আমদানি ও উৎপাদনে একইরকম মূসক হবে: শিল্প প্রতিমন্ত্রী
হালকা প্রকৌশল শিল্পপণ্য আমদানি ও উৎপাদন উভয়ক্ষেত্রে একইরকম মূসক ব্যবস্থা থাকার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
তিনি বলেন, গার্মেন্টস খাতের মতো হালকা প্রকৌশল খাতকেও সবধরনের সহায়তা প্রদান করার বিষয়টি সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।
শনিবার (২২ আগস্ট) শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) ও দৈনিক যুগান্তরের যৌথ উদ্যোগে হালকা প্রকৌশল শিল্প খাতের সমস্যা, সম্ভাবনা ও করণীয় শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনলাইনে জুম প্ল্যাটফর্মে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প সচিব কে এম আলী আজম। বিটাকের মহাপরিচালক ড. মো.মফিজুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
রূপকল্প ২০৪১ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে হালকা প্রকৌশল খাত অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ খাতের গুরুত্ব অনুধাবন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২০ সালকে ‘হালকা প্রকৌশল পণ্যবর্ষ’ ঘোষণা করেছেন। ঘোষণার আলোকে শিল্প মন্ত্রণালয় দেশিয় এ শিল্পখাতের সকল সম্ভাবনাকে দেশের উন্নয়নে ব্যবহার করার লক্ষ্যে কাজ করছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কৃষি, মোটর পরিবহন, নৌযান চলাচল, মুদ্রণসহ অন্যান্য সকল শিল্প কারখানার জন্য যাবতীয় স্পেয়ার পার্টস বা খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি ও মেরামত করার ক্ষেত্রে দেশের হাজার হাজার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। দেশে হালকা প্রকৌশল শিল্পখাতে ৫০ হাজারের অধিক কারখানায় সরাসরি ৮ লাখ এবং পরোক্ষভাবে আরও প্রায় ৬০ লাখ লোকের জীবিকা নির্বাহ করছে। সারা পৃথিবীতে হালকা প্রকৌশল খাতের বাজারের পরিমাণ প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী এ বিশাল বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় শিল্প সচিব বলেন, স্থানীয় বাজার ও আন্তর্জাতিক বাজারে দেশে উৎপাদিত হালকা প্রকৌশল শিল্প পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে এখাতের উদ্যোক্তাদের পলিসি সাপোর্ট প্রদান করা হবে। এখাতের জন্য একটি পৃথক নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। শিল্প সচিব এ খাতের জনশক্তির দক্ষতা উন্নয়ন এবং দেশের দক্ষ ও মেধাবী জনশক্তির দেশে অবস্থান নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
গোলটেবিল বৈঠকে ইঞ্জিনিয়ারিং মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, বিসিকের চেয়ারম্যান মোশ্তাক হাসান এনডিসি, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম, বিটাকের পরিচালক ড. ইহসানুল করিম, বুয়েটের প্রফেসর কামাল উদ্দিন, এমআইএসটির প্রফেসর ড. এ কে এম নূরুল আমিন, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শাহ মো. আবু রায়হান আল বেরুনী ও ডেপুটি চিফ মো. রায়হান উবায়দুল্লাহ প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা সম্ভাবনাময় দেশিয় হালকা প্রকৌশল খাতের উন্নয়নে বিদ্যমান কর কাঠামো পুনর্বিবেচনা করে দেশিয় ও আন্তর্জাতিক বাজার স্থানীয় উৎপাদনকারীদের অবস্থান দৃঢ় করার পরামর্শ প্রদান করেন। এছাড়া বিদ্যমান দক্ষ ও অদক্ষ জনবলের যুগোপযোগী দক্ষতা অর্জন ও উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় ঋণ সুবিধা নিশ্চিত ওপরও বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন তারা।