দণ্ড ছাড়িয়েছে আগের আইনকেও

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিচার, শেষ পর্ব



নাজমুল আহসান রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি ও জরিমানার (অর্থদণ্ড) পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি ও জরিমানাকে। সংশোধিত আইসিটি আইনে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সাজা ও এক কোটি টাকা জরিমানা ছিল। ডিজিটাল আইনে সাজা বেড়ে যাবজ্জীবন হয়েছে। আর একই অপরাধ দ্বিতীয় বার করলে যাবজ্জীবনের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে ৫ কোটি কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আর্থ সামাজিক অবস্থার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আইন প্রণয়ন করা উচিত। সাজার বিধান করলেই হবে না, দণ্ডিত হলে তা পরিশোধের সামর্থ রয়েছে কিনা- তাও দেখতে হবে। তবে কেউ কেউ বলছেন, এটি হচ্ছে অপরাধ থেকে বিরত রাখতে সতর্কতামূলক বিধান। এতে সাজা ও অর্থদণ্ড অপরাধ প্রবণতাকে নিরুৎসাহিত করবে।

প্রতিবেশী ভারতে সাইবার অপরাধ রোধে তথ্য প্রযুক্তি অ্যাক্ট ২০০০ প্রণয়ন করা হয় ওই বছরের ১৭ অক্টোবর। আট বছর পর এ আইনে দ্বিতীয় দফা সংশোধন আনে লোকসভা। ভারতের আইনের ছয় বছর পর ২০০৬ সালের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশে প্রণীত হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬। ভারতের আইনের সাজা ও জরিমানার বিধান হুবহু অনুসরণ করা হয় বাংলাদেশের আইসিটি আইনে।

আরও পড়ুন:‘মানহানি’তে হাতিয়ার এখন সাইবার আইন

পুলিশের ফাইনাল রিপোর্টেই শেষ ৩৩৪ মামলা

ভারতের আইনে কম্পিউটারে বেআইনি অনুপ্রবেশে শাস্তির বিধান রয়েছে ৬৫ ধারায়। শাস্তি ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ রুপি অর্থদণ্ড। এটি আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য অপরাধ। ৬৬ ধারা হ্যাকিং অপরাধের, শাস্তি ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ রুপি অর্থদণ্ড। ৬৭ ধারায় ইলেকট্রনিক মাধ্যমে অশ্লীল তথ্য প্রকাশ করা হলে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ রুপি অর্থদণ্ড। ৭১ ধারায় মিথ্যা তথ্য প্রদানের শাস্তি দুই বছর এবং ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড। ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য প্রকাশের শাস্তি বর্ণিত আছে ৭২ ধারায়, শাস্তি দুই বছর ও ১ লাখ রুপি অর্থদণ্ড। প্রতারণার উদ্দেশ্যে ডিজিটাল সনদের জালিয়াতির সাজা দুই বছর ও এক লাখ রুপি জরিমানা। ভারতের আইনে মানহানি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মতো অপরাধ অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।

২০১৩ সালে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারাসহ চারটি ধারায় সাজার পরিমান সর্বোচ্চ ১৪ এবং অন্যূন সাত বছর ও এক কোটি টাকা জরিমানা বিধান অন্তর্ভূক্ত করে সরকার।

কানাডার হেলিফ্যাক্স ভিত্তিক সেন্টার ফর ল’ অ্যান্ড ডেমোক্রেসির বিশ্লেষণে বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ত্রুটি বিচ্যুতি তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ডিজিটাল আইন আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছে। মানবাধিকারের সবধরণের মানদণ্ডের সঙ্গে আইনটি অসঙ্গতিপূর্ণ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আইনের বড় একটি সমস্যা হলো- ডিজিটাল নিরাপত্তা বলতে সবধরণের নিরাপত্তাকে আওতাধীন করা হয়েছে। বেআইনি প্রবেশকে এমনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যেখানে বৈধ প্রবেশও অপরাধ। এমনকি কেউ তার কম্পিউটার যতবার বন্ধ করবে ততবারই অপরাধী হতে পারে। ম্যালাওয়ারকেও এমনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যা একটি বড় ভুল। এতে করে আইনের অপব্যবহার হতে পারে।

আরও পড়ুন:হয়নি আপিল ট্রাইব্যুনাল, ভরসা হাইকোর্ট

বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ডিজিটাল আইন, ২০১৮ এর গুরুতর আপত্তির দিক হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির ব্যাপক ক্ষমতায়ন। আইনের সঙ্গেসঙ্গে বিধি প্রণয়নের কথা থাকলেও তা হয়নি। যেখানে আইন কার্যকরের জন্য তদারককারী এজেন্সির ক্ষমতা নির্ধারিত হবে বিধি দ্বারা। আরেকটি সমস্যা হলো অপরাধের গুরুত্ব অনুধাবন। ১৮টি অপরাধের মধ্যে ১৪টি আমলযোগ্য এবং অজামিনযোগ্য। আমলযোগ্য অপরাধ হেতু পুলিশ যে কাউকে বিচারিক পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করতে পারবে। এতে সাংবাদিক ও নাগরিকরা বেশি হয়রানির শিকার হবেন। অজামিনযোগ্য অপরাধে একজন গ্রেফতার হওয়ার পার যতক্ষণ পর্যন্ত না আদালত তার সহজাত ক্ষমতা প্রয়োগ করছে ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে কারাগারে থাকতে হবে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনলাইন অপরাধের সাজা দুর্ধর্ষ অপরাধের সাজার মতো কঠোর করা হয়েছে। হ্যাকিং করা (ধারা ৩৪) আর কাউকে হত্যাচেষ্টা এখন সমান অপরাধ। আইনের ২৯ ধারার অপরাধ দণ্ডবিধির মতো একই ধরণের হলেও সাজার পরিমাণ বেশি।দণ্ডবিধিতে মানহানির সাজা দুই বছর। কিন্তু ডিজিটাল আইনের তা তিন বছর। সঙ্গে রয়েছে পাঁচ লাখ টাকার জরিমানা। দ্বিতীয় বার এ অপরাধ করলে সাজা পাঁচ বছরের। জরিমানা ১০ লাখ টাকা বা উভয় দণ্ড। ধারা ২৮ এ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অপরাধে সাজার বিধান রয়েছে পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লাখ টাকা জরিমানা। অথচ দণ্ডবিধিতে এ সাজা মাত্র এক বছরের কারাদণ্ড।

এছাড়া ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২২, ২৩, ২৪, ২৬, ২৭, ৩০, ৩২, ৩৩ ও ৩৪- এই ১৩টি ধারাই আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য অপরাধ। ২২ থেকে ২৪ ধারা প্রতারণা ও জালিয়াতি সম্পর্কিত। দণ্ডবিধিতে এ দুই অপরাধের সাজা তিন বছর কারাদণ্ড। ডিজিটাল আইনে এ সাজা বাড়িয়ে করা হয়েছে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা। ১৭, ১৮, ৩২, ৩৩ এবং ৩৪ ধারা তথ্য ও কম্পিউটারে বেআইনি প্রবেশ সম্পর্কিত। ক্ষতির উদ্দেশ্যে ইচ্ছকৃতভাবে বেআইনি প্রবেশ রোধ করার বিষয় বলা হলেও ক্ষতির কারণগুলো স্পষ্ট করা হয়নি আইনে। ৩৪ ধারা অনুযায়ী হ্যাকিং একটি অপরাধ। এখন কেউ নিজস্ব কম্পিউটারের তথ্য পরিবর্তন করলেও হ্যাকিংয়ের আওতায় পড়বেন। হ্যাকিংয়ের সাজা ১৪ বছর কারাদণ্ড, বা অনধিক এক কোটি টাকার অর্থদণ্ড। দ্বিতীয়বার পুন:পুন অপরাধ করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে, বা পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

আরও পড়ুন:একমাত্র ট্রাইব্যুনালে সারা দেশের চাপ

৩২ ধারায় সরকারি গোপনীয়তা ভঙ্গের অপরাধ হিসেবে অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট ১৯২৩ অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এ ধারায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে তৃতীয়পক্ষকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে, যা ঠিক নয়। এর ফলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তথ্য অনুসন্ধানে নিয়োজিত সাংবাদিকের ১৪ বছরের সাজা ও ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে পড়ার ঝুকি তৈরি হয়েছে। পুন:পুন (দ্বিতীয়বার) অপরাধ করলে সাজার পরিমান বাড়িয়ে যাবজ্জীবন এবং অনধিক ১ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে ধারাটিতে। সম্পুর্ণ আইনের ইতিবাচক দিক হলো ৩৮ নম্বর ধারা। যেখানে তথ্য উপাত্ত প্রাপ্তির বন্দোবস্ত করার কারণে সেবাপ্রদানকারী দায়ী হবেন না।

এ প্রসঙ্গে সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, অপরাধকে নিরুৎসাহিত করতে সাজা ও জরিমানার বিধান করা হয়েছে। দিনে দিনে সাইবার অপরাধ বাড়ছে। এটাকে সামাল দিতে শক্ত আইন প্রয়োজন ছিল। সাজার যে বিধান করা হয়েছে তা সতর্কতামূলক। এতে অপরাধ সংঘটনকে নিরৎসাহিত করা হয়েছে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে কেউ অযথা হয়রানি না হন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, সাজা ও জরিমানা দিয়ে অপরাধ রোধ করা যায় না। দেখা গেছে, আইন আছে কিন্তু সেই আইনের অপরাধ কি কমেছে। সাজার পরিমাণ বাড়ানো হলেও যে অপরাধ কমবে তা ঠিক নয়। যারা আইন প্রণয়ন করেন তাদের বিষয়টি চিন্তাভাবনা করতে হবে।

   

দুর্নীতি মামলায় আত্মসমর্পণ করে কারাগারে মেজর মান্নান



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সাবেক মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি।

তার পক্ষে জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শাহিনুর ইসলাম। দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধিতা করেন।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ৭ মার্চ এ মামলায় মেজর মান্নানের স্ত্রী বিআইএফসির চেয়ারম্যান উম্মে কুলসুম মান্নান ও মেয়ে পরিচালনা পরিষদের পরিচালক তাজরিনা মান্নান আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।

তবে ওইদিন বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানি লিমিটেডের (বিআইএফসি) পরিচালনা পরিষদের পরিচালক ও ম্যাক্সনেট অনলাইনের প্রোপাইটর উম্মে কুলসুম, মান্নানের ভাই রইস উদ্দিন আহমেদ, বিআইএফসি পরিচালনা পরিষদের পরিচালক এ.এন এম জাহাঙ্গীর আলম, বিআইএফসি পরিচালনা পরিষদের সাবেক পরিচালক আরশাদ উল্লাহ, বিআইএফসির সাবেক উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইনসুর রহমান ও বিআইএফসির সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব বিজনেস, সৈয়দ ফকরে ফয়সালের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।

চলতি বছর ২৬ জানুয়ারি দুদকের উপপরিচালক মো. আব্দুল মাজেদ এ মামলা করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে, একে অন্যের সহায়তায়, প্রতারণামূলকভাবে লাভবান হওয়ার মানসে মো. রইস উদ্দিনের নামে তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সনেট অনলাইনের নামে ৪টি পৃথক ঋণ চুক্তি করেন। পরে এর মাধ্যমে ২৭ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করে ২৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বিতরণ করে। উক্ত ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করে প্রদত্ত ঋণের আসল ২৮ কোটি ৪৭ লাখ ৭২ হাজার ৩৮২ টাকা আত্মসাৎ করেন। ঋণের বর্তমান সুদ হিসেবে পাওনা ৮ কোটি এক লাখ ৫৮ হাজার ৬৬৫ টাকা এবং সুদাসলে পাওনা ৩৬ কোটি ৪৯ লাখ ৩১ হাজার ৪৭ টাকা।

;

চেক প্রতারণার অভিযোগে ইভ্যালির রাসেল-শামিমার বিচার শুরু



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চেক প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় অনলাইনভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ঢাকার ৬ষ্ঠ যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ হুমায়ুন কবিরের আদালত এ আদেশ দেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আসামিদের প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি ডটকম লিমিটেডের পক্ষ থেকে বিশেষ ছাড়ে মোটরসাইকেল বিক্রির অফার অনলাইনের (ইভ্যালি ডটকম) মাধ্যমে দেখতে পেয়ে চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি এক লাখ ৪৯ হাজার ৬৩৫ টাকা পরিশোধ করে একটি মোটরসাইকেল ক্রয়ের অর্ডার করেন বাদী।

বাদীকে মোটরসাইকেলটি অর্ডারের ৪৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারি করার কথা ছিল। তা না হলে মোটরসাইকেলের মূল্য বাবদ দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা বাদীকে প্রদান করবেন।

আসামিরা নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও মোটরসাইকেলটি ডেলিভারি করতে না পারায় ২৮ জুন দুই লাখ ৫০ হাজার টাকার সিটি ব্যাংকের একটি চেক ইভ্যালি ডটকম লিমিটেডের পক্ষ থেকে সিনিয়র ম্যানেজার ফাইন্যান্স ও ম্যানেজার ফাইন্যান্স স্বাক্ষর করে বাদী তোফাজ্জল হেসেন বরাবর একটি চেক ইস্যু করেন।

ব্যাংকে টাকা উত্তোলন করতে গেলে চেকটি ডিজঅনার হয়। পরবর্তীতে বাদি আসামীদের বরাবর লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধের তাগিদ দেন। তবু তারা টাকা পরিশোধ না করায় বাদী আদালতে মামলা দায়ের করেন।

;

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন ও গলা টিপে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক আনার জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন ও গলা টিপে হত্যার দায়ে স্বামী মো. পারভেজকে (২৫) মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৭ মার্চ) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মো. জাকির হোসেন এ রায় দেন। মো. পারভেজ সাতকানিয়া উপজেলার চুড়ামনি এলাকার মো. সোলায়মানের ছেলে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ভিকটিম রোকেয়া বেগমের সঙ্গে মো. পারভেজের ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল বিয়ে হয়। বিয়ের সময় রোকেয়ার পরিবার পারভেজকে ৩ লাখ টাকা দিয়েছিল। এরপরও যৌতুকের জন্য রোকেয়াকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন তিনি। পরে বিষয়টি রোকেয়া তার পরিবারকে জানালে তার ভাই মহিউদ্দীন এক লাখ টাকা পারভেজকে দেন। তবুও এতে খুশি ছিলেন না পারভেজ, আরও ২ লাখ টাকার জন্য রোকেয়াকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। ২০১৮ সালের ২০ এপ্রিল পারভেজ রোকেয়ার মা ও বোনকে কল দিয়ে নানা অসংলগ্ন কথা বলেন। এরপর তার পরিবার পারভেজের বাড়িতে গেলে খাটের ওপর রোকেয়ার মরদেহ তারা দেখতে পান। এ ঘটনায় রোকেয়ার বড় ভাই মো. মহিউদ্দিন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দিলে পারভেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি অ্যাডভোকেট নিখিল কুমার নাথ বলেন, ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন ও গলা টিপে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় স্বামী মো. পারভেজকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ের সময় আসামি ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডের পরোয়ানা মূলে পারভেজকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;

হত্যা মামলায় বগুড়া মোটর মা‌লিক গ্রু‌পের সাধারণ সম্পাদক কারাগারে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মোটর মা‌লিক গ্রু‌পের সাধারণ সম্পাদক, বগুড়া পৌরসভার ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সাবেক যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম‌কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুর ১২টায় বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক একেএম মোজা‌ম্মেল হক চৌধুরী তা‌কে কারাগারে পাঠা‌নোর আদেশ দেন।

আমিনুল ইসলাম বগুড়া সদর উপজেলা বিএন‌পি'র সাধারণ সম্পাদক এ‌্যাড‌ভো‌কেট মাহবুব আলম শাহীন হত‌্যা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন। সেই মামলায় বুধবার জেলা জজ আদালতে অভিযোগপত্র গ্রহণ এবং অভিযোগ গঠন শুনানি ছিল।

বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল বাছেদ এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ২০১৯ সা‌লের ১৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়ার নিশিন্দারা উপশহর বাজার এলাকায় দুর্বৃত্তরা বিএনপি নেতা ও পরিবহন ব্যবসায়ী মাহবুব আলম শাহীনকে কুপিয়ে হত্যা করে। এঘটনায় ওই বছ‌রের ১৬ এপ্রিল নিহত শাহীনের স্ত্রী আকতার জাহান শিল্পী বাদী হয়ে আমিনুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ১১ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের চলমান বিরোধ নিয়ে শাহীনকে হত্যা করা হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

মামলাটি দীর্ঘ তদন্ত কালে জড়িতদের স্বীকারোক্তিতে হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে আমিনুল ইসলামের নাম আসে। পরে তাকে প্রধান আসামি করে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে। জেলা জজ আদালতে অভিযোগপত্র গ্রহণ না হওয়া পর্যন্ত আমিনুল ইসলাম উচ্চ আদালতে থেকে জামিনে ছিলেন।

বুধবার শাহীন হত্যা মামলার শুনানি শেষে আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এসময় আমিনুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তার আইনজীবী জামিন আবেদন করলে তা না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন জেলা জজ আদালত।

;