‘পূজামণ্ডপে আগতদের ইভটিজিং ও গুজব রোধে কঠোর ব্যবস্থা’
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে পূজামণ্ডপে আগত মহিলাদের ইভটিজিং, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ও সকল ধরনের নাশকতা রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজামণ্ডপে র্যাব কর্তৃক গৃহীত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনে আমরা সবাই কাজ করে যাচ্ছি। এখানে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ যেন তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শান্তিতে নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে সেজন্য আমরা সর্বদা সজাগ রয়েছি। ২২ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তর দুর্গাপূজা। আগামী ২৬ অক্টোবর শুভ বিজয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গাপূজা।
তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক মহামারির কারণে প্রতি বছরের ন্যায় এবছর সেরকম জাঁকজমক আয়োজন হচ্ছে না দুর্গাপূজার। আপনারা জানেন সারাবিশ্ব মহামারির মধ্য দিয়ে পাড় হচ্ছে। আমরা লক্ষ্য করেছি বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান অন্যান্য বছর আমরা উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করে থাকি তবে এ বছর ধর্মীয় সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে পালিত হচ্ছে, সকলের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য। আমরা আশা করছি হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ও তাদের পূজার সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পালন করবে। আমি বিশ্বাস করি পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ যারা আছেন সকালে এ বিষয়ে সচেষ্ট আছেন। বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন যাতে স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে অনুসরণ করা যায়।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এবারের পূজাকে কেন্দ্র করে আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্যান্য বছরের মতো এবারও আমরা প্রস্তুত আছি। সারা দেশব্যাপী পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য প্রস্তুত থাকবে। অগ্রিম পদক্ষেপ হিসেবে আমরা গত ১৫ তারিখ থেকে স্ট্যাকিং ফোর্স আমরা বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন করেছি। আজ থেকে পুরো মাত্রায় ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত আমাদের ফোর্স মোতায়েন থাকবে। র্যাবের বোম ডিসপোজাল ইউনিট, ডগ স্কোয়াড ও সুইপিংয়ের জন্য অন্যান্য ইন্সট্রুমেন্ট সহ সকলে ফোর্স একটিভ থাকবে। সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। সকল ব্যাটালিয়ন সমূহ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলে পূজা কমিটি, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্য ফায়ার ব্রিগেড সহ সকলের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে সমন্বয় করেছি। যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব হয় সেজন্য আগে থেকে আমরা প্রস্তুত আছি। আশা করি এমন কোনো পরিস্থিতি ঘটবে না।
আপনাদের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে কোন বিষয়টিকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছি। তথ্যের ভিত্তিতে এখনও এমন কোনো সম্ভাবনাও লক্ষ্য করছি না। আমরা যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সতর্ক আছি। এবং সকল দিকে আমাদের দৃষ্টি আছে।
দেশের কয়েকটি জায়গায় পূজামণ্ডপে হামলা হয়েছে এ বিষয়ে কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন গতকাল ফরিদপুরে প্রতিমা ভাঙার ঘটনায় জড়িদের গ্রেফতার করেছি। হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইদের কে বলবো যে কোনো বিষয়ে আশঙ্কা করলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরকে তথ্য দিন আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের দেশে যে উদাহরণ আমরা সৃষ্টি করেছি এটি অক্ষুন্ন রাখতে আমরা তৎপর আছি।
উল্লেখ্য, গত ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দূর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়েই দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। পূজামণ্ডপে ঢাকের বোল, কাঁসর ঘণ্টা ও শাঁখের ধ্বনিতে মুখর হয়ে উঠবে । তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পূজায় অনেকটা সীমাবদ্ধ থাকছে মন্ডপগুলো। পরিস্থিতি বিবেচনায় সন্ধ্যায় আরতির পর মণ্ডপে দর্শনাথী প্রবেশ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূজা উদযাপন পরিষদ।