রিফাত হত্যা মামলায় ১১ আসামির বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড, ৩ জন খালাস
বরগুনার বহুল আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত (রিফাত শরীফ) হত্যা মামলায় রিশান ফরাজীসহ ১১ অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামির বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তিনজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) বরগুনা জেলা শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, রাশিদুল হাসান রিশান ফরাজী, মো. রাকিবুল হাসান রিফাত হাওলাদার, মো. আবু আবদুল্লাহ রায়হান, মো. ওলিউল্লাহ অলি, জয় চন্দ্র সরকার চন্দন, মো. নাইম, মো. তানভীর হোসেন, নাজমুল হাসান, রাকিবুল হাসান নিয়ামত, মো. সাইয়েদ মারুফ বিল্লাহ ও প্রিন্স মোল্লা।
এদের মধ্যে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে-রাশিদুল হাসান রিশান ফরাজী, মো. রাকিবুল হাসান রিফাত হাওলাদার, মো. আবু আবদুল্লাহ রায়হান, মো. ওলিউল্লাহ অলি ও মো. নাইমকে। পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে-মো. তানভীর হোসেন, জয় চন্দ্র সরকার চন্দন, নাজমুল হাসান, রাকিবুল হাসান নিয়ামত, মো. সাইয়েদ মারুফ বিল্লাহ। এছাড়া প্রিন্স মোল্লাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, মারুফ মল্লিক, রাতুল সিকদার জয় ও আরিয়ান হোসেন শ্রাবণ।
গত ১৫ অক্টোবর মামলার যুক্তিতর্ক গ্রহণ শেষ হয়। যুক্তিতর্ক শেষে বরগুনা জেলা শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান রায়ের জন্য মঙ্গলবার তারিখ ঘোষণা করেছিলেন।
রায়ের তারিখ ঘোষণার আগে চার্জশিটের ৭৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৭৪ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।
শিশু আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তাফিজুর রহমান রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানান রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন। তারা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ। তিনি বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। রায় দ্রুত কার্যকর হবে এটাই কামনা করি।
রায় শুনতে জামিনে থাকা ৮ আসামি আদালতে উপস্থিত হন। কারাগারে আটক ৬ আসামিকেও আদালতে হাজির করা হয়। তাদের উপস্থিতিতে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণা শেষে দণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে ফের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
গতবছরের ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে তাঁর স্ত্রী মিন্নির সামনে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সন্ত্রাসীরা। তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর ওই দিন বিকেলে তিনি মারা যান।
হত্যাকাণ্ডের পরদিন ২৭ জুন নিহত রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা হত্যা মামলা দায়ের করেন।
১ সেপ্টেম্বর নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নিসহ ১০জন প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনসহ মোট ২৪ জনের নামে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা মো: হুমায়ুন কবির।
রিফাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো: আছাদুজ্জামান মিন্নিসহ ৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৪ আসামিকে খালাস প্রদান করেন।