‘কৃষি পণ্য বাজারজাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে’
কৃষক উৎপাদিত পণ্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারজাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা দিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেছেন, ‘শুধু খাদ্যের জন্য আবাদ নয়, কৃষি পণ্য বিক্রি করে কৃষক যাতে উন্নত জীবন যাপন করতে পারে সেটার জন্য সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’
শনিবার (২২ আগস্ট) মেহেরপুরে আউশ ধান কর্তন অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সদর উপজেলার কালাচাঁদপুর মাঠে আউশ ধান কর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আগে আউশে যে পরিমাণ ধান বীজ বপন করা হতো সেই পরিমাণ ফলন হতো। লাভের মধ্যে পুরাতন থেকে নতুন। এখন আমন ও বোরো মধ্যবর্তী সময়ে আউশ মৌসুমে উচ্চফলনশীল ধান জাত ও আধুনিক প্রযুক্তির সংস্পর্শে বিঘায় ফলন প্রায় ২০ মণ। এতে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন আমাদের কৃষকরা।’
মেহেরপুর কৃষির অপার সম্ভাবনাময় উল্লেখ করে কৃষি মন্ত্রী বলেন, ‘উঁচু সমভূমির এ জেলায় তেমন কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ নেই। ফলে প্রায় সব ফসলই এখানে উৎপাদন করেন চাষিরা। বিশেষ করে এখানকার হিম সাগর আম জাপানে ও নিরাপদ সবজি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।’
আমেরিকায় একটি ফুলকপি ৫/৬ ডলারে বিক্রি হয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কৃষকের উৎপাদিত সবজি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রপ্তানি করতে পারলে কৃষকরা ব্যাপক লাভবান হবেন। নিরাপদ সবজি রপ্তানির জন্য একটি আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে।’
কৃষিতে আধুনিকতা ও যান্ত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রসঙ্গ টেনে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘গেল বোরো মৌসুমে যন্ত্র দিয়ে ধান কাটা মাড়াই করায় হাওরাঞ্চলে দারুণ ফলাফল এসেছে। আগামীতে রোপণ, বপন, কর্তন, মাড়াই কাজে শতভাগ যন্ত্র নিশ্চিত করা হবে। এর মাধ্যমে কৃষক লাভবান হবেন। তবে কৃষি শ্রমিকরা যাতে বেকার না হড়ে পড়েন সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একশো অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ছেন। যেখানে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত করণ করে বিক্রি ও বিদেশে পাঠানো সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
কৃষিপণ্য বিক্রি করে কৃষকরা উন্নত জীবন-যাপন করবেন এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, ‘মেহেরপুরে সবজি, ধান, গমসহ বিভিন্ন ফসল হয়। এখানে ব্লাক বেঙ্গল ছাগল ও গরু পালন হয় ব্যাপকভাবে। তাই কৃষকরা যাতে তার উৎপাদিত পণ্য ভালো দামে বিক্রি করতে পারেন সেক্ষেত্রে নানামুখী কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার। শুধু খাদ্যের চাহিদা মেটাতে আবাদ নয় কৃষি পণ্য বিক্রি করে কৃষক পরিবার যাতে উন্নত জীবন ব্যবস্থায় আসতে পারে সেদিকে সরকারের সর্বোচ্চ সতর্ক গুরুত্ব রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন ও কৃষির চিত্র তুলে ধরেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মুনসুর আলম খাঁন। মেহেরপুর জেলার কৃষির চিত্র তুলে ধরেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক স্বপন কুমার খাঁ।
অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিরুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. মুইদ, ধান গবেষণা ইন্সিটিউট মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবির, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইং পরিচালক শাহ মো: আকরামুল হক ও মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেকসহ কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ।