১১ হাজার ১৬৭ হজযাত্রী ভিসার অপেক্ষায়
হজযাত্রীদের ভিসার জন্য আবেদনের শেষ হয়েছে ১১ মে (শনিবার)। তবে এখনও ১১ হাজার ১৬৭ জনের ভিসা হয়নি। সৌদি সরকার যদি সময় না বাড়ায় তবে এসব হজযাত্রীদের চলতি বছর হজে যাওয়া অনিশ্চয়তায় পড়বে।
হজ অফিসের সর্বশেষ তথ্য বলছে, রোববার (১২ মে) দুপুর পর্যন্ত মোট ভিসা পেয়েছেন ৭২ হাজার ১৩৮ জন। ২৫৯ জনের ভিসা প্রিন্টের অপেক্ষায় রয়েছে। সে হিসেবে এখনও ভিসা পাননি ১১ হাজার ১৬৭ জন।
জানা গেছে, যারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভিসা পায়নি, তাদের জন্য নতুন করে ভিসার আবেদন করা হয়েছে। এখনও ভিসা অনলাইন সিস্টেম চালু আছে। বাকিদের ভিসা দুয়েক দিনের মধ্যে হয়ে যাবে।
ভিসার জন্য আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে কিনা, জানতে চাইলে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম জানান, সময় বাড়ানো হবে কি না তা রোববার বা সোমবারই জানা যাবে। তবে হজ ভিসা সিস্টেম চালু আছে এবং ভিসা ইস্যু চলমান আছে।
এদিকে তৃতীয় দফায় ভিসা আবেদনের সময় বাড়ানোর জন্য সৌদি সরকারকে চিঠি দিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান।
এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মু: আ: হামিদ জমাদ্দার জানান, হজযাত্রীদের ভিসা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। সব হজযাত্রীর ভিসা হওয়ার বিষয়ে কাজ করছে মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা সৌদি সরকারের উমরা ও হজ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি, ভিসা আবেদনের সময় বাড়বে।
মু: আ: হামিদ জমাদ্দার জানান, বেশিরভাগ হজযাত্রী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ পালন করতে যায়। এজেন্সিগুলো বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও তারা সৌদিতে বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত তা মন্ত্রণালয়ের ওপর এসে বর্তায়।
এর আগে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ভিসা আবেদন সম্পন্ন করার নির্দেশনা দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। এরপর তা ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তারপরও প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় ভিসা আবেদনের সময় বাড়িয়ে ১১ মে করা হয়।
১১ মের মধ্যে ভিসা কার্যক্রম শেষ করতে না পারলে এর দায়ভার সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে নিতে হবে বলে আগেই সতর্ক করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। তারপরও ভিসা আবেদনের সময় বাড়াতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরের মতো এবারও হজ এজেন্সিগুলো সৌদি আরবের মক্কা মদিনায় বাড়ি ভাড়া করতে গাফিলতি করেছে। কম রেটে বাড়ি ভাড়া করার জন্য শেষ সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে।
এছাড়া এজেন্সিগুলোর বাড়ি ভাড়ার জন্য নির্ধারিত প্রতিনিধি মোনাজ্জেমদের ভিসা আটকে দেয় সৌদি সরকার। সেই ভিসার জট খুলতে দেরি হওয়ায় অনেক ইচ্ছা থাকার পরও বাড়ি ভাড়া করতে পারেনি। এতে হজযাত্রীদের ভিসা আবেদন করতে পারেনি এজেন্সিগুলো। কারণ হজ ভিসা আবেদনের পূবশর্ত হলো, সৌদিতে হজযাত্রীর বিপরীতে বাড়ি বাড়ার চুক্তি থাকতে হবে। বাড়ি ভাড়া না করলে ভিসার জন্য আবেদন করা যায় না।
এদিকে হজ অফিস সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ২১২ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।
এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৫৬২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে ৮০ হাজার ৬৯৫ জনসহ মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।
হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট ৯ মে শুরু হয়। ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।