পাহাড়ে কমেছে স্থানীয় পণ্যের চাহিদা
বছরের পর বছর ধরে পূর্বের ঐতিহ্য ধরে রাখতে বাঁশ এর তৈরি হস্তশিল্প, তাঁতের তৈরি থামি, চাদর ও বাদ্যযন্ত্র ইত্যাদি তৈরি আসছে বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়। নিজেদের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাহিরে বিক্রয় করে উপার্জন করতো অনেকে।
সম্প্রতি করোনাভাইরাসের প্রকোপে অস্বচ্ছল হয়ে গেছে দেশের অর্থনীতি। এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে পাহাড়ের ক্ষুদ্র শিল্প। পার্বত্য অঞ্চলের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে আছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জাতিগোষ্ঠীরা। বাঁশ-বেত দিয়ে বিভিন্ন হস্তশিল্প তৈরি করতো যারা তাদের পণ্যগুলোরও এখন ক্রেতা কম।
বান্দরবানের কানাপাড়া এলাকার বসবাসরত লবক্যা তঞ্চঙ্গা তৈরি করতো বাঁশের তৈরি বাদ্যযন্ত্র। তিনি বলেন সময়ের সাথে একেবারে হারিয়ে যাওয়ার পথে এসব বাদ্যযন্ত্র। নতুনরা কেও এসব কাজ শিখতে আগ্রহী নয়। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে পারে এসব শিল্প।
তেমনি বান্দরবানের জাদিপাড়ার হংফরি মার্মা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে হস্তশিল্প তৈরি করছি। এখন বিক্রি কমে গেছে। একসময় মোটামুটি ক্রেতা আসতো। এখন হস্তশিল্প সংগ্রহ করে খুব মানুষ।
পাশাপাশি স্থানীয় বার্মিজ মার্কেট গুলোর দোকানিদের আয়ও কমেছে। স্থানীয় পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ার ফলে ক্রেতা কমে গেছে। পাহাড়ি পণ্যের বিপরীতে আধুনিক সব পণ্যের বাজার দখলে নূন্যতম চাহিদাও নেই পাহাড়ি পণ্যের।
বান্দরবান বার্মিজ মার্কেট এর মং চ্ সিং জানায়, করোনার আগে তাদের ব্যবসা ভালো চলতো। বিভিন্ন জিনিস পত্র বিক্রি হতো সহজে। করোনা আসার পর একেবারে থমকে গেছে ব্যবসা। এদিকে দোকান ভাড়াও রীতিমতো পরিশোধ করা লাগে। আবার ব্যবসায় লোকসান ও হচ্ছে। তিনি আশা করেন শীত মৌসুমে পর্যটক এর সংখ্যা বাড়লে দোকানের আয়ও ভালো হবে।
মূলত দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে পর্যটনগুলো বন্ধ থাকায় পর্যটক শূন্য পাহাড়। তাই স্থানীয় পণ্যের চাহিদা একেবারে কমে গেছে। পরিস্থিতি পুনরায় আগের মতো হলে পাহাড়ের স্থানীয় পণ্যের চাহিদা বাড়বে।
পর্যটক দের মূল আকর্ষণ হলো পাহাড়ে হাতে তৈরি শৌখিন জিনিসপত্র। পাহাড়ি পোশাক ও ঐতিহ্য বহন করে এমন জিনিসপত্র। শৌখিন পর্যটকেরা পাহাড় ও শহর ঘুরে তাদের পছন্দের জিনিস সংগ্রহ করে।
ধীরে ধীরে পর্যটকের বিপুল আগমন শুরু হয়েছে। স্থানীয় মার্কেটগুলোতে ঘুরে দেখা গেল, পর্যটকদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। যেহেতু, শীতের মৌসুম শীতে ব্যবহারযোগ্য চাদরের চাহিদাও কম নয়। পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পেলে পাহাড়ি পণ্যের চাহিদা বাড়বে।