যাত্রী হয়রানি ও দুর্ঘটনামুক্ত যাতায়াত নিশ্চিতের দাবি
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে হলে প্রতিটি নাগরিকের ন্যায্য ভাড়ায় হয়রানি ও দুর্ঘটনামুক্ত যাতায়াতের অধিকার সুনিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। এক্ষেত্রে গণপরিবহনগুলোতে যাতায়াতের পরিবেশ উন্নত করার পাশাপাশি সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্চে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত যাত্রী অধিকার দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জিল্লুর রহমান।
তিনি আরও বলেন, যাত্রী অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে পরিবহনের সামগ্রিক চিত্র পাল্টে যাবে। মালিকেরাও লাভবান হবে। ফলে মানবিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে। তাই যাত্রী অধিকার দিবস শুধুমাত্র যাত্রীদের স্বার্থ নয়, বরং মালিক-শ্রমিক সকলের স্বার্থ নিয়ে কথা বলবে।
একই অনুষ্ঠানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান পরিবহন সেক্টরের অনিয়ম, দুর্নীতি ও হয়রানির নারকীয় পরিবেশ থেকে উত্তোরণে প্রতিবছর যাত্রী অধিকার দিবস পালনের গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, সংবিধানের ০৭ অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। সেই হিসেবে জনগণ যখন পরিবহনের যাত্রী হয়, তখন ন্যায্য ভাড়ায় হয়রানি ও দুর্ঘটনা মুক্ত যাতায়াত করার বিষয়টি রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, গণপরিবহনে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, ভাড়া নৈরাজ্য ও সড়ক নিরাপত্তায় আমাদের ধারাবাহিক কার্যক্রমের ফলে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকেও নির্দেশনা এসেছে। কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী মহলের অপতৎপরতায় যাত্রী স্বার্থ বার বার ভুলুণ্ঠিত হচ্ছে। সড়কে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। বিশৃঙ্খল পরিবহনের ফলে প্রতি বছর যানজটে হাজার কোটি টাকার শ্রম ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। সড়কে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, চাঁদাবাজী, নৈরাজ্য ইত্যাদির কারণে বাংলাদেশের সার্বিক শাসন ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ পায়। সরকার যখন উন্নয়ন তরান্বিত করতে আরও বেশি বৈদেশিক বিনিয়োগ আনতে আগ্রহী হয়, তখন সড়ক পরিবহনের এই বিশৃঙ্খল অবস্থা বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই এই সমস্যাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- অ্যাসোসিয়েশন অব বাস কোম্পানির প্রেসিডেন্ট খন্দকার রফিকুল হোসেন কাজল, হাবিবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যাপক হুমায়ুন কবির মোড়ল, বাংলাদেশ এডিটরস ফোরামের সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী, যাত্রী কল্যাণ সমিতির যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ মেহেদী সহ আরও অনেকে।