ব্যায়াম করলে কমে স্মৃতিভ্রমের ঝুঁকি
শরীরচর্চা বা ব্যায়াম যে কোনো ব্যক্তিকে শুধু শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতেই সাহায্য করে তা নয়। বরং, মানসিক বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তিলাভেও ব্যায়াম কার্যকর। তিয়ানজিন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শুকি ওয়াং এবং লিয়াও জু-এর একটি দীর্ঘ গবেষণা করেছেন মানসিক রোগ স্মৃতিভ্রম বা ডিমেনশিয়া নিয়ে। তাদের গবেষণায় জানা যায়, হৃদপিণ্ড এবং যকৃত সুস্থ থাকলে ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কমে যায়। এমনকি কার্ডিওরসপিরেটরি ফিটনেস বজায় থাকলে যাদের পারিপারিকভাবে স্মৃতিভ্রমে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাদের ঝুঁকিও আনুমানিক দেড় বছর পেছাতে পারে।
কার্ডিওরসপিরেটরি ফিটনেস বলতে বোঝায় শারীরিক ক্রিয়াকলাপের সময় ভালভাবে পেশীতে অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারার পরিমাণ। তাই ব্যায়ামের সময় হার্ট এবং ফুসফুস শারীরিক সুস্থতার দিকে শরীরকে ধাবিত করতে পারে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্বাভাবিকভাবেই কার্ডিওরেসপিরেটরি ফিটনেস হ্রাস পায়। ৭০ বছর বয়স হতে হতে প্রতি ১০ বছরে হৃদযন্ত্রের কর্মক্ষমতা শতকরা ২০ ভাগ করে কমতে শুরু করে।
তিয়ানজিয়ানের দুই গবেষক দীর্ঘ ১২ বছর ধরে গবেষণাটি চালিয়েছেন। ‘ইউকে বায়োব্যাঙ্ক’ এর ৩৯ থেকে ৭০ বছরের মধ্যবর্তী বয়সের ৬১ হাজারেরও বেশি অংশগ্রহণকারীদের উপর গবেষণা করা হয়েছে। তাদের হৃদযন্ত্রের অবস্থা পরীক্ষা করার জন্য একটি স্থির বাইকের উপর টানা ৬ মিনিটের জন্য ব্যায়াম করানো হয়েছিল।
এই পরীক্ষায় লক্ষ্য করা গেছে, যাদের কার্ডিওরেসপিরেটরি ফিটনেস বেশি, তাদের মস্তিষ্কের পরীক্ষায়ও কর্মক্ষমতা ভালো। তাদের সম্ভাব্য স্মৃতি, মৌখিক এবং সংখ্যার স্মৃতি এবং চিন্তা করার গতিও অধিক। এই ১২ বছরে ৫৩৩ জন ব্যক্তি ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, যাদের কার্ডিওরেসপিরেটরি ফিটনেস ভালো ছিল, অন্য ব্যক্তিদের তুলনায় তাদের যেকোনো ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি শতকরা ৪০ ভাগ কম ছিল।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, সবল কার্ডিওরেসপিরেটরি ফিটনেসের জন্য ডিমেনশিয়ার প্রভাব দেড় বছর পর দেখা দিতে শুরু করে। এমনকি বংশগতির মাধ্যমে হওয়া আল্জাইমারের মতো বার্ধক্যজনিত স্নায়বিক অবক্ষয়মূলক রোগের ঝুঁকিও কমতে দেখা গেছে।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস