বিনা বেতনে শিক্ষকতায় অবসরে প্রতিবন্ধী হাফিজার



তোফায়েল হোসেন জাকির, স্টাফ করেপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা
প্রতিবন্ধী হাফিজার রহমান

প্রতিবন্ধী হাফিজার রহমান

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতিবন্ধী হাফিজার রহমান। গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুর উপজেলার দুর্গাপুর কাদেরিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসায় ক্বারী শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ ৩৩ বছর শিক্ষকতা করেছেন। এতো বছর পরও প্রতিষ্ঠানটি হয়নি এমপিওভুক্ত। ফলে বিধি মোতাবেক বিনা বেতনে চাকরি থেকে অবসরে যেতে হয়েছে প্রতিবন্ধী হাফিজার রহমানকে।

সোমবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে নিজ বাড়ির উঠানে এসব তথ্য জানালেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হাফিজার রহমান। এসময় চোখে-মুখে দেখা গেছে চরম হতাশার গ্লানি। এমন কি অশ্রুজলও ঝরছিলো তার।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হাফিজার রহমানের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত মিয়াজান আকন্দের ছেলে এবং স্থানীয় দুর্গাপুর কাদেরিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসায় ক্বারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

জানা যায়, সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন নিয়েই পৃথিবীর আলোর মুখ দেখেন হাফিজার রহমান। এরপর বয়স যখন ৩ বছর, তখন টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়। এ রোগের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থেকে একটি পা বিকলাঙ্গ হয় তার। সেই থেকে লাঠিতে ভর করে চলতে হয় তাকে। তবে প্রতিবন্ধী হলেও মনোবল হারাননি কখনো। দৃঢ় মনোবল নিয়ে ১৯৭২ সালে গাইবান্ধা মর্ডান হাইস্কুল থেকে দ্বিতীয় বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হয়। পরিবারের অভাব অনটনের কারণে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করা সম্ভব হয়নি তার। তবে এসএসসি সার্টিফিকেট কাজে লাগিয়ে প্রতিষ্ঠিত হবেন, এমন স্বপ্নে ১৯৭৬ সনে দুর্গাপুর কাদেরিয়া ফুরকানীয়া মাদরাসায় শুরু করেন শিক্ষকতা পেশা। ধারাবাহিকতায় ১৯৮৪ সনে এ প্রতিষ্ঠানটি ফুরকানীয়া থেকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এসময় ক্বারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন হাফিজার রহমান। এরই মধ্যে বিয়ে করেন ফেরেজা বেগম নামের আরেক প্রতিবন্ধীকে। দাম্পত্য জীবনে তাদের রয়েছে ২ ছেলে ও ২ মেয়ে সন্তান।

নিজ বাড়ির উঠানে প্রতিবন্ধী হাফিজার রহমান

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বেতনবিহীন শিক্ষকতা জীবনে হাফিজার রহমানের সংসারে শুরু হয় টানাপোড়েন। নিজের কিছু জমির ফসল উৎপাদনের আয় দিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কোনোমতে দিনাতিপাত করছেন তিনি। তবুও বেতনবিহীন শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে দেয়নি কখনো। মাদরাসাটি এমপিওভুক্ত হলে বেতন-ভাতা পাবেন, এমন স্বপ্নে পাঠদান দিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীদের। এভাবে সুনামের সহিত শিক্ষকতায় ৩৩ বছর পার করলেও তার কপালে জোটেনি সরকারের বেতন-ভাতা। কারণ, প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত না হতেই চাকরি বিধি মোতাবেক ২০০৯ সালে বিনা বেতনে অবসর গ্রহণ করতে হয় হাফিজার রহমানকে।

বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষকের নানান রোগ বাসা বেধেছে শরীরে। এখন আর আগের মতো লাঠিতে ভর করে তেমন চলতে পারেন না । এছাড়া ভালো কিছু খেয়েপড়ে বেঁচে থাকবেন, এমন সামর্থ্যও নেই তার। স্ত্রীসহ দুজনের বয়স্ক ভাতাসহ মাত্র ২০ শতক জমির ফসল উৎপাদনই তার জীবন-জীবিকা নির্বাহের আয়ের উৎস। এ দিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে তার ৪ সদস্যের পরিবারকে। শেষ বয়সে জীবনযুদ্ধে পরাজীত হয়ে হাফিজার রহমান চিকিৎসার অভাবে গৃহবন্দী অবস্থায় দিন-রাত কাটাচ্ছে বিছানায় শুয়ে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হাফিজার রহমান বার্তা২৪.কম-কে জানান, বিনা বেতনে ৩৩ বছর চাকরি জীবনে সর্বশান্ত হয়েছি। এখন জীবনে নেমে এসেছে অন্ধকার। তুহিন আল জাবির নামে আমার মেজো ছেলে মাস্টার্সে অধ্যায়নরত। এই ছেলেটির জন্য সরকার যদি চাকরির ব্যবস্থা করতেন, তাহলে হয়তো মরার আগে কিছুটা সুখ পেতাম।

নামপ্রকাশ না করা শর্তে অন্য এক স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার সভাপতি বলেন, শুধু হাফিজার রহমানই নয়, তার মতো শত শত শিক্ষক বিনা বেতনে অবসর নেওয়াসহ চাকরি ছেড়ে কর্মের সন্ধানে চলে গেছেন অন্যত্র।

দুর্গাপুর কাদেরিয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মোসলেম আলী বার্তা২৪.কম-কে জানান, হাফিজার রহমান প্রতিবন্ধী হলেও পাঠদানে কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু বিধি অনুযায়ী অবসরে গেছেন তিনি। তবে এখন পর্যন্ত মাদরাসাটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় অন্যান্য শিক্ষকরাও চরম হতাশায় ভুগছে।

সাদুল্লাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সৈয়দ মনিরুল হাসান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এ উপজেলায় স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা সংখ্যা ৭১টি। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। তবে সবগুলো মাদরাসা নন-এমপিও হিসেবে রয়েছে।

   

সার্টিফিকেট ছাড়াই দাঁতের চিকিৎসক আবু বক্কর



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ি ইউনিয়নের কাটখইর বাজারে বেশ কয়েক বছর ধরে দাঁতের ডাক্তার সেজে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন মো. আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি হাঁসাইগাড়ি ইউনিয়নের হাঁসাইগাড়ি গ্রামের ছামছুর রহমানের ছেলে। 

প্রায় সাত বছর ধরে উপজেলার কাটখইর বাজারে 'সেবা ডেন্টাল কেয়ার’ প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন তিনি। অথচ নেই কোনো চিকিৎসা সনদ, এমনকি নেই মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল, বিএমডিসির নিবন্ধন অথচ নামের আগে ডা. পদবী ব্যবহার করেন তিনি। প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামের মানুষরা দোকানটিতে আসছেন দাঁতের চিকিৎসা নিতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দাঁতের ফিলিং, স্কেলিং, লাইট কিউর, ফিলিং ক্যাপ, দাঁত ওঠানো, দাঁত বাঁধানোর সব কাজই করা হচ্ছে তার প্রতিষ্ঠানে। এমনকি নামের আগে ডা. লেখা সিল ব্যবহার করে সাদা প্যাডে প্রেসক্রিপশন লিখেও দিচ্ছেন তিনি। 

বিভিন্ন কাজে রোগীদের কাছ থেকে পাঁচশত টাকা থেকে  শুরু করে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে সে। এসএসসি পাশ বলে দাবি করলেও তবে সেটির সনদপত্রও দেখাতে পারেননি তিনি।

দাঁতের সব রকম চিকিৎসা চলে ভূয়া দাঁতের ডাক্তার আবু বক্কর সিদ্দিক এর গড়ে তোলা এই প্রতিষ্ঠানে। আবার দেখা যায় কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই দাঁতের নানারকম ঔষধ ব্যবস্থাপত্রে লিখে দিচ্ছেন তিনি। দিচ্ছেন অ্যান্টিবায়োটিক মেডিসিন আবার কখনো করছেন ঝুকিপূর্ণ দাঁতের সার্জারি, এতে রোগীদের প্রাণ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যক্তি বলেন, ‘তার বড় ভাইয়ের সাথে তাকে প্রায়ই দেখতাম। হঠাৎ করে কয়েক বছর আগে বিদেশ চলে যান তার বড় ভাই। এরপর সে প্রতিষ্ঠান খুলে কোনো সার্টিফিকেট ছাড়াই। নামের আগে ডা. বসিয়ে দাঁতের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন সাধারণ মানুষদের।

এলাকার আরেকজন বাসিন্দা বলেন, প্রতি বৃহস্পতিবার ও রোববার হাটবারে সকাল থেকে রাত অব্ধি নানা বয়সের মানুষ তার নিকট ভীড় করে দাঁতের চিকিৎসকা নেয়ার জন্য। শুনেছি হঠাৎ করেই সে নামের আগে ডা. পদবী ব্যবহার করে নিজেকে জাহির করেন। 

তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে ডাক্তার বনে যাওয়া দেখে আমরাও অবাক হয়েছি তবে জানতাম না তার কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই, আমাদের এলাকাবাসীর দাবি তার বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষকে তার হাত থেকে রক্ষা করা।

ভুয়া দাঁতের ডাক্তার, আবু বক্কর সিদ্দিক নিজের দোষ স্বীকার করে বলেন, ‘আমি কোনো দাঁতের চিকিৎসক না, আমার কোনো সার্টিফিকেট নেই।নওগাঁ সিভিল সার্জন অফিস থেকেও নিবন্ধন নেই আমার তবে আমরাই একটা সংগঠন বানাতে চেয়েছিলাম। বড় ভাই এর কাছ থেকে শিখেছে, তিনি বিদেশ চলে যাওয়ার পড়ে আমি প্রতিষ্ঠান দিয়েছি ,আমি কোনো দাঁতের ডাক্তার নই।’ 

এ বিষয়ে হাঁসাইগাড়ি ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান  জানান, সে প্রায় অনেক বছর ধরে ডাক্তারি করে। তার সার্টিফিকেট (আরএমপি) আছে মনে হয়, চিকিৎসাও ভালোই।

সার্টিফিকেট ছাড়া কিভাবে ডাক্তার হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সাটিফিকেট লাগবে ঠিক আছে তবে তার চিকিৎসা ভালো। ইউএনও মহোদয় আমাকে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে আমি তার সার্টিফিকেটটা দেখবো এখন। ডেন্টালে আমি দেখি অনেক মানুষ তার কাছে ভিড় করে তবে ভুল চিকিৎসার জন্য যদি ক্ষতি হয় এটাও বিষয়।  ইউএনও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।’ 

এ বিষয়ে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুনির আলী আনন্দ মুঠোফোনে বলেন, এমবিবিএস ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবে না। গ্রাম্য চিকিৎসক হয়ে থাকলে গ্রাম্য চিকিৎসক লিখতে পারে সেটা আইনে বলায় আছে। ভুয়া ডাক্তার হলে আমরা তো কিছু করতে পারবো না, তবে কোর্টে পাঠাতে পারবো। সেটা কোর্টের ব্যাপার। সে যদি ভুয়া হয় ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করতে হবে।

;

ফেনীতে চলতি বছরে সর্বোচ্চ ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীতে চলতি বছরে সর্বোচ্চ ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলায় ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়ছেন জেলা আবহাওয়া অফিসের উচ্চমান পর্যবেক্ষক মুজিবুর রহমান।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলায় ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সারাদিন আকাশ মেঘলা ছিল। আজ শুক্রবার (২৯ মার্চ) জেলায় অস্থায়ী বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে গত কয়েক দিনের গরমের পর বৃষ্টিতে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি দেখা গেছে। তবে বিভিন্ন উপজেলায় বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতাও দেখা দিয়েছে। কিছু সড়কে ​​​​​​​অবৈধ মাটি পরিবহনের সময় ট্রাক থেকে মাটি পড়ে তা বৃষ্টির পানিতে কাদায় পরিণত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন স্থানীয় লোকজন। এছাড়াও খেটে-খাওয়া মানুষজন ও বিভিন্ন শপিং মল ও বিপনী বিতানের ব্যবসায়ীরা পড়েছেন দুর্ভোগে।

ফেনী শহীদ মার্কেটের বস্ত্র ব্যবসায়ী ফাহিম রিমু বলেন, ঈদ পর্যন্ত এখন প্রতিটি দিনই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখন বেচাবিক্রির সেরা সময়। বৃষ্টিতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। দোকানে ক্রেতাও খুব একটা নেই। মানুষজন বৃষ্টিতে সচারাচর ঘর থেকে বের হতে চায়না।

আবুল কাশেম নামে এক রিকশাচালক বলেন, রমজানে সারাদিন রোজা রেখে এমন আবহাওয়া স্বস্তির। তবে বৃষ্টির জন্য বাইরে রিকশা চালিয়ে কষ্ট হয়েছে। অন্যান্য দিনের মতো রাস্তায় তেমন যাত্রী ছিল না।

অন্যদিকে বৃষ্টির কারনে ফসলের বিভিন্ন ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা। তবে কৃষি অফিস দিচ্ছে স্বস্তির খবর।

ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, জমিতে পানি না জমলে বৃষ্টিতে ফসলের খুব বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। বরং আউশ আবাদের জন্য এই সময়ের বৃষ্টি কৃষকের উপকার হবে। তবে সূর্যমুখী ও ভুট্টার গাছ নুয়ে পড়তে পারে। এছাড়া নিচু জমির পানি না নামলে ফলন কম হবে।

;

কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিন ব্যবহারে কমেছে উৎপাদন খরচ 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ায় এ বছর গমের ফলন ভাল হয়েছে। কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিনে গম কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। হার্ভেস্টার মেশিন ব্যবহারে উৎপাদন খরচও কমেছে। ফলে কৃষকের মুখে ফুটেছে সোনালি হাসি। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, শ্রমিক সংকট সহ নানা কারণে একসময় গম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন কুষ্টিয়ার কৃষকরা। 

সরকারি প্রণোদনায় কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিন দিয়ে অর্ধেক খরচে কম সময়ে গম কাটা ও মাড়াই করতে পারায় গম চাষ বেড়েছে কুষ্টিয়ায়। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, এবছর জেলায় ১২ হাজার ৭১৬ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সীমান্তবর্তী দৌলতপুর উপজেলায় চাষ হয়েছে ৬ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমিতে। 

মেশিনে প্রতি বিঘা জমির গম কাটা মাড়াইয়ে কৃষকের খরচ হচ্ছে মাত্র ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা; যা শ্রমিক দিয়ে গম কাটা ও মাড়াইয়ের মজুরির অর্ধেকেরও কম। ফলে কৃষকদের গম চাষে আগ্রহ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর গমের ফলন ভাল হয়েছে।

প্রতি বিঘা জমিতে গমের ফলন হচ্ছে ১৮ মণ থেকে ২০ মণ হারে। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কৃষকের আয় হচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি। এখন গম কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। 

দৌলতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের চুয়ামল্লিকপাড়া গ্রামের কৃষক রানা হোসেন জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর গমের ফলন ভাল হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে গমের ফলন হচ্ছে গড়ে ১৮ মণ থেকে ২০ মণ হারে। 

কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিনে গম কাটা ও মাড়াইয়ে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমেছে। ফলে কৃষকদের গম চাষে আগ্রহ বেড়েছে। 

মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের খয়েপুর এলাকার কৃষক তিন কৃষক (পার্টনার প্রোগ্রাম) এর আওতায় দুই একর জমিতে বারি-৩০ গম আবাদ করেছেন। এতে করে গম আবাদে তুলনামূলকভাবে খরচ কম হওয়ায় এবং লাভ বেশি হওয়ায় আগামীতে আরও বেশি করে গমের আবাদ করবেন। 

মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসের অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মতিয়র রহমান জানান, ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল এ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ এ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার প্রোগ্রাম) এর আওতায় আমাদের উপজেলার আমলা ব্লকে আব্দুল হালিম, আব্দুস সাত্তার ও মোস্তফা কামাল তারা যৌথভাবে দুই একর জমিতে গমের আবাদ করেন। এতে আমরা সার বীজ প্রণোদনা করেছি। পাশাপাশি কৃষি অফিসের মাধ্যমে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে গম কাটা ও মাড়াই যন্ত্র প্রদান করেছি।’  

এদিকে সরকারি প্রণোদনায় পাওয়া কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন ১৫ বিঘা থেকে ২০ বিঘা জমির গম কাটা ও মাড়াই করছেন মেশিন মালিকরা। এতে তাদের উপার্জন বেড়েছে।

উন্নতজাত সরবরাহ, প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী ও প্রণোদনা প্রদানসহ সবধরনের সুবিধা দেওয়ায় কৃষকরা গম চাষে আগ্রহী হয়েছেন এবং এ বছর গমের ফলন ভাল হয়েছে বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধিতে দেশ হবে সমৃদ্ধ। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন কৃষকদের সবধরনের সুযোগ সুবিধার।

;

পায়ুপথে ৭০ লাখ টাকার সোনা, 'পাচারকারী' আটক



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় মনোরউদ্দিন নামে এক যুবককে ৭০ লাখ টাকা মুল্যের ৬টি স্বর্ণের বারসহ আটক করেছে বিজিবি সদস্যরা। আটক পাচারকারী মনোরউদ্দিন বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামের কদর আলীর ছেলে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান ২১ ব্যাটালিয়নের বিজিবি।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাত ১১ টার দিকে সীমান্তের পুটখালি মসজিদবাড়ী বিজিবি চেকপোষ্টের সামনে থেকে তাকে আটক করে বিজিবি। পরে তার স্বীকারোক্তিতে শরীরের পায়ু পথে লুকিয়ে স্বর্ণপাচারের কথা স্বীকার করলে এ স্বর্ণের বার উদ্ধার হয়।

বিজিবি জানান, গোঁপন একটি তথ্যের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন পাচারকারীরা স্বর্ণের একটি চালান ভারতে পাচার করবে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করে। এক পর্যায়ে রাতে সন্দেহভাজন ব্যক্তি ইজিবাইক চালিয়ে সীমান্তের দিকে প্রবেশের সময় তাকে ধরা হয়। এ সময় তাকে আটক করে বেনাপোল বাজারে রজনী ক্লিনিকে শরীর স্ক্যানিং করে পায়ুপথে ছয় পিস সোনার বারের অস্তিত্ব পাওয়া যায় এবং তা উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ৭০০ গ্রাম। এবং যার মূল্য আনুমানিক ৭০ লাখ টাকা।

খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার সোনাসহ এক পাচারকারী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উদ্ধার সোনার চালানটি যশোর ট্রেজারিতে এবং আসামিকে বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

;