেখ শাবাহ আল আহমদে আল শাবাহ তাকে ‘শান্তির দূত’ নামে অভিহিত করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাখ লাখ ফলোয়ার রয়েছে তার।
আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ বাংলাদেশির ঈর্ষণীয় সাফল্য
ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ বাংলাদেশির ঈর্ষণীয় সাফল্য
ইসলাম
মিসরের বিশ্ববিখ্যাত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদিস বিভাগের সকল বিদেশি স্নাতকদের মধ্যে চার বছরের সমষ্টিগত ফলাফলে শীর্ষ দশে স্থান করে নিয়েছেন বাংলাদেশি তিন শিক্ষার্থী।
সম্প্রতি আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের অফিসিয়াল ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে স্নাতক মেধা তালিকা প্রকাশ করে তাদের অভিনন্দন জানায়৷ প্রকাশিত ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা যায়।
তথ্যমতে, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ইসলামিক থিওলজি ফ্যাকাল্টির হাদিস ও উলুমুল হাদিস ডিপার্টমেন্টের স্নাতক চার বছরের সমষ্টিগত ফলাফলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেরা দশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশি তিন শিক্ষার্থী।
এর আগেও আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। সেই ধারাবাহিকতায় হাদিস ডিপার্টমেন্টে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের এ সাফল্য এক গৌরবময় সংযোজন।
স্নাতক সেরা দশে জায়গা করে নেয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুহাম্মদ তাওহীদুল ইসলাম দ্বিতীয় হয়েছেন। তার প্রাপ্ত গড় নম্বর ৯০ শতাংশ। তিনি পাবনা জেলার গোলাম মোস্তফার সন্তান।
মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন জাফর উল্লাহ, প্রাপ্ত নম্বর ৯০ শতাংশ। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আব্দুল হামিদের সন্তান।
মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থান অর্জনকারী মুহাম্মদ আব্দুস সালাম পেয়েছেন ৮৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ নম্বর। তিনি লক্ষ্মীপুর জেলার মাওলানা আবুল বাশারের সন্তান।
উল্লেখ্য, আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য অনুষদ ও ধর্মতত্ত্ব অনুষদের অন্য বর্ষগুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গৌরবময় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন৷ এদিকে আল-আজহারে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক (সানুভি) পরীক্ষায় ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে সেরা দশের সাতজনই ছিল বাংলাদেশের শিক্ষার্থী।
মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থী মুহাম্মদ তাওহীদুল ইসলাম তার সফলতার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, সর্বপ্রথম আমি শোকরিয়া আদায় করছি সেই মহান রবের, যার অশেষ কৃপায় এই অর্জন। কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি বাবা-মা ও উস্তাদগণ এবং সেসব প্রিয়জনদের প্রতি যারা আমাকে আমার লক্ষ্যবস্তু পর্যন্ত পৌঁছতে সার্বিকভাবে সাপোর্ট করে যাচ্ছেন। জীবনের এই অর্জন মোটেই কাঙ্খিত লক্ষ্যবস্তু নয়; তবে জীবনের পরবর্তী ধাপগুলোর জন্য এটা অনুপ্রেরণা। আমার স্বপ্ন বিশ্বময় ইসলামের খেদমত এবং দেশ-জাতি ও মুসলিম উম্মাহর জন্য কাজ করা৷
গফরগাঁওয়ের খানকায়ে মাদানিয়ায় ৩ দিনের ইসলাহি জোড় নভেম্বরে
ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
খানকায়ে মাদানিয়ার মুতাওয়াল্লি মুফতি আনোয়ার মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ পরামর্শ সভা
ইসলাম
আলেম-উলামাদের প্রাণকেন্দ্ৰ ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী এলাকা গফরগাঁওয়ের খানকায়ে মাদানিয়ার ৩ দিনব্যাপী বার্ষিক ইসলাহি জোড়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
রবিবার (১ অক্টোবর) বাদ মাগরিব খানকায়ে মাদানিয়ার মুতাওয়াল্লি মুফতি আনোয়ার মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিশেষ পরামর্শ সভায় বার্ষিক ইসলাহি ও তালিমি জোড়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়। পরামর্শ সভা সঞ্চালনা করেন মাওলানা কাউসার আহমদ।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ২৩, ২৪ ও ২৫ নভেম্বর (বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার) খানকায়ে মাদানিয়ার ৩ দিনব্যাপী বার্ষিক ইসলাহি ও তালিমি জোড় অনুষ্ঠিত হবে এবং রবিবার বাদ ফজর আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে জোড়ের সমাপ্তি হবে।
৩ দিনের এই ইসলাহি ও তালিমি জোড়ে দেশের বিখ্যাত আলেমরা উপস্থিত হয়ে কোরাআন-হাদিসের আলোকে বয়ান পেশ করবেন। ইসলাহি জোড়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য সালেকিন জামাতবদ্ধভাবে তিন দিন থাকার জন্য আগমন করেন। জোড়ের ৩ দিন প্রত্যেক নামাজের পর মাসনুন সুরা পাঠসহ বাদ ফজর ও বাদ মাগরিব শায়খের তত্বাবধানে ছয় তাসবিহর জিকিরের আমল হয়। মহতি এই আয়োজনে নামাজ, তেলাওয়াত, জিকির ও তাসবিহ-তাহলিলের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বিষয়ে তালিম দেওয়া হয়।
পরামর্শ সভায় মাওলানা বেলাল হোসাইন, মুফতি ইউসুফ জামিল, মুফতি নোমান আহমদ, মাওলানা হাসিবুল ইসলাম, মুক্তাদির সাকী চৌধুরী, খলিলুর রহমান ও রাহাত হোসাইনসহ খানকার শুভাকাঙ্খী এবং মুফতি আনোয়ার মাহমুদের কয়েকজন মুরিদ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ফেদায়ে মিল্লাত সাইয়্যিদ আসআদ মাদানি রহমাতুল্লাহি আলাইহির নেক তাওয়াজ্জুতে তার খাস খাদেম ও খলিফা মুফতি আনোয়ার মাহমুদ ফেদায়ে মিল্লাতের রেখে যাওয়া আমানত সংরক্ষণ এবং আত্মশুদ্ধি, তালিম, তাজকিয়া, খেদমতে খালকসহ সমাজের সর্বস্তরে ইসলামের শাশ্বত আহ্বানকে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ২০০৭ সালে গফরগাঁও উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামে (হালিমাবাদ) খানকায়ে মাদানিয়া প্রতিষ্ঠা করে ইসলাহি কার্যক্রম শুরু করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে খানকায় বিশ্বখ্যাত বুজুর্গ আওলাদে রাসুল সাইয়্যিদ আরশাদ মাদানি, সাইয়্যিদ আসজাদ মাদানি ও সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানি ভারত থেকে একাধিকবার তাশরিফ এনেছেন। এছাড়া আরো বিশিষ্ট বুজুর্গানে দ্বীন নিয়মিত তাশরিফ আনছেন এবং জনসাধারণ ও সালিকদের উদ্দেশ্যে ইসলাহি বয়ান করছেন। মানুষ তাদের থেকে ফয়েজ হাসিল করে বিভিন্নভাবে উপকৃত হচ্ছে।
গত ৬ বছর ধরে চলে আসা ৩ দিনব্যাপী এই ইসলাহি জোড় অত্যন্ত সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। আগত সালেকিনদের জন্য থাকা-খাওয়ার সু ব্যবস্থা করা হয়।