আমি চাই জনগণ আমাকে ডিস্টার্ব করুক: আসিফ আহমেদ



শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কর্মক্ষেত্র বৃহৎ না হলেও নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে শ্রেষ্ঠ হতে চান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ। আয়তন ও জনসংখ্যার দিক দিয়ে ডিএনসিসির দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ওয়ার্ডকে ডিজিটাল ওয়ার্ড হিসেবে উপহার দিতে চান তরুণ এই জনপ্রতিনিধি।

নিজের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে নিজ অফিসে বার্তা২৪.কমকে দেওয়া একান্ত এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমি চাই জনগণ আমাকে ডিস্টার্ব করুক, ডিস্টার্ব করলেই তো কাজ করতে পারব'।

বার্তা২৪.কম: আপনার ওয়ার্ডকে কিভাবে গড়তে চান?

আসিফ আহমেদ: আমি নির্বাচনের আগে বলেছিলাম এই ওয়ার্ডটাকে ডিজিটাল ওয়ার্ড করব। আমরা করার ইচ্ছাও আছে। এরইমধ্যে কিছু কাজ শুরু করেছি। এলইডি লাইটের জন্য চেষ্টা চলছে। আমার পরিকল্পনা আছে স্কুল, কলেজে বাচ্চাদের ট্যাব দেওয়া, একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ তারা পরিশোধ করবে। এছাড়া প্রতিটি বাড়ি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার পরিকল্পনা করেছি। সেক্ষেত্রে ফ্ল্যাট প্রতি ১০০ টাকা করে চার্জ দিতে হবে। এগুলো পরিকল্পনায় আছে।

বার্তা২৪.কম: ট্যাক্স আদায়ের মিশনে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন কি?

আসিফ আহমেদ: আমি চেষ্টা করব এই ওয়ার্ড থেকে বেশি ট্যাক্স আদায় করার জন্য। এজন্য আমি ডোর টু ডোর সার্ভিস চালু করব। ট্যাক্স আদায়ের এই অভিযান এক সপ্তাহের জন্য নয়, এক বছরব্যাপী চলবে। আমি চাই সব থেকে বেশি ট্যাক্স আমার ওয়ার্ড থেকেই আসুক। কেননা মেয়র মহোদয় বলেছেন, যে যত ট্যাক্স আনবা আমি তাকে উন্নয়নের জন্য সেই টাকাটাই বরাদ্দ করব। বেশি ট্যাক্স আদায় হলে আমার ওয়ার্ডের উন্নয়ন কাজও বেশি হবে।

অসুবিধার বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে যারা ট্যাক্স আদায় করেন তারা অনেক বছর ধরেই চাকরি করেন। ওরা আমাদের সহযোগিতা করছে না। আমাদের সঠিক তথ্য দেয় না। তাদেরকে অনেকভাবে বোঝানোর পরেও লাভ হচ্ছে না। আমি এমনো শুনেছি ৫ তলা ভবন আছে অথচ দেখানো হচ্ছে খালি প্লট। যারা বাসা থেকে ট্যাক্সে আদায় করে তারা নানাভাবে ম্যানেজ হয়ে যায়। আমি এদের সাথে কাজ করে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি না। উদাহরণ দিয়ে বলেন, জাপান গার্ডেন সিটিতে আমাকে বলা হয়েছে মাত্র ১৬০০ ফ্ল্যাট, অথচ সেখানে আছে প্রায় ২৪০০ ফ্ল্যাট। আমি ১৬০০ বা ২৪০০ বাদ দিলাম। অন্তত দুই হাজার ফ্ল্যাট তো আছে। তারপরেও এতো মিসিং কেন?

এজন্য আমি দুই সময় দিয়েছি সমস্ত বাসার কাগজ চাই। যাদের ট্যাক্সের কাগজ পাব না তাদের নামে রিপোর্ট করে নগরভবনে পাঠাব। কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই হবে। তাছাড়া আমি হোল্ডিং ট্যাক্সের কাগজ না পেলে কোনো সার্টিফিকেটে স্বাক্ষর করি না।

বার্তা২৪.কম: এই ৩৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। আপনি সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, এখানকার মানুষ কি নতুন কিছু পেল?

আসিফ আহমেদ: রাজনীতিতে এরকম বলাটা একটু 'ডিফিকাল্ট' জিনিস। এখানে সবাইকে খুশি রেখে কাজ করতে হয়। মোহাম্মদপুর চার রাস্তার মোড়ে ৩৫ বছর যে জায়গা অবৈধ দখলে ছিল সেগুলো উচ্ছেদ করেছি। আমি এসে করলাম তাহলে ৩৫ বছর কেনো হল না? আমার যদি ইচ্ছা না থাকত, আমি ভাঙতাম না। সামনে আরো ভাঙবো। সব অবৈধ দখল উচ্ছেদ করব।

বার্তা২৪.কম: সাধারণত নির্বাচিত হওয়ার পর কাউন্সিলররা একটা নির্দিষ্ট গ্রুপ মেনে চলে, আপনার ক্ষেত্রেও কি তাই?

আসিফ আহমেদ: আমি দায়িত্ব নেয়ার পর সবগুলো করপোরেট নম্বর দিয়ে রেখেছি। প্রতিটি কাজের জন্য আলাদা আলাদা নম্বর দেওয়া আছে। কারো বাসায় যদি মশার ওষুধ না ছিটায় বা ওষুধের জন্য টাকা চায় তাহলে ওই নম্বরে জানাবে, তারা কথা না শুনলে আমাকে পাঠাবে। আমি সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়াতে আমার নম্বর দিয়ে দিয়েছি। আমি বলেছি যখন প্রয়োজন আমাকে ফোন করেন, যেভাবে হোক আমি সাহায্য করার চেষ্টা করব। আমি চাই জনগণ আমাকে ডিস্টার্ব করুক, ডিস্টার্ব করা মানেই আমি কাজ করতে পারব।

বার্তা২৪.কমকে দেওয়া একান্ত এক সাক্ষাৎকারে আসিফ আহমেদ

বার্তা২৪.কম: মশার ওষুধ নিয়ে কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে বরাবরই একটা অভিযোগ ওঠে ঠিকমত ওষুধ দেয় না। এবার কি কোনো পরিবর্তন এসেছে?

আসিফ আহমেদ: আমি একমাত্র কাউন্সিলর মশার তেল, মশার ওষুধ বাসায় রাখি। কারণ আমি এসেই ৫ জনকে বরখাস্ত করেছি। কারণ তারা মশার ওষুধ বিক্রি করতে গিয়ে আমার লোকের কাছে ধরা পড়েছে। আমার উন্নয়ন করার ইচ্ছা না থাকলে মশার ওষুধ বাসায় নিয়ে রাখতাম না। জনগণের সেবা করার জন্য এসেছি। আমি চেষ্টা করছি জনগণের পাশে থেকে সেবা করার জন্য। আমি বলেছি মশার ওষুধের জন্য যদি কেউ টাকা চায় সাথে সাথে জানান।

বার্তা২৪.কম: অভিযোগ আছে আপনার পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ডের কারণে অনেকে আপনাকে ভয়ে কিছু বলে না?

আসিফ আহমেদ: পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। আমি যদি চোর হই, আমার বাবা বলবে না চুরি করতে, আমি যদি ভালো না হই আমার বাবা বলবে না তুমি ভালো হও। তাদের কথা আমার ক্যারিয়ার আমি কিভাবে গড়ব। চুরি করব সামনে আগাতে পারব না। রাজনীতি হচ্ছে চ্যালেঞ্জ। ব্যবসাতেও যেমন চ্যালেঞ্জ থাকে, রাজনীতিতেও অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে। এমন কাজ করব না যেটা নিয়ে বিতর্ক হবে, যেটায় দলের বদনাম হবে।

বার্তা২৪.কম: কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে ফুটপাত দখল করে ব্যবসার অভিযোগ ওঠে। আপনার এলাকাতেও মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড মোড় হতে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত রাস্তার অনেকাংশ দখলে থাকা এরা কারা?

আসিফ আহমেদ: ওখানে দোকানদের বললেই বলবে কাউন্সিলর করাচ্ছে। আমার নামটাই আগে আসে। যারা অভিযোগ করে তাদের বলেছি কাউন্সিলরকে না বলে ৯৯৯ এ ফোন করুন। কাউন্সিলের ব্যাপারে অভিযোগ করলে সরাসরি হেড অফিস থেকে আসবে। আমি যদি দুর্নীতিবাজ হয়ে থাকি আমি অ্যারেস্ট হব। আমার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ যদি না থাকে তাহলে তো কিছু বলতে পারবে না। অনেকে ফোন দেয় আপনার নামে এটা করা হচ্ছে। সম্প্রতি থানা থেকে আমাকে ফোন করা হয়েছে একটা ঘটনার বিষয়ে। আমার নাম ভাঙিয়ে কেউ চাঁদাবাজি করেছে। আমি বলে দিয়েছি আমার নাম বিক্রি করলে সাথে সাথে অ্যাকশন। আমি থানায় কম যাই। সমস্যা থাকলে থানায় যাব। সমস্যা না থাকলে থানায় কেন যাবো। আমি থানায় যাই না সুপারিশও করি না। বলে দিয়েছি সবই যদি কাউন্সিলর খায়, কাউন্সিলরের তো অনেক কিছু হয়ে যাবে। কাউন্সিলর তো বদনাম করতে আসে নাই, সুনাম কামাতে এসেছে।

বার্তা২৪.কম: দখলদার কারা? তারা কি বেশি শক্তিশালী?

আসিফ আহমেদ: আসলে যে রোডের কথা বলা হচ্ছে সেখানে করোনার কারণে আমরা অনেকটা ছাড় দিয়েছিলাম। সেই ছাড় দেওয়াই আমার জন্য খারাপ হয়েছে। আজ উচ্ছেদ করলে আবার দেখা যাবে কাল দখল করে বসে আছে। তাছাড়া দলীয় ব্যাপার-সেপার থাকে। দলীয় লোকজন কিছু দোকান দিতে চায়। অনেক সময় বলি আচ্ছা ঠিক আছে তুমি দুইটা ভ্যান বসাও রাস্তার পাশে চাপায়া বসাও। অনেক সময় দেখা গেছে সেই দুইটা থেকে ৫০টা হয়ে গেছে। চার রাস্তার মোড়ের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে খালি করে দিয়েছিলাম, দখলদাররা আবার দখলে নিতে চাচ্ছে। এখানে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। মেয়র মহোদয়কে বলেছি স্থায়ী সমাধানের জন্য। এই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা যদি আমাকে সহযোগিতা করে আর একটু সময় দেয় তাহলে আমি অবশ্যই একটা পরিবর্তন এনে দিতে পারব।

   

ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই তরুণের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীতে পৃথক দুইটি সড়ক দুর্ঘটনায় তানভীর হোসেন সৈকত (১৬) ও শাকিল হক শান্ত (২৬) নামে দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাইচ্ছুটি এলাকা ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ডাক বাংলা এলাকায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত তানভীর হোসেন সৈকত ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের নোয়াবাদ এলাকার গুড়াগাজী বাড়ির হারুনুর রশীদের ছেলে এবং অন্যজন শাকিল হক শান্ত ছাগলনাইয়া উপজেলার মহামায়া ইউনিয়নের চাঁদগাজী এলাকার প্রবাসী সিরাজুল ইসলামের ছেলে। শান্ত দীর্ঘদিন ধরে পরিবারের সঙ্গে শহরে ভাড়া বাসায় থাকতেন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেনীর সোনাগাজীতে তিন বন্ধু মিলে প্রাইভেটকার নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন শান্ত। গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে গেলে প্রাণ হারান তিনি। এ সময় গাড়িতে থাকা তার অপর দুই বন্ধু অমি এবং রবিন গুরুতর আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে নিহত সৈকতের পরিবার জানায়, বিকালে বোনের বাড়ি থেকে ফেরার পথে কাইচ্ছুটি রাস্তার মাথায় মহাসড়ক পার হওয়ার সময় একটি মাইক্রোবাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন সৈকত। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত সৈকতের ভগ্নিপতি মজিবুল হক বলেন, পরিবারে পাঁচ বোনের মধ্যে সবার ছোট সৈকত। আমি প্রবাস থেকে ফেরার পর ঈদ উপলক্ষে শ্বশুরবাড়ির সবাইকে দাওয়াত করেছিলাম। এখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে পরিবারের সবাই চলে গেলেও সৈকত পরে বের হয়। পরে কাইচ্ছুটি এলাকায় পৌঁছালে তাকে একটি মাইক্রোবাস ধাক্কা দেয়। তার এমন আকস্মিক মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছে না কেউ।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, কয়েকজন পথচারী গুরুতর আহত অবস্থায় সৈকতকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। নিহতদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। 

;

সিরাজগঞ্জে দুই মাথা ৪ চোখ নিয়ে বাছুরের জন্ম



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিরাজগঞ্জ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই মাথা ও চার চোখ নিয়ে জন্ম নিয়েছে একটি গরুর বাছুর। এ খবর শুনে উৎসুক জনতা এক নজর দেখতে খামারির বাড়িতে ভিড় করছে।

এই অদ্ভুত বাছুরটি জন্ম হয়েছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের পালাশী গ্রামের খয়বার আলীর বাড়িতে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল ) বিকালে খামারির বাড়িতে জন্ম নেওয়া পর থেকে বাছুরটি দেখতে ভিড় করছে এলাকাবাসী।

খয়বার হোসেন বলেন, গাভীটি আমার গৃহপালিত। চার বছর আগে বিদেশি ষাড়ের মাধ্যমে প্রজনন দিয়ে প্রসূতি গাভীটির জন্ম হয়। পরবর্তীতে গাভীটি বড় হলে প্রজননের জন্য ইনজেকশন ব্যবহার করে গর্ভধারণ করা হয়। দীর্ঘ আট মাস ২৩ দিন পর গাভীটি দুই মাথা ও চার চোখ বিশিষ্ট একটি বকনা বাছুর প্রসব করে। বকনা বাছুরটি এখনো নড়াচড়া করছে। উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও দুই মাথার কারণে উঠে দাঁড়াতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, বাছুরটি অস্বাভাবিক, দুই মাথা ও চার চোখ বিশিষ্ট। অস্বাভাবিক প্রকৃতির এই বাছুরটিকে দেখার জন্য বাড়িতে ভিড় করছে।

তাড়াশ উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়ালিউল্লাহ বলেন, হরমোনাল ইমব্যালান্সের কারণে এরকম বাছুর প্রসব করার সম্ভাবনা থাকে। এ ছাড়াও প্রজনন গত কারণেও এ রকম অস্বাভাবিক বাছুর প্রসব হতে পারে। তবে এমন বাছুর প্রসব খুব একটা পরিলক্ষিত হয় না।

;

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

বান্দরবান-রাঙ্গামাটি সীমান্তে তীব্র গোলাগুলি

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবান-রাঙ্গামাটির সীমান্তের দুর্গম এলাকায় তীব্র গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। সেখানে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে বান্দরবানের রুমার প্রাংসা-পাইন্দু ও রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ির বড়থলি ইউনিয়নে সীমান্তের দুর্গম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গত ৬ এপ্রিল থেকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে যৌথ বাহিনী, যা এখনও চলমান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রুমা খাল, প্রাংসা, পাইন্দু ও রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলি সীমান্ত এলাকায় তীব্র গোলাগুলির চলছে। এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান উহ্লা চিং মারমা জানান, কয়েকদিন ধরে রুমা উপজেলায় যৌথবাহিনীর অভিযান চলছে। এলাকাবাসীরা তাকে আজ বিকেলে জানিয়েছেন পাইন্দু- রুমা সদর ইউপি ও বিলাইছড়ি উপজেলা বড়থলি ইউনিয়নের সীমান্তে দুর্গম এলাকার ভিতরে প্রচণ্ড গুলি বোমার আওয়াজ শুনেছেন। এলাকাবাসীর ধারণা, গোলাগুলি হচ্ছে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর।

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজাহান জানান, গোলাগুলির সংবাদ পেয়েছি। তবে বিস্তারিত জানা যায়নি।

গত ৮ এপ্রিল যৌথবাহিনী বিশেষ অভিযান চালিয়ে রুমা উপজেলার বেথেলপাড়া থেকে ১৮ নারীসহ ৪৯ জনকে গ্রেফতার করে। অন্যদের বিভিন্ন সময়ে মোট ৬৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে ৫২ জনের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে পাঠানো ৫২ জনের মধ্যে ১৭ জন নারী রয়েছেন।

 

 

 

 

 

 

;

সাভারে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং, আতঙ্কে নগরবাসী



মো. কামরুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকার সাভারে দিনদিন বেড়েই চলছে কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ংকর তাণ্ডব। ফলে সাভার এখন পরিণত হয়েছে আতঙ্কের নগরীতে। পৌর এলাকাতেই মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ৪ খুন। এছাড়া প্রতিনিয়ত ছিনতাই, আধিপত্য বিস্তার ও মাদকের অন্যতম কারণ এই গ্যাং কালচার। কোনোভাবেই যেন লাগাম টানতে পারছে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রকাশ্যে কিশোর গ্যাংয়ের হামলা পাল্টা হামলা সাভার পৌরসভার নিত্যদিনের ঘটনা। রক্তাক্ত শরীর নিয়ে কেউ হেঁটে যায়, আনার কেউ হাসপাতালে বিছানায় করে বাঁচার আর্তনাদ। কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্যে সম্প্রতি সাভার পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১২ এপ্রিল সাভারের আড়াপাড়ায় খুন হলেন রং মিস্ত্রী সাজ্জাদ। গত ৩১ মার্চ সাভারের রেডিও কলোনীতে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে মৃত্যু সাথে লড়াই করেছেন কলেজ ছাত্র রবিউল।

ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্র রবিউল ইসলাম বার্ত২৪.কম-কে বলেন, 'সকালে আমি ডিউটির উদ্দেশ্যে যাইতেছি। তখন দেখি দুইটা ছেলে বসা তখন আমার হাতে মোবাইল ছিল ওরা আমাকে ডাক দিছে। ডাক দিয়েই বলে কি আছে দে। আমি সাথে সাথে মোবাইল দিয়ে দিছি। তারপরেও ওরা আমাকে ছুরি মারছে। আমার পেটে পিঠে চাকু মারছে। তখন আমি চিৎকার দিলে আশপাশে থেকে লোকজন এসে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আমার পায়েও সমস্যা, ১৮ দিন ধরে ব্যথায় আমি একটুও ঘুমাতে পারি না।

ছেলেকে বাঁচাতে রবিউলের কৃষক বাবা ধার-দেনা করে প্রায় নিঃস্ব এখন। তাদের দাবি এ ধরনের ঘটনা যেন কোনো পরিবারের সাথে না হয়। এই পরিবারের মত এমন ঘটনার ভুক্তভোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই।

ভুক্তভোগী রবিউল ইসলামের বাবা মো. আশরাফুল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমাদের টোটাল বিল আসছিল ৭ লাখ টাকা। পেমেন্ট দিয়েছি প্রায় চার লাখ টাকা। আমি কৃষি কাজ করি ও মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করি। হাসপাতালের এই ৪ লাখ টাকা মানুষের কাছে তো ধার ও সুদের উপর এনে দিয়েছি। আর্থিকভাবে মনে হয় দশ বছরেরও আমি এই জিনিসটা পূরণ করতে পারব না। আমি সুদে যে টাকাটা নিছি প্রতিমাসে এই সুদ টানতেই আমার কষ্ট হয়ে যাবে এখন।

ভুক্তভোগী রবিউলের মা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা যদি আর্থিক দিকে কোনো সাহায্য সহযোগিতা না পাই, তাও কোনো দুঃখ নাই। আমার ছেলেটা ১৮ দিন ধরে হসপিটালের বিছানায়। আমার ছেলের মত এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে এটাই আমার দাবি।

তথ্য বলছে, সাভারে কিশোর গ্যাংয়ের মূল দৌরাত্ম্য পৌরসভাজুড়ে। পিনিক রাব্বি, হৃদয় গ্রুপ, ভাই-ব্রাদার গ্রুপ বেশ সক্রিয়। নিজেদের দ্বন্দ্ব থেকে ভাগ হয়ে তৈরি হচ্ছে আরো গ্রুপ। গত দুই মাসে কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাই ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অন্তত ৪ খুনের ঘটনা ঘটেছে। খরচ মেটাতে ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত এই কিশোর গ্যাং।

সাভার পৌর সভার বাসিন্দা রিফত বার্তা২৪.কম-কে বলেন, অপরাধীরা বেশিরভাগই মাদক সেবন করেন। তার জন্য তো টাকা দরকার তাদের। তারা কোনো কাজকর্ম করে না। আর এই টাকার জন্যই তারা ছিনতাই করে। কাছে কিছু না পেলে বা দিতে না চাইলেই তাকে আঘাত করে। কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে এমন। মারাও গেছেন কয়েকজন। সরকারের কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ, এই মাদক ও কিশোর গ্যাং নিয়ে যেন কঠোর একটা ব্যবস্থা নেয়। এদের যেন শাস্তি হয়, এগুলো যেন একবারে নির্মূল করে দেয়।

গত মার্চ মাসে র‍্যাব ও পুলিশের আলাদা অভিযানে হৃদয় গ্রুপের প্রধান গিয়ার হৃদয়সহ ৮ জন ও ভাই-ব্রাদার গ্রুপের ৪ জনসহ মোট ১২ জন গ্রেফতার করা হয়।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.শাহ জামান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, কখনো যদি কোনো লোক এরকম ছিনতাইয়ের শিকার হন বা ডাকাতির শিকার হন, তাহলে তাৎক্ষণিক আমাদের কাছে রিপোর্ট করবেন। যাতে করে আমরা এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারি। যদি এরকম কোনো ঘটনায় আপনারা রিপোর্ট না করেন, ওই অপরাধীদেরকে আমরা যদি গ্রেফতার করতে না পারি, সেক্ষেত্রে কন্টিনিউয়াস একটার পর একটা ঘটনা ঘটিয়ে যাবে। সুতরাং যে কোনো ঘটনাই ঘটুক, অবশ্যই পুলিশকে রিপোর্ট করতে হবে। পুলিশ যাতে সংশ্লিষ্ট অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে পারে।

;