দুদকে দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের কেন অবৈধ নয়
দুর্নীতির অভিযোগে কোনো ব্যক্তির দুর্নীতির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয়ে (দুদক) এজাহার দায়ের কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আইন সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিব, দুদকের চেয়ারম্যান ও সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শককে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
এর আগে গত ১৫ নভেম্বর কোনো ব্যক্তির দুর্নীতির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এজাহার দাখিল এবং ওই এজাহারের ভিত্তিতে তদন্ত করার ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস ও নওশীন নাওয়ালের পক্ষে রিট দায়ের করেন আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম খান ও আইনজীবী মমতাজ পারভীন।
রিট আবেদনে দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা-২০০৭ (সংশোধনী ২০১৯) এর ১(২) (ঘ) (ছ), ৪, ৯(ক), ১০ নম্বর বিধি ও ফরম-২(খ) কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আরজি জানানো হয়।
আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস সাংবাদিকদের জানান, দুদক বিধিমালার ওই বিধিগুলো সংবিধানের ৩১, ৬৫(১) অনুচ্ছেদ এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ধারার পরিপন্থি।
রিট আবেদনে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৪ ধারা অনুযায়ী, যেকোনো ব্যক্তির অভিযোগ থানা রেকর্ড করতে বাধ্য। কিন্তু দুদকের ওই বিধিমালার কারণে এখন আর থানা দুর্নীতির বিষয়ে সরাসরি মামলা রেকর্ড করতে পারে না। কেবল জিডি হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। থানা অভিযোগ (জিডি) পাঠিয়ে দেয় দুদকে। এরপর তার ভিত্তিতে অনুসন্ধানের পর দুদক মামলা করে।
রিট আবেদনকারীর দাবি, এই বিধিমালার মাধ্যমে ফৌজদারি কার্যবিধিতে একজন নাগরিককে দেয়া ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের মামলা করার ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হয়েছে।
দুদক নিজেই মামলা করার ক্ষমতার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা-২০০৭ সংশোধন করে গত ২০ জুন গেজেট জারি করে। এই বিধিমালার ৪ নম্বর বিধিতে বলা হয়েছে, কোনো নাগরিক থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট থানা ওই অভিযোগ পাওয়ার পর তা জিডি হিসেবে গ্রহণ করে দুদকে পাঠিয়ে দেবে। ১০ নম্বর বিধিতে দুদককে তদন্ত করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।