তেহরানে যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় শোক দিবস পালন
ইরানের তেহরানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস শনিবার (১৫ আগস্ট) ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে ৪৫তম জাতীয় শোকদিবস পালন করেছে।
দিবসটি উপলক্ষে (ইরানে করোনা পরিস্থিতির কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে) আয়োজিত নানা কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং ইউনেস্কোর মহাপরিচালকের বাণী পাঠ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক স্থিরচিত্র ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন, আলোচনা সভা এবং জাতির জনক ও অন্য শহীদগণের আত্মার মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।
এগুলোতে ইরান প্রবাসী বাংলাদেশি, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, কূটনীতিক, ইরানি ব্যক্তিবর্গ এবং তেহরানস্থ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রদূত এএফএম গওসোল আযম সরকারের সভাপতিত্বে এবং দূতালয় প্রধান মোঃ হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক রাউসুল মুসাভি, রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগের পরিচালক মুজতাবা ইবরাহিমি, প্রকাশক সাদেগ সামি, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর ফার্সি ভাষায় অনুবাদকারী আমিন মোন্তাজেরি, তেহরানে বসবাসকারী সিনিয়র সাংবাদিক এজাজ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ বিষয়ক পরিচালক আহমদ সাদেগি এবং ইরান ডেইলি পত্রিকার নির্বাহী পরিচালক তোরাজ শির আলিলুসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব মুজিব বর্ষের প্রতি সম্মান জানিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক জনাব রাউসুল মুসাভি বলেন যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ব ইতিহাসে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তিনি শুধু বাংলাদেশের নেতা নন, বরং বিশ্বশান্তি ও প্রগতির অন্যতম অগ্রদূত ছিলেন। তিনি আরও জানান যে ইরানে মুজিব বর্ষের উদযাপনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহায়তা করছে এবং করবে।
রেডিও তেহরানের বাংলা বিভাগের পরিচালক মুজতাবা ইবরাহিমি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে রেডিও তেহরান ইতোমধ্যে একাধিক অনুষ্ঠান প্রচার করেছে এবং বছরব্যাপী নানা অনুষ্ঠান প্রচার করবে। উদাহরণস্বরূপ তিনি বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রেডিও তেহরান কর্তৃক রাষ্ট্রদূত এএফএম গওসোল আযম সরকারের সাক্ষাৎকারসহ বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারের কথা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে খ্যাতিমান প্রকাশনী কেতাবসারার চেয়ারম্যান সাদেগ সামি এবং সিনিয়র সাংবাদিক এজাজ হোসেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। অসমাপ্ত আত্মজীবনীর ফার্সি ভাষার অনুবাদক আমিন মোন্তাজেরি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিকথাটি পড়ে তিনি অভিভূত হয়েছেন এবং ফার্সি ভাষায় অনুবাদের তাগিদ অনুভব করেছেন। এটি কেবল একজন নেতার রাজনৈতিক স্মৃতিকথা নয়, বরং আত্মজীবনীটিতে একজন মহামানবের গড়ে উঠার প্রেক্ষাপট, মানস এবং বাংলাদেশর সমাজ-সংস্কৃতিও চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে।
সভার সভাপতি রাষ্ট্রদূত এএফএম গওসোল আযম সরকার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মোহনী নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয় এবং স্বাধীনতা অর্জন করে। বিবিসি কর্তৃক জরিপের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন যে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী এই মহান নেতার ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসের অন্যতম স্তম্ভ। স্বাধীনতা-উত্তর দেশগঠনে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদানের কথা উল্লেখ করেন।