২৪ ঘণ্টা পরও শুরু হয়নি ঢাকা বারের ভোট গণনা
২৪ ঘণ্টা পার হলেও দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বার খ্যাত ঢাকার আইনজীবী সমিতির ২০২০-২১ মেয়াদে দুইদিন ব্যাপী কার্যকরী কমিটির নির্বাচনে ভোট গণনা শুরু হয়নি।
গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দুইদিন ব্যাপী ভোটগ্রহণ করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫ টায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভোট গণনা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিকাল ৩ টায় ভোট গণনা শুরু হলেও মাত্র ১০ মিনিট পর বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা বারের সাবেক এজিএস তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ বার্তা২৪.কম’কে জানান, বিকাল ৩ টায় ভোট গণনা শুরু হলেও অপর্যাপ্ত পর্যবেক্ষকের কারণ দেখিয়ে ১০ মিনিট পর ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ভোট গণনা ফের কখন শুরু হবে বলতে পারেননি তিনি।
এর আগে দুইদিনে ১৮ হাজার ১৪৮ ভোটারের মধ্যে ৯ হাজার ২৯৯ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
গত বুধবার ও বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। মাঝে দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ১ ঘণ্টা নামাজ ও খাবারের বিরতির পর বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল থেকে ২৩ জন ও বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেল থেকে ২৩ জন মোট ৪৬জন প্রার্থী বিভিন্ন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গতবছরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। তাই এবার আওয়ামী লীগের নতুন প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির পরাজিত প্রার্থীই এবার দ্বিতীয় বারের মতো মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ফলে এবার নতুন ও পুরাতনের জমজমাট লড়াই আশা করছেন সাধারণ আইনজীবীরা।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেলের সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মো. মোশাররফ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মো. আহসান তারিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে বিএনপি সমর্থত নীল প্যানেলের সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গতবারের পরাজিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. ইকবাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মো. হোসেন আলী খান হাসান।
বিগত বছরগুলোতে ১২টি সম্পাদকীয় পদসহ মোট ২৭জন করে প্রার্থী থাকলেও এবার সদস্য পদসংখ্যা ১৫ থেকে কমিয়ে ১১ জন করা হয়েছে। ফলে কার্যকরি কমিটির ২৩টি পদে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে।
এ বছর সমিতির সদস্য সংখ্যা ২৫ হাজার ১৬৪ জন। তবে ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার ১৫০ জন।
সিনিয়র অ্যাডভোকেট মুন্সি ফখরুল ইসলাম প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১০ জন কমিশনার এবং ১০০জন সদস্য নিয়ে মোট ১১১ জন বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে।
সাদা প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মো. আবদুল কাদের, সহ-সভাপতি পদে মো. ইমাম হোসেন মঞ্জু, ট্রেজারার পদে মো. আনিসুর রহমান আনিস, সিনিয়র সহ- সাধারণ সম্পাদক পদে একেএম হাবিবুর রহমান চুন্নু, সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে সিকদার মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান হিমেল, লাইব্রেরি সম্পাদক পদে মো. আতাউর রহমান খান (রুকু), সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে তাসলিমা আক্তার রীতা, অফিস সম্পাদক পদে আবা খালেদ মাহমুদ দাইয়ান, ক্রীড়া সম্পাদক পদে সাইফুল ইসলাম সুমন, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক পদে শায়লা পারভিন পিয়া, সদস্য পদে এএইচএম শফিকুল ইসলাম সোহাগ, মো. বাহারুল ইসলাম বাহার, অ্যাডভোকেট মো. মাসুম মৃধা, মো. সাব্বির হোসেন, সাইফুল ইসলাম, মো. মেহেদী হাসান মেরিন, মো. রমজান আলী সরদার রানা, এবিএম ফয়সাল সারোয়ার, মো. মাইন উদ্দিন, সুলতানা রাজিয়া রুমা এবং ইমতিয়াজ আহমেদ প্রিন্স।
নীল প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে কামাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি পদে মো. আনিসুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ পদে আব্দুল আল মামুন, সিনিয়র সহ সাধারণ সম্পাদক নিহার হোসেন ফারুক, সহ-সাধারণ সম্পাদক শাকায়েত উল্লাহ ভূইয়া (ছোটন), লাইব্রেরী সম্পাদক পদে রফিকুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে হাবিবা কাদের মিলি, অফিস সম্পাদক পদে এইচএম মাসুম, ক্রীড়া সম্পাদক মনিরুল ইসলাম আকাশ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মাহবুবু হাসান রানা, সদস্য পদে মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজ (শামীম), মোছা. তাছলিমা আক্তার, কাজী আফরোজা সুলতানা (ইভা), ইয়াছিন মিয়া, মো. আব্দুল বাসেত রাখী, আজহার উদ্দিন রিপন, এমআরকে রাসেল, মো. তানভীর হাসান সোহেল, মো. হোসনী মোবারক, বাবুল আক্তার বাবু ও সাদেকুল ইসলাম ভূইয়া (জাদু)।
গত ২০১৯-২০২০ নির্বাচনে ২৭টি পদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাদা প্যানেল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১৮টি পদে এবং নীল প্যানেল ৩টি সম্পাদকীয় পদসহ ৯টি পদে জয়লাভ করে।