‘জনকল্যাণমূলক কাজে বিত্তশালীদের এগিয়ে আসতে হবে’
জনকল্যাণমূলক কাজে সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
তিনি বলেছেন, ‘আহ্ছানিয়া মিশন জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষের সার্বিক কল্যাণে কাজ করে আসছে। তাদের মতো সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিদের এগিয়ে আসতে হবে।’
শনিবার (৩০ নভেম্বর) আহ্ছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম এইচ খান মিলনায়তনে ‘খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা স্বর্ণপদক-২০১৮’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রেসিডেন্ট কাজী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, ড. এসএম খলিলুর রহমান, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন। তার লক্ষ্য ছিল- স্রষ্টার এবাদত ও সৃষ্টির সেবা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ মিশন জনসেবামূলক কাজ তথা দরিদ্র ও সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের সার্বিক কল্যাণে তথা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জীবিকা, মানবাধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে আহছানিয়া মিশন।
শিক্ষাক্ষেত্রে অনবদ্য অবদানের জন্য খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা স্বর্ণপদক-২০১৮ দেওয়া হয় শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানকে। পদকের জন্য গঠিত জুরিবোর্ড সর্বসম্মতিক্রমে ড. আনিসুজ্জামানকে এ পদক প্রদানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
ড. আনিসুজ্জামান শিক্ষাবিদ, লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইমেরিটাস অধ্যাপক। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের হাতে ক্রেস্ট এবং একটি সনদসহ অন্যান্য উপহার তুলে দেন।
প্রধান বিচারপতি শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের প্রসঙ্গে বলেন, তিনি জীবন্ত কিংবদন্তী। এ প্রতিভাবান ব্যক্তিত্ব ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছেন। ড. আনিসুজ্জামানের জ্ঞানগর্ভ ও অভিজ্ঞতালব্ধ গবেষণা, মৌলিক প্রবন্ধ, স্মৃতিকথা, সম্পাদিত বহু গ্রন্থ’ ও বিভিন্ন সাহিত্যকর্ম দেশ ও বিদেশে সর্বজনবিদিত। তিনি আইনজ্ঞ না হয়েও আইন পেশার সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
পদক প্রদানের প্রতিক্রিয়ায় ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘আমি খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লার স্নেহের পরশ পেয়েছি। আমাদের সময় তিনি ছাত্রদের ব্যক্তিগত সুবিধা অসুবিধায় শিক্ষকরা নজর রাখতেন। আর আজকে ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক যান্ত্রিক সম্পর্কে পরিণত হয়েছে। ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্ক অত্যন্ত মূল্যবান। এ সম্পর্ক ছাত্রের মেধা বিকাশে সহায়তা করে।’
বর্তমান অবস্থায় শিক্ষার পরিবেশ সময়োপযোগী করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
১৯৮৬ সাল থেকে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লার নামে পদক দিয়ে আসছে। জাতীয় পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ পর্যন্ত ২৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে এ পদক দেওয়া হয়েছে। খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা উপমহাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক, তৎকালীন জনশিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রতিষ্ঠাতা।