আরপিএমপিতে এক বছরে চাঞ্চল্যকর ১২ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
আরপিএমপিতে এক বছরে চাঞ্চল্যকর ১২ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন

আরপিএমপিতে এক বছরে চাঞ্চল্যকর ১২ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন

  • Font increase
  • Font Decrease

আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অপরাধ দমনে নিরলসভাবে কাজ করছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি) এর অপরাধ বিভাগ। গেল এক বছরে এই বিভাগ সাফল্যের সাথে চাঞ্চল্যকর ১২টি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) বার্তা২৪.কম-কে এতথ্য জানান আরপিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) শহিদুল্লাহ কাওছার।

আলোচিত ও ক্লু-লেস এসব হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে মেট্রোপলিটন পুলিশের অপরাধ বিভাগ অধিক গুরুত্ব সহকারে প্রতিটি হত্যা মামলা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

আলোচিত হত্যাকাণ্ডের মধ্যে ঢাকার ব্যবসায়ী তোশারফ হত্যা, হাজিরহাটের শিশু মুজাহেদুল হত্যা, শিশু পূর্ণিমা ধর্ষণ ও হত্যা, হারাগাছের সুমন হত্যা, তাজহাটের কবিরাজ মতি হত্যা, আইনজীবী আসাদ হত্যা, এন্তাজ হত্যা, মুলাটোলের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মিনু হত্যা, বীরভদ্রে স্ত্রী-সন্তান হত্যা, মুন্সিপাড়ার মনোয়ারুল হত্যা, রমেকের স্টাফ কোয়াটারর্সে সোহেল হত্যা মামলা উল্লেখযোগ্য। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত রংপুর মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় এসব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

তিনি আরও জানান, গত এক বছরে আরপিএমপি’র ছয়টি থানায় দুই শতাধিকেরও বেশি মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে খুন বা হত্যা মামলা ২১টি, ধর্ষণ ৩৮টি, অপহরণ ৫৬টি, চুরি ও প্রতারণার মামলা ৮৯টি, অস্ত্র আইনে ৪টি, ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৭ টি এবং পর্নোগ্রাফির মামলা ৩টি। এসব মামলায় ৪৩৯ জন আসামিকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১২টি চাঞ্চল্যকর ও ক্লু-লেস হত্যাকাণ্ডের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।

মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও দায়িত্বে থাকা সকলের আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও কর্মচাঞ্চল্যতায় দ্রুত সময়ের মধ্যে আলোচিত এসব হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন আরপিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) শহিদুল্লাহ কাওছার।

এ প্রসঙ্গে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আলীম মাহমুদ জানান, মেট্রোপলিটন পুলিশ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থায় রয়েছে। চাঞ্চল্যকর হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণসহ বেশ কিছু ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে নগরবাসির কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

   

দেশে চার কোটি টন চাল উৎপাদন হয়: তাজুল ইসলাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, সময়ের ব্যবধানে আমরা প্রায় চার কোটি টনের বেশি খাদ্য উৎপাদন করি। খাদ্য বলতে আমরা চাল উৎপাদন করছি। গত ১৫ বছরে আমাদের চাল আমদানি করতে হয়নি বলে জানিয়েছেন,

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) “১২তম আন্তর্জাতিক কৃষি প্রযুক্তি মেলা ২০২৪” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এই মলা চলবে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (ময়মনসিংহ) কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগ অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল আলম।

তাজুল ইসলাম বলেন, কৃষি সকল দেশের জন্য আদিখ্যাত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জিডিপির জন্য যেসব সেক্টরগুলো আমদের আছে প্রোডাক্টিভ সেক্টর, এগ্রিকালচার সেক্টর ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টর। এই সেক্টর গুলো না হলে সার্ভিস সেক্টর প্রমোট হবে না। মানুষের যেমন দুটি পা আছে ঠিক তেমনি জিডিপির দুটি পা হল এগ্রিকালচার ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেক্টর। গোলবালি ম্যাজিক বর্তমানে হল সার্ভিস সেক্টরের কন্ট্রিবিউশনে জিডিপি যত বেশি হবে সে দেশ ততো বেশি উন্নত।

এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা (আওয়ামী লীগ) যখন প্রথম সরকার গঠন করে তখন দেশে অনেক খাদ্য ঘাটতি ছিল। তখন ২০ মিলিয়নের নিচে খাদ্য উৎপাদন হতো। মানুষ খাদ্যের জন্য হাহাকার করত। তখন আমরা খাদ্য আমদানির উপর নির্ভর ছিলাম। সময়ের ব্যবধানে আমরা প্রায় চার কোটি টনের বেশি খাদ্য উৎপাদন করি। খাদ্য বলতে আমরা চাল উৎপাদন করছি। গত ১৫ বছরে আমাদের আমদানি করতে হয় নাই। ১৯৯৬ সালে তখন আমরা ৮০ টাকার সারকে ২০ টাকায় বিক্রি করছি। সে সময় সারের দাম ও কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ের শুল্ক কমানো হয়। ১৯৯৬ সালে দেশে ১৬'শ মেগাওয়াড বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। আজকে দেশে ২৭ হাজার মেগাওয়াড বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। শহরের লোডশেডিং করেছি কিন্তু গ্রামে কৃষি কাজে জন্য লোডশেডিং মুক্ত রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। এর কারণে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনের ঘাটতি সম্পূর্ণ মুক্ত করতে পেরেছি।

অনুষ্ঠানে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ সিনিয়র সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগমের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল ওয়াদুদ, লিমরা ট্রেড ফেয়ারস্ এন্ড এক্সিবিশনস্ (প্রাঃ) লিমিটেড চেয়ারম্যান কাজী ছারোয়ার উদ্দিন, পল্লী উন্নয়ন একাডেমী বগুড়া, মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. খুরশীদ ইকবাল রেজভী প্রমুখ।

;

টাঙ্গাইল শাড়িসহ জিআই সনদ পেল আরও ১৪ পণ্য



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইল শাড়িসহ দেশের মোট ১৪টি ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সনদ প্রদান করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদফতার।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমির মাল্টিপারপাস হলে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন সংশ্লিষ্টদের হাতে এ সনদ তুলে দেন।

জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া পণ্যগুলো হলো- গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মৌলভীবাজারের আগর, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মুক্তাগাছার মণ্ডা, যশোরের খেজুরের গুড়, রাজশাহীর মিষ্টি পান এবং জামালপুরের নকশিকাঁথা। এ নিয়ে ডিপিডিটি কর্তৃক জিআই সনদপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১টিতে।

এসময় শিল্পমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ একটি অমিত সম্ভাবনাময় দেশ। ষড়ঋতুর এ দেশকে প্রকৃতি যেমন দু'হাত ভরে তাঁর বৈচিত্র্যময় সম্পদ ঢেলে দিয়েছে, তেমনি এদেশের মেহনতি মানুষ তাদের আপন শৈল্পিক কারুকার্যের মাধ্যমে অনন্যসাধারণ সামগ্রী প্রস্তুত করে বিশ্ব-দরবারে বাংলাদেশের সুনাম ও খ্যাতি বৃদ্ধি করেছে। মাটি, বায়ু, পানি, পরিবেশ, কারিগরদের দক্ষতা প্রভৃতি স্বতন্ত্র ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ছোট এ ভূখণ্ডের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব পণ্যকে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি এর গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বিশ্ববাজারে জিআই পণ্যের প্রচার ও প্রসারে আমাদের এখনই কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশের বাংলাদেশ মিশনসমূহ, দেশের সকল আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয়ভাবে এসব পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মেলায় জিআই পণ্যসমূহ প্রদর্শন করা যেতে পারে। তিনি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ডিপিডিটি, বিসিক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এসব পণ্যের উন্নয়ন ও প্রসারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন কোনো খালি বাস্কেট নয়, এটি একটি পরিপূর্ণ ভরা বাস্কেট। আমাদের সম্পদের কোনো অভাব নেই, প্রয়োজন এর সদ্ব্যবহারের। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা, কারিগরি সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব সম্পদ ও পণ্যের প্রচার-প্রসার ঘটাতে হবে।

সিনিয়র শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে এমন ৫০০টি পণ্যের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছি। একটু দেরিতে হলেও আমরা এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় আমরা ২০১৩ সালে 'ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন প্রণয়ন করি এবং পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করি। বিশেষ অতিথি বলেন, আমাদের জিআই পণ্যকে সুরক্ষা দিতে হবে এবং একইসঙ্গে এর পেটেন্ট দিতে হবে। জিআই পণ্যের প্রচার-প্রসারে বিভিন্ন উৎসব, পালাপার্বণ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এসব পণ্যকে আমরা উপহার হিসেবে প্রদান করতে পারি। তাছাড়া এসব পণ্য সম্পর্কে টিভিসি, ডকুমেন্টারি তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবস্থা প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

ডিপিডিটি'র মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফী বিনতে শামস ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা।

;

জামালপুরে চুরি ও হারিয়ে যাওয়া ১৭ মোবাইল ফোন উদ্ধার করল পুলিশ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, জামালপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জামালপুরে চুরি ও হারিয়ে যাওয়া ১৭টি মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের কাছে ফেরত দিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে জামালপুর সদর থানায় সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহরাব হোসেন।

পরে উদ্ধারকৃত এসব মোবাইল ফোন সেট প্রকৃত মালিকদের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহরাব হোসেন জানান, 'তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন সময় চুরি- হারিয়ে যাওয়া ১৫ জনের ১৭টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে। কারো মোবাইল হারিয়ে গেলে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দিয়ে মোবাইল সেট ব্যবহারে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, যাদের কাছ থেকে মোবাইল সেটগুলো উদ্ধার করা হয়েছে তারা না বুঝেই এসব মোবাইল সেট ক্রয় করে ব্যবহার করছিলো। তবে এসব মোবাইল সেট বিক্রির সাথে জড়িতদের আটক করা না হলেও তাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে। পরে আনিসুর রহমান নামে এক ব্যক্তির ৬ মাস আগে হারিয়ে যাওয়া ২টি ও ফয়সাল হাসান নামে এক ব্যক্তির দুই দিন আগে হারিয়ে যাওয়া ২টি মোবাইল সেটসহ উদ্ধারকৃত মোট ১৭টি মোবাইল সেট ভূক্তভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়।

এ সময় পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

;

চবির হলে মাদক কারবারি, সূর্য ডুবতেই শুরু হয় কেনাবেচা



মুহাম্মাদ মুনতাজ আলী, চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
চবির হলে মাদক কারবারি, সূর্য ডুবতেই শুরু হয় কেনাবেচা

চবির হলে মাদক কারবারি, সূর্য ডুবতেই শুরু হয় কেনাবেচা

  • Font increase
  • Font Decrease

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। যেখানে প্রতি বছর আকাশসম স্বপ্ন  বাস্তবে রূপদান করতে হাজারো শিক্ষার্থী প্রবেশ করে। কিন্তু মুক্ত ক্যাম্পাসে অবাধ বিচরণ ও অসৎসঙ্গ পেয়ে কিছু বুঝে উঠতে না উঠতেই যুক্ত হয় মাদক সাম্রাজ্যের গহীন অন্ধকারে। যেখান থেকে বের হতে না পেরে ঝরে যায় সহস্র মেধাবী শিক্ষার্থী, ভেস্তে যায় হাজারো পিতা-মাতার আশা-আকাঙ্ক্ষা।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মাদক সাম্রাজ্যের গহীন অন্ধকারে নিমজ্জিত শিক্ষার্থীরা অবস্থান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলে। এদের মধ্যে অধিকাংশই অছাত্র ও বহিষ্কৃত। সন্ধ্যা নামতেই মদ, গাঁজা ও ইয়াবার আসর বসে তাদের। শুরু হয় মাদকাসক্তদের আনাগোনা। যে করিডরে পাওয়ার কথা ছিল শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার চাপা গুঞ্জন, সেখানে মেলে গাঁজার উৎকট গন্ধ। এদের মধ্যে কেউ আবার নিয়মিত বিভিন্ন স্থান থেকে মাদকের চালান নিয়ে এসে করেন ব্যবসাও। সাপ্লাই দেন পুরো ক্যাম্পাসে।

সম্প্রতি পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশিকুজ্জামান জয়ের মাদক কারবারির সাথে যুক্ত থাকার একাধিক প্রমাণ মেলে। বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়, তার মাদক কেনাবেচা ও সরবরাহের জন্য রয়েছে বিশাল সিন্ডিকেট। এজন্য সে রাজনৈতিক প্রভাবকে পুঁজি করে চালায় মাদক ব্যাবসা। তার দাবি- সে শাখা ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের একাংশের অনুসারী, থাকেন এ এফ রহমান হলের ৪৪০ নং কক্ষে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হলের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই হলে সম্প্রতি মাদক সেবনকারীদের সংখ্যা বেড়েছে। মদ, গাঁজা ও ইয়াবা তাদের নিত্য সঙ্গী। এর ফলে প্রকাশ্যে মাতলামি করতেও দেখা যায় অনেককে।

ঘটনার অনুসন্ধানে এ এফ রহমান হলের ৪৪০ নং কক্ষে প্রকাশ্যে কয়েকটি মদের বোতল পাওয়ায় কক্ষটি গতকাল বুধবার (২৪ এপ্রিল) সিলগালা করে দেয় হল কর্তৃপক্ষ।

এর আগে গত সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ১১টায় এ. এফ রহমান হলে মদপান, মাতলামি ও মাদক সরবরাহের অভিযোগে আশিকুজ্জামান জয় নামের ওই শিক্ষার্থীকে হল থেকে পিটিয়ে বের করে দেয় শাখা ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের বেশ কয়েকজন কর্মী।

এ ব্যাপারে এ এফ রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শাকিল আহমেদ জানান, চবির এ এফ রহমান হলে সাম্প্রতিক সময়ে মাদক সেবনকারীদের সংখ্যা বেড়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে খোঁজ নিলে দেখা যাবে সবচেয়ে বেশি মদ, গাজা ও ইয়াবা খায় এই হলের ছেলেরা। আমাদের ব্যাচেরই এক শিক্ষার্থী আশিকুজ্জামান জয় ঈদের পরপরই হলে ৭ থেকে ৮ কেজি মাদকদ্রব্য নিয়ে আসে এবং খেয়ে মাতলামি করে। এজন্য তাকে বেশ কয়েকবার সতর্ক করা হলেও সে শুনেনি। ফলে তার সাথে আমাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার কাছে জয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ এফ রহমান হলের সকলেই জানে জয় সম্পূর্ণ মাদকাসক্ত। সে দীর্ঘদিন থেকে মদ ইয়াবা সেবনের সাথে জড়িত থাকার পাশাপাশি হলে মাদক বিক্রিও করতো। আমরা তাকে নিষেধ করা সত্বেও সে এগুলো না ছাড়াই তার সাথে আমাদের একটু ধাক্কা-ধাক্কি হয়েছে।

আশিকুজ্জামান জয়কে মারধরের পর সরেজমিনে এ এফ রহমান হলের ৪৪০ নং কক্ষ পর্যবেক্ষণ করলে কয়েকটি মদের বোতল পাওয়া যায়। সেগুলোতে মদ না থাকলেও মদের টাটকা গন্ধ মেলে।

তবে, আশিকুজ্জামান জয় নিজ গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াসের সাথে সম্পর্ক খারাপ কেন- এই জের ধরে মারধরের কথা স্বীকার করলেও মদ পানের বিষয়টি অস্বীকার করেন। যদিও আশিকুজ্জামান জয়ের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, একটি দেশি মদের বোতল নিয়ে বসে আছেন। পাশে রাখা আছে আরও দুইটি মদের বোতল।

এসব ব্যাপারে এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আলী আরশাদ চৌধুরী জানান, আমরা গতকাল (বুধবার) হাউজ টিউটরাসহ কক্ষটিতে গিয়েছিলাম। আমরা আপাতত কক্ষটি সিলগালা করে দিয়েছি। রুমে যে থাকতো তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। আমরা পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিব।

মাদক কারবারির ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোহাম্মদ অহিদুল আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, সংশ্লিষ্ট হলের প্রভোস্টের সাথে বিষয়টা নিয়ে কথা বলব। তার ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে হল প্রভোস্টসহ আমরা তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যাবস্থা নিব।

;