আমরা অভিভাবক হারালাম: শোকবার্তায় শীর্ষ আলেমদের অভিমত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল্লামা আনোয়ার শাহ, ছবি: সংগৃহীত

আল্লামা আনোয়ার শাহ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রখ্যাত আলেম ও কিশোরগঞ্জ শহিদী মসজিদের খতিব আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহের (৭৪) নামাজে জানাজা বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে ধানমন্ডির ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। আল্লামা আনোয়ার শাহ দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম ও বরেণ্য রাজনীতিক আল্লামা আতহার আলী (রহ.) সন্তান।

মাওলানা আনোয়ার শাহ ইন্তেকাল করেছেন

আল্লামা আনোয়ার শাহ কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের সদস্য, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার (বেফাক) সহ-সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ জামিয়া ইমদাদিয়ার মহাপরিচালক ছিলেন।

আল্লামা আনোয়ার শাহের ইন্তেকালের খবরে সারাদেশের আলেম-উলামাদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। বাদ মাগরিব মাদরাসা ও মসজিদে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত ও কোরআন খতম করা হয়। তার মৃত্যুতে ইসলামি নেতৃবৃন্দ ও সংঠনের নেতারা শোক ও গভীর সমবেদনা জানিয়ে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিবৃতি পাঠিয়েছেন।

আল্লামা শাহ আহমদ শফী: বর্ষীয়ান আলেমে আল্লামা আনোয়ার শাহের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন দারুল উলূম হাটহাজারীর মহাপরিচালক, আমিরে হেফাজত শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

শোকবার্তায় আল্লামা শফী বলেন, দেশের শীর্ষ আলেমদের এভাবে চলে যাওয়া খুবই বেদনাদায়ক। ধাপে ধাপে ইলম ও আমলদার আলেমদের উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে মূলত ইলম উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই আলেম মনীষীর ইন্তেকালে আমি গভীরভাবে শোকাহত। আমি তার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, ছাত্র-মুরিদ ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমাবেদনা জানাচ্ছি।

আমিরে হেফাজত আরও বলেন, কিশোরগঞ্জের অভিভাবকতুল্য এ শীর্ষ আলেমের মৃত্যুতে দেশের ইসলামি অঙ্গণ একজন যোগ্য ও দরদী অভিভাবক হারালো। তিনি অনুপম ব্যক্তিত্ববোধ ও যোগ্যতার বলে সবার হৃদয়ে বিশেষ সম্মানের জায়গা করে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। দেশব্যাপী শিক্ষা-সংস্কৃতি, ঈমানআকিদা সংরক্ষণে তার অবদান ও ত্যাগ ইতিহাস হয়ে থাকবে। আল্লাহতায়ালা তাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ সম্মান দান করুন।

আল্লামা মুফতি রুহুল আমিন: দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গোপালগঞ্জ গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মুহতামিম, গওহরডাঙ্গা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান, খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশের আমির ও কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের সদস্য পীরে কামেল আল্লামা মুফতি রুহুল আমিন এক বিবৃতিতে আল্লামা আনোয়ার শাহের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

শোকবাণীতে তিনি বলেন, মহান আল্লাহ তাকে বেহেশতের সুউচ্চ মর্যাদা দান করুন। তার মৃত্যুতে জাতির বড় ক্ষতি হয়েছে যা অপূরণীয়। আল্লাহতায়ালা তার শোকসন্তপ্ত পরিবারকে ধৈর্যধারণ করার তওফিক দান করুন।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ: আল্লামা আনোয়ার শাহের মৃত্যুতে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ শোক প্রকাশ করেছেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ ওয়াককাস, নির্বাহী সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী, মহাসচিব মুফতি শেখ মুজিবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গোলাম মহিউদ্দীন ইকরাম ও যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, দেশে ইসলামি শিক্ষার সম্প্রসারণ এবং ঈমান-আকিদা সংরক্ষণে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

জমিয়ত নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের এই ক্রান্তিকালে তার মৃত্যুতে যে শূন্যতার সৃষ্টি হবে তা অপূরণীয়। নেতৃবৃন্দ তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই আল্লামা আনোয়ার শাহের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। পৃথক পৃথক বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেছেন দলের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, নগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলমও সেক্রেটারী মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, উত্তর সভাপতি ও মেয়রপ্রার্থী মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ ও সেক্রেটারী মাওলানা আরিফুল ইসলাম।

শোক বাণীতে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, আল্লামা আনোয়ার শাহের ইন্তেকালে আমরা দেশের একজন প্রথিতযশা আলেমেদ্বীনকে হারালাম। তার অভাব দীর্ঘদিন অনুভূত হবে। রাব্বুল আলামিন তার সকল নেককাজকে কবুল করে তাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদান দান করুন এবং মরহুমের পরিবার-পরিজনকে সবর করার তওফিক দিন।

আল্লামা মাহমুদুল হাসান: প্রখ্যাত আলেম আনোয়ার শাহের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন জামিয়া মাদানিয়া দারুল উলুম যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহতামিম, মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশের আমির ও গুলশান সেন্ট্রাল আজাদ মসজিদের খতিব মহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান

গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে আল্লামা আনোয়ার শাহকে দ্বীনের অতন্দ্রপ্রহরী ও নিজের মুরব্বি উল্লেখ করে বলেন, তিনি ছিলেন আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর। ঈমানি আন্দোলনের নন্দিত পুরোধা ব্যক্তিত্ব, হাজারো আলেমের অভিভাবক।

মহিউস সুন্নাহ আরও বলেন, পরহেজগার ও জনদরদী এই আলেম মনীষীর ইন্তেকালে যাত্রাবাড়ি মাদরাসার সকল ছাত্র-শিক্ষক গভীরভাবে শোকাহত। আমরা তার মাগফিরাত কামনা করছি।

আল্লামা মাহমুদুল হাসান ও আল্লামা আনোয়ার শাহ পাকিস্তানের শীর্ষ আলেম মাওলানা ইউসুফ বিন নূরীর ছাত্র ও হারদুয়ি হজরত শাহ আবরারুল হক (রহ.)-এর খলিফা। এছাড়া তারা একে অপরের দীর্ঘদিনের সহকর্মী ছিলেন।

কওমী ফোরাম: তরুণ আলেমদের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম কওমী ফোরাম নেতৃবৃন্দ আল্লামা আনোয়ার শাহের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শোকবার্তায় ফোরাম নেতৃবৃন্দ বলেন, আল্লামা আনোরয়ার শাহ বাংলাদেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম ছিলেন। ইসলাম প্রচার, অসংখ্য মাদরাসা প্রতিষ্ঠা এবং বিভিন্ন দ্বীনী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় তিনি ব্যাপক অবদান রেখেছেন। তার শূন্যতা পূরণ হবার নয়।

কওমী ফোরামের সমন্বয়ক মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা হাসান জামিল, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবি, মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান, মাওলানা গাজী ইয়াকুব, মুফতি এনায়েতুল্লাহ ও মুফতি মুরতাজা হাসান ফয়েজি মাসুম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, আল্লামা শাহ সাহেব (রহ.) বহু গুণে গুণান্বিত ছিলেন। ইসলামি আদর্শ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় তার অবদান বাংলাদেশের মুসলমান ও আলেমসমাজ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। তিনি ঐক্যপ্রয়াসী ছিলেন, তার স্বপ্ন ছিলো- কোরআন-সুন্নাহ তথা ইসলামের সুমহান আদর্শের আলোকে একটি সমাজ গড়ার। এ লক্ষে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। কঠিন থেকে কঠিন মুহূর্তেও তিনি সত্য, ন্যায় ও আদর্শের প্রতি অবিচল ছিলেন। কওমি মাদরাসার সনদের স্বীকৃতির জন্য তার সাহসী ভূমিকা, অসামান্য ত্যাগ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ফোরাম নেতৃবৃন্দ তার রূহের মাগফিরাত কামনা ও আল্লাহতায়ালার দরবারে জান্নাতে তার উঁচু মাকাম কামনা ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেন।

আল্লামা আনোয়ার শাহ (রহ.)-এর ইন্তেকালে আরও শোক প্রকাশ করেছেন ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর কেন্দ্রীয় শুরার সভাপতি আল্লামা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, মজলিসে আমেলার সভাপতি মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা দেলাওয়ার হুসাইন, জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ্, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মুফতি মাহবুবুল্লাহ্ ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মুফতি মুহিব্বুল্লাহ, সিলেটের শীর্ষ ইসলামি বিদ্যাপীঠ জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গার মুহতামিম শায়খ মাওলানা মুহিউল ইসলাম বুরহানসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

   

আগামীতে হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ অনুসারে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে হজ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত যে পোর্টালটি রয়েছে সেখানে আমরা নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করছি। আগামী দিনে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা হজ অফিসের সম্মেলন কক্ষে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ ’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ফরিদুল হক খান বলেন, আপনারা সকলেই যাতে সহী-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন সেজন্যই মূলত আজকের এই প্রশিক্ষণ। আমরা প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করেছি। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা- সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রবণতা হলো জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হজ পালন করা। হজ অনেক পরিশ্রমসাধ্য ইবাদত, এর জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা বাঞ্চনীয়। অনেকেরই সেই শারীরিক সামর্থ্য থাকে না। যার কারণে তাদের পক্ষে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।

তিনি বলেন, অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমানো সঞ্চয় দিয়েই হজব্রত পালন করতে যান। এদেশের অধিকাংশ মানুষেরই দ্বিতীয় বার হজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। সে কারণে আপনার পরিশ্রম ও অর্থ যেন বিফলে না যায় সেজন্য অবশ্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)’র নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে হজ সম্পাদন করতে হবে। সহী ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে হবে।

ফরিদুল হক খান বলেন, সৌদি আরবে আপনার পরিচয় শুধু একজন হজযাত্রী নয়, আপনার পরিচয়-আপনি একজন বাংলাদেশি। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ পাবে।

তিনি সৌদি আরবের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিপালনে কোনরূপ বিচ্যুতি না ঘটে সেদিকে যত্নবান থাকার আহ্বান জানান।

এছাড়া, কারো জন্য দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে বিশেষভাবে সর্তক থাকার জন্য হজযাত্রীদেরকে অনুরোধ জানান তিনি।

ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জরুল হক ও ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

প্রশিক্ষণে সরকারি মাধ্যমে নিবন্ধিত ঢাকার হজযাত্রীরা অংশগ্রহণ করছেন।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আশঙ্কা এজেন্সি মালিকদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অপারেটিং হজ এজেন্সির মালিকরা।

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে হাবিবুল্লাহ মুহাম্মদ কুতুবুদ্দীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিছু ঊর্ধতন কর্মকর্তা এবং মক্কা হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, গত ১৮ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ১ শাখা থেকে সৌদি সরকারের একটি চিঠির বরাতে জানানো হয়- আগামী ২৯ এপ্রিল হজ যাত্রীদের ভিসা ইস্যু বন্ধ হয়ে যাবে।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, ২৯ এপ্রিলের মধ্যে আবশ্যিকভাবে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে হবে। এজেন্সীর অবহেলার কারণে হজযাত্রীদের হজে গমন অনিশ্চিত হলে সে এজেন্সীর বিরুদ্ধে হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে, গত ১০ ফ্রেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়, সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের আবাসন, ক্যাটারিং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল প্রকার অনলাইন চুক্তি (সার্ভিস কোম্পানি, পরিবহান, ইত্যাদি) সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ এখনো অনেক এজেন্সির ৮০ শতাংশ কার্যক্রম বাকি।

এমন অবস্থায় সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে হজ এজেন্সি মালিকেরা অনুরোধ করেন।

এছাড়াও কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেন তারা। সেগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল হাজির মিনার জোন নির্ধারণ করে ই হজ সিস্টেম আপডেট করতে হবে। ফাইনাল ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা ও সকল এজেন্সির হজযাত্রী অনুপাতে টিকেট নিশ্চিত করতে হবে। মোয়াজ্জেমদের জন্য বারকোড ভিসার বিষয়টি নিশ্চিত করা। যাদের সৌদি একাউন্টে এখনো রিয়াল জমা হয়নি তাদের একাউন্টে দ্রুত রিয়াল জমার ব্যবস্থা করা।

তারা বলেন, বর্তমানে সৌদি একাউন্টে টাকা ঢুকতে দেড় মাস সময় লাগে। যদি কারো একাউন্টে ১ পয়সাও কম থাকে তাহলে তার হজে যাওয়া সম্ভব হবে না। এবং বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন চার্জ একবারে হিসাব করে পাঠানো অনেকটা অসম্ভব। এছাড়া যাদের এখনো মেননজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা হয়নি তাদের জন্য দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়াও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম অন্যান্য বছরের মতো সর্বশেষ ফ্লাইটের এক সপ্তাহ পূর্ব পর্যন্ত চালু রাখার দাবি জানান তারা। আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে অনেকে হজ করতে যাওয়ার ইচ্ছে করলেও সকল প্রস্তুতির পর মারা গেছেন। আবার কেউ মারাত্মক রোগাক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে যেতে পারেন না। তাই সেই হজযাত্রীর পরিবর্তে তার পরিবারের অন্য কোন সদস্যদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে জমাকৃত টাকা গচ্চা যেতো না। বর্তমানে যে অবস্থা আছে তাতে ভিসা ইস্যু এতো আগে বন্ধ হয়ে গেলে অহেতুক প্রচুর টাকা সৌদি আরবে চলে যাবে। এতে দেশের ক্ষতি হবে। যদি বিষয়টি সৌদি সরকারকে বুঝাতে আমরা সক্ষম হই তাহলে আমাদের বিশ্বাস সৌদি সরকার বাস্তবতা বুঝে অবশ্যই বিবেচনা করবেন।

;

যে গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার কেউ নেই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্মিলিত ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগে বদলে গেছে প্রত্যন্ত একটি গ্রামের চিত্র। গ্রামটির সকল পরিবার হয়েছে সচ্ছল। ওই গ্রামে এখন আর ফেতরা কিংবা জাকাত নেওয়ার মানুষ নেই। সবাই স্বাবলম্বী।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চাঁদের হাসি গ্রাম। এই চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে গ্রামের দৃশ্যপট।

সংগঠনটি নিজ গ্রামের গন্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এমন প্রশংসনীয় কাজ করা সংগঠনটির নেই নিবন্ধন, নেই বাহারি অফিস। তারা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ, ফাউন্ডেশনের জনকল্যাণমূলক নানা কাজ।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে চাঁদের হাসি গ্রামের প্রয়াত মাওলানা হেলান উদ্দিনের প্রচেষ্টায় দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে গ্রামে সকল পরিবারের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে অসহায়-গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছে। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছরে এই কার্যক্রমের ফলে চাঁদের হাসি গ্রামে এখন আর ফেতরা ও জাকাত নেওয়া মতো মানুষ নেই। ইতোমধ্যে সংগঠনটি গ্রামের ৮০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছে।

২ বছর আগে চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর পেয়েছেন ওহেদ আলী। তিনি জানান, ঘর পেয়ে মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই চলছে তার সংসার।

মাহমুদ বেগম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তার পরিবার দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর ও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তার বাবা নেই মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ঘরে বসবাস করছেন। সেলাই মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জামা কাপড় সেলাই করে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চাঁদের হাসি দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আলম জানান, ২০০৩ সালে আমাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার চলনশীল মানুষের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে আমরা কাজ করে থাকি। এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর থেকে ইসলামের বিধি মোতাবেক যে ৮টি খাত রয়েছে সে হিসাবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার মতো কোনো মানুষ নেই।

সংগঠনটি গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তাও দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করেছে।

;

রাজধানীতে শীতল পানি বিতরণ করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট সংকটে দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ।

বিভিন্ন জেলা, থানা, ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নিয়ে পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে ঠান্ডা পানি বিতরণ করেছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া খাবার স্যালাইন ও পকেট রুমাল বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রমজীবী ও পথচারীদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পূর্বের ডেমরা থানা শাখার উদ্যোগে বিশুদ্ধ শীতল পানি, স্যালাইন ও ওয়ালেট টিস্যু বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ডেমরা থানা শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিইন বিন আমজাদ, কফিল উদ্দিনসহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।

এ সময় প্রধান অতিথি শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাধার ভরাট ও অবাধে বৃক্ষ নিধনের ফলেই অসহনীয় তাপদাহে নগরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সাময়িক স্বস্তির জন্য আমরা শীতল পানির বিতরণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের জন্য নগরকে সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করতে রাষ্ট্রকেই যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

নগর সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম বলেন, যতদিন তীব্র তাপদাহ থাকবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর পূর্বের উদ্যোগে নগরজুড়ে বিশুদ্ধ শীতল পানি বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

;