করোনায় হজযাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

হজ একটি সময় আবদ্ধ ইবাদত। তাই চলতি বছর হজ গমনেচ্ছুকদের নির্ধারিত সময়ে টাকা জমা দিয়ে হজের যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব এডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ।

তিনি বলেছেন, করোনাভাইরাসের প্রভাবে আতঙ্কিত হয়ে হজের নিবন্ধন থেকে বিরত থাকলে এবছর হজে গমন সম্ভব হবে না। হজযাত্রীদের হজের টাকা জমা দিলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না, সরকার দায়-দায়িত্ব বহন করবে।

রোববার (৮ মার্চ) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘হজ-২০২০ এর নিবন্ধন কার্যক্রম ও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি’ সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর শতাধিক দেশ সর্তকতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। সৌদি আরব সতর্কতামূলভাবে উমরা ভিসা ইস্যু সাময়িক বন্ধ রেখেছে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে অনিশ্চয়তার কথা চিন্তা করে হজের নিবন্ধনে বিলম্ব করলে তার এ বছর হজযাত্রার সমস্যা হতে পারে। তবে হজের টাকা জমা দিলে সরকার টাকার নিরাপত্তা প্রদান করবে। সুতরাং হজযাত্রীদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এ সময় মন্ত্রী বলেন, আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখছি। সৌদি কর্তৃপক্ষও আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। তারা হজযাত্রীদের বিষয়ে সব রকমের সহযোগিতা করবেন। হজযাত্রীরা যাতে কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে বিষয়ে আমাদের সর্বাত্নক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, হজের টাকা জমা প্রদান করে নিবন্ধনের পর সৌদি আরবে মোয়াল্লিম ফি নির্ধারণ, মক্কা-মদিনায় বাড়ি ভাড়া করা, আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটানোর জন্য সৌদি আরবে অর্থ প্রেরণের কাজ সম্পন্ন করতে হয়। এছাড়া হজে গমনের পূর্বে দেশে থাকা অবস্থায় হজযাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, টিকা গ্রহণ, হজের প্রশিক্ষণ গ্রহণ, বিমানের টিকিট সংগ্রহ ও ভিসা প্রসেসসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হয়। তাই আগেভাগেই হজযাত্রীদের চূড়ান্ত নিবন্ধন করার আহ্বান জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী প্রেরণের নিমিত্তে ৭৮৮টি বৈধ হজ এজেন্সির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ২ মার্চ থেকে হজযাত্রী নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে ২০২০ সালের জন্য তালিকায় প্রকাশিত এজেন্সিসমূহ হজযাত্রী নিবন্ধন করছে। চূড়ান্ত নিবন্ধন শেষে যথাসময়ে সৌদি সরকারকে হজযাত্রীর সংখ্যাসহ অন্যান্য তথ্য জানাতে হবে। নিবন্ধিত হজযাত্রীদের পিআইডি নম্বর প্রদান করতে হবে। হজযাত্রীদের সংখ্যানুপাতে ফ্লাইট সিডিউল চূড়ান্ত করতে হবে। ফ্লাইট টিকিটের ব্যবস্থা করতে হবে। হজ ব্যবস্থাপনার জন্য সৌদি আরবে মুয়াল্লিম নিয়োগ করতে হবে। হজযাত্রীদের আবাসনের জন্য বাড়ি-হোটেল ভাড়া করতে হবে। সৌদি আরবে হজ ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও চুক্তি করতে হবে। হজযাত্রীদের জন্য ভিসার ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া পবিত্র হজে গমনের জন্য হজ ফ্লাইট শুরুর অন্তত ২ মাস পূর্বে বিস্তারিত প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়। উপরোক্ত কার্যাবলী সম্পন্ন করতে কমপক্ষে ২ মাস সময়ের প্রয়োজন। প্রস্তুতিতে আমাদের কোনো ধরনের ত্রুটি থাকলে হজ গমন বিঘ্নিত হতে পারে। তাই তিনি যথাসময়ে হজ নিবন্ধন করার আহবান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩০ জুলাই (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে এবং বাংলাদেশ থেকে ২৩ জুন হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভা কর্তৃক এ বছরের হজপ্যাকেজ অনুমোদিত হয়েছে। চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট তিনটি প্যাকেজ ঘোষিত হয়েছে। প্যাকেজ-১, ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, প্যাকেজ-২, ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও প্যাকেজ-৩; ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবারই প্রথমবারের মতো এ প্যাকেজ চালু করা হয়েছে। বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোও ৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকার একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। তবে বেসরকারি এজেন্সি কর্তৃপক্ষ সরকারি ব্যবস্থাপনায় ঘোষিত ৩ প্যাকেজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবে। ইতিমধ্যে বেসরকারি হজ এজেন্সিসমূহের সংগঠন হাব দু’টি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

প্রতিমন্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৭ হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ২০ হাজারসহ মোট ১ লাখ ৩৭ হাজার হজযাত্রী হজে যেতে পারবেন- ইনশাআল্লাহ। যেসব হজযাত্রী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২০২০ সালের কোটা পূরণ হওয়ার কারণে ২০২১ সালে বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে প্রাক-নিবন্ধন করেছেন, তারা ইচ্ছে করলে এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে গমনের সুযোগ পাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হজ) এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, হজ এজেন্সিজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী সৌদি সরকারের উমরা বন্ধ রাখার উদ্যোগকে সময়োপযোগী বলে উল্লেখ করে বলেন, আশা করছি, আল্লাহতায়ালা পবিত্র হজের পূর্বেই বিশ্ববাসীকে এ বিপদ থেকে রক্ষা করবেন। আল্লাহর কাছে আমরা সবসময় সে প্রার্থনা করছি। অবশ্যই তিনি হজ পালনে ইচ্ছুক সবাইকে তার পবিত্র স্থানে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবেন।

   

যে গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার কেউ নেই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্মিলিত ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগে বদলে গেছে প্রত্যন্ত একটি গ্রামের চিত্র। গ্রামটির সকল পরিবার হয়েছে সচ্ছল। ওই গ্রামে এখন আর ফেতরা কিংবা জাকাত নেওয়ার মানুষ নেই। সবাই স্বাবলম্বী।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চাঁদের হাসি গ্রাম। এই চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে গ্রামের দৃশ্যপট।

সংগঠনটি নিজ গ্রামের গন্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এমন প্রশংসনীয় কাজ করা সংগঠনটির নেই নিবন্ধন, নেই বাহারি অফিস। তারা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ, ফাউন্ডেশনের জনকল্যাণমূলক নানা কাজ।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে চাঁদের হাসি গ্রামের প্রয়াত মাওলানা হেলান উদ্দিনের প্রচেষ্টায় দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে গ্রামে সকল পরিবারের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে অসহায়-গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছে। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছরে এই কার্যক্রমের ফলে চাঁদের হাসি গ্রামে এখন আর ফেতরা ও জাকাত নেওয়া মতো মানুষ নেই। ইতোমধ্যে সংগঠনটি গ্রামের ৮০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছে।

২ বছর আগে চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর পেয়েছেন ওহেদ আলী। তিনি জানান, ঘর পেয়ে মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই চলছে তার সংসার।

মাহমুদ বেগম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তার পরিবার দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর ও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তার বাবা নেই মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ঘরে বসবাস করছেন। সেলাই মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জামা কাপড় সেলাই করে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চাঁদের হাসি দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আলম জানান, ২০০৩ সালে আমাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার চলনশীল মানুষের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে আমরা কাজ করে থাকি। এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর থেকে ইসলামের বিধি মোতাবেক যে ৮টি খাত রয়েছে সে হিসাবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার মতো কোনো মানুষ নেই।

সংগঠনটি গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তাও দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করেছে।

;

রাজধানীতে শীতল পানি বিতরণ করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট সংকটে দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ।

বিভিন্ন জেলা, থানা, ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নিয়ে পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে ঠান্ডা পানি বিতরণ করেছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া খাবার স্যালাইন ও পকেট রুমাল বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রমজীবী ও পথচারীদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পূর্বের ডেমরা থানা শাখার উদ্যোগে বিশুদ্ধ শীতল পানি, স্যালাইন ও ওয়ালেট টিস্যু বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ডেমরা থানা শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিইন বিন আমজাদ, কফিল উদ্দিনসহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।

এ সময় প্রধান অতিথি শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাধার ভরাট ও অবাধে বৃক্ষ নিধনের ফলেই অসহনীয় তাপদাহে নগরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সাময়িক স্বস্তির জন্য আমরা শীতল পানির বিতরণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের জন্য নগরকে সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করতে রাষ্ট্রকেই যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

নগর সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম বলেন, যতদিন তীব্র তাপদাহ থাকবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর পূর্বের উদ্যোগে নগরজুড়ে বিশুদ্ধ শীতল পানি বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

;

দুনিয়ার জীবনের বাস্তবতা প্রকাশ পেয়েছে যে আয়াতে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন মাজিদ, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইতিহাসজুড়ে দেখা গেছে, মানুষ সবসময়ই তার প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে। কারণ মানুষ প্রকৃতিগতভাবে অভাব নিয়েই দুনিয়ায় এসেছে। দুইভাবে মানুষ বিপদগ্রস্ত হচ্ছে কিংবা বিপদে পড়ছে। এক. মানুষের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো ঠিকমতো চিহ্নিত না করা। দুই. ভুল পথে চাহিদা মেটানোর প্রবণতা।

এই দুই বিপদজনক পথ সঠিকভাবে অতিক্রমের জন্যই আল্লাহতায়ালা যুগে যুগে নবী-রাসুলদেরকে পাঠিয়েছেন। আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী নবীরা মানুষকে শিক্ষা দিতেন। যেমন কোরআনের বক্তব্য যদি মানুষ বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী আমল করে তাহলে তার শক্তিসামর্থ্য যেমন বাড়বে তেমনি পরিত্রাণ পাবে এবং যেকোনো বিপদ বা ভুল পথে পরিচালিত হওয়া থেকে নাজাত পাবে।

কোরআন মাজিদের সুরা হাদিদের ২০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা জেনে রাখো যে, দুনিয়ার জীবন ক্রীড়া-কৌতুক, শোভা-সৌন্দর্য, তোমাদের পারস্পরিক গর্ব-অহঙ্কার এবং ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততিতে আধিক্যের প্রতিযোগিতা মাত্র।

এর উপমা হলো- বৃষ্টির মতো, যার উৎপন্ন ফসল কৃষকদের আনন্দ দেয়, তারপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ বর্ণের দেখতে পাও, তারপর তা খড়-কুটায় পরিণত হয়। আর আখেরাতে আছে কঠিন আজাব এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।’

বর্ণিত আয়াতটি আমাদের কাছে জীবনের বাস্তবতা তুলে ধরেছে এভাবে-
ক্ষণস্থায়ী দুনিয়া মোটেই ভরসা করার যোগ্য নয়। পার্থিব জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা কিছু হয় এবং যাতে দুনিয়াদার ব্যক্তি মগ্ন ও আনন্দিত থাকে, প্রথমে সেগুলো ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সংক্ষেপে বলতে গেলে পার্থিব জীবনের মোটামুটি বিষয়গুলো যথাক্রমে এই- প্রথমে ক্রীড়া, এরপর কৌতুক, এরপর সাজ-সজ্জা, এরপর পারস্পরিক অহমিকা, এরপর ধন ও জনের প্রাচুর্য নিয়ে পারস্পরিক গর্ববোধ।

উল্লেখিত ধারাবাহিকতায় প্রতিটি অর্থেই মানুষ নিজ অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। কিন্তু কোরআন মাজিদ বলে যে, এ সবই হচ্ছে সাময়িক ও ক্ষণস্থায়ী।

প্রকৃতপক্ষে, কোরআন মাজিদের এই আয়াতে বলা হচ্ছে, ‘মানুষ যখন শিশু থাকে তখন সে খেলা করে, সে তার যৌবনকে উদ্দেশ্যহীনভাবে অতিবাহিত করে, তার যৌবনে সে পৃথিবীর সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যে মগ্ন থাকে এবং তার মধ্য বয়সে ও বার্ধক্যে সে অহংকার এবং সম্পদ ও সন্তানদের নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়!’

তাই পৃথিবীটা একটা খেলা। এমতাবস্থায় খেয়াল রাখা, কোনোভাবেই ধোঁকায় না পড়া। আমরা যদি কোনো উচ্চ অবস্থানে পৌঁছি তাহলে অহংকারী না হওয়া, যদি পতন ঘটে কিংবা অবস্থা নীচের দিকে চলে যায়- তাহলেও নিরাশ না হওয়া।

আয়াতে বর্ণিত পাঁচটি বিশেষ শব্দ দিয়ে মানবজাতির জন্য তাদের বাস্তবতাকে এভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বোঝানো হয়েছে এর প্রতিটিই হচ্ছে একেকটি ফাঁদ এবং মানুষ এসবে জড়িয়ে পড়ে।

;

৯ বছর পর উমরার সুযোগ পেলেন ইরানিরা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল উমরা পালনের জন্য সৌদি আরব যাচ্ছেন, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ ৯ বছরের বিরতির পর পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরানের নাগরিকরা পবিত্র উমরা পালনের জন্য তেহরান থেকে পবিত্র মক্কা নগরীর উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। সোমবার (২২ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ বছরের মধ্যে ইরানি উমরাযাত্রীদের প্রথম দল সোমবার পবিত্র উমরা পালনের জন্য সৌদি আরবের উদ্দেশে যাত্রা করেছে বলে ইরানের সরকারি বার্তাসংস্থা জানিয়েছে। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই শক্তিশালী দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে।

এর আগে দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর গত বছরের মার্চ মাসে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরায় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয় মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরব। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবারও সম্পর্ক নতুন মাত্রা পায়। আর উভয় দেশের সম্পর্কের অগ্রগতির পেছনে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিল চীন।

২০১৬ সাল থেকে থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না। ওই বছর সৌদি আরব সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডের দায়ে শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ নিমর আল নিমরসহ ৪৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তেহরানের সৌদি দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি ঘটে।

মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপর থেকে সুন্নি এবং শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।

এ ছাড়া সিরিয়া এবং ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংঘাতে ইরান ও সৌদি একে অপরের বিরোধী পক্ষ হয়ে কার্যত পরোক্ষ লড়াইয়ে নিয়োজিত ছিল। আর তাই সুন্নি-সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব এবং শিয়া নেতৃত্বাধীন ইরানের মধ্যে উত্তেজনা ছিল প্রায়ই অনেক বেশি।

গত বছর সম্পর্ক পুনরায় শুরু হওয়ার আগে ইরানিরা শুধুমাত্র হজপালন করতে সৌদি আরব যেতে পারত।

রয়টার্স বলছে, তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে ৮৫ জন উমরাযাত্রীর বিদায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইরানে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ বিন সৌদ আল আনজি।

;