হাসপাতালে যেতে নৌকার জন্য গর্ভবতীর অপেক্ষা, ঘাটেই মৃত্যু
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের পদ্মা নদীর ঘাটে নৌকার অপেক্ষায় থাকা জাকিয়া বেগম কুলসুম (৩৬) নামে এক গর্ভবতী নারীর মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (১ নভেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে পদ্মা নদীর কদমতলা ঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত কুলসুম পাকা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কদমতলা গ্রামের সেরাজুল ইসলামের স্ত্রী।
পাকা ইউনিয়নের স্বাস্থ্য সহকারী আবুল কালাম আজাদ জানান, সাত মাসের গর্ভবতী ছিলেন কুলসুম। বেশ কয়েকদিন থেকে অসুস্থ ছিলেন তিনি। গতকাল শনিবার থেকে তার অসুস্থতার মাত্রা আরও বেড়ে যায়। অবশেষে রোববার দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন কুলসুমসহ তার পরিবারের সদস্যরা। কদমতলা পদ্মা নদীর ঘাটে নৌকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারা। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে কদমতলা ঘাটে মারা যান তিনি।
তিনি আরও জানান, পদ্মা নদীতে চলাচলের জন্য জরুরি সেবায় চালু করা হয় নৌ-অ্যাম্বুলেন্স। কিন্তু অশিক্ষিত হতদরিদ্র পরিবার হওয়ায় এবং তাদের বাড়িতে স্বামীসহ পুরুষ মানুষ না থাকায় নৌ-অ্যাম্বুলেন্সের সার্ভিস নিতে পারেননি তারা। তবে চরাঞ্চলবাসীর জন্য নৌ-অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস পেতে হটলাইন সার্ভিস চালুর দাবি জানান তিনি।
এদিকে সাবেক ইউপি সদস্য হোসেন আলী গর্ভবতী কুলসুমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কুলসুমের স্বামী একজন রাজমিস্ত্রি। বর্তমানে ঢাকায় কাজ করছেন তিনি। তাদের সংসারে ১২ বছর ও ৫ বছরের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। এছাড়া কুলসুমের পরস্পর তিনটি সন্তান জন্মের আগেই মারা যায়। সর্বশেষ আরেকটি সন্তান পৃথিবীতে আগমনের আগে গর্ভবতীর মৃত্যু হয়।
অপরদিকে ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) দুরুল হোদার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে ইউপি সচিব আকবর হোসেন জানান, গর্ভবতী নারী কুলসুমের মৃত্যুর বিষয়টি অবগত নন তিনি। কিন্তু জরুরি সেবা পেতে নৌ-অ্যাম্বুলেন্সের জন্য কেউ তাকে অবহিত করেননি। চরাঞ্চলের মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে নৌ-অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা হয়েছে।