দুই কার্য দিবসে ধর্ষণ মামলার রায়, আসামি নির্দোষ
দুই কার্য দিবসে ধর্ষণ মামলার রায় দিয়েছেন রংপুরের একটি আদালত। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় রায়ে আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) বিকেল পৌনে পাঁচটায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোস্তফা পাভেল রায়হান এ রায় দেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার বিশ্বনাথ গ্রামের আব্দুল হালিমের ছেলে কাপড় ব্যবসায়ী মোস্তাফিজার রহমান (৩৬)। সে তার ফুপাতো বোনকে শারীরিক সম্পর্কের জন্য প্রস্তাব দেন। কিন্তু এতে ওই নারী রাজি হননি। এ নিয়ে তাকে প্রায়ই উত্যক্ত করতেন মোস্তাফিজার। এ অবস্থায় ২০১৯ সালের ৮ মে ওই নারী অন্যত্র বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পর মোস্তাফিজার তাদের সম্পর্কের কথা স্বামীকে জানান। এতে অনৈতিক সম্পর্কের জের ধরে তাদের সংসারের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। এই সুযোগে মোস্তাফিজার তাকে আবারো কু-প্রস্তাব দেয় এবং দু'জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এদিকে, দু'জনের সম্পর্কের বিষয়টি জানার পর মোস্তাফিজারের স্ত্রী সংসার করবেন না বলে স্বামীর বাড়ি থেকে চলে যান। এরপর গত বছরের ২৮ অক্টোবর মোস্তাফিজার তার প্রেমিকাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে ওঠেন। সেই দিনসহ পরবর্তী ৩ দিন তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। এদিকে আশেপাশের লোকজন বিষয়টি জেনে গেলে মোস্তাফিজারকে বিয়ের জন্য চাপ দেন।
কিন্তু মোস্তাফিজার এতে রাজি না হওয়ায় চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি কাউনিয়া থানায় এজাহার দায়ের করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অজুহাতে তা গ্রহণ করেননি। পরে ৮ জানুয়ারি মোস্তাফিজারকে আসামি করে আদালতে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন তার ফুফাতো বোন।
পরে মামলাটি তদন্তের জন্য রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন আদালত। মামলায় চার্জ গঠনের পর গত সোমবার (২৩ নভেম্বর) পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্য-গ্রহণ ও মঙ্গলবার যুক্তিতর্ক শেষে এর রায় ঘোষণা করেন বিচারক। রায়ে আসামি মোস্তাফিজার রহমানকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
এদিকে দুই কার্য দিবসে রায় ঘোষণা করায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্র-পক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মাকজিয়া হাসান ও আসামি পক্ষের আইনজীবী রইচ উদ্দিন বাদশা।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মাকজিয়া হাসান বলেন, যথাযথভাবে সাক্ষী প্রমাণ উপস্থিত করতে না পারায় বিচারক আসামিকে খালাস দিয়েছেন। তবে যেখানে বছরের পর বছর এ ধরনের মামলা ঝুলে থাকে সেখানে দুই কার্য দিবসে রায় দেয়ায় আমরা সন্তুষ্ট।
অ্যাডভোকেট রইচ উদ্দিন বাদশা বলেন, ধর্ষণের ঘটনাটি সাজানো ছিল। ধর্ষণ প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারক আসামিকে খালাস দিয়েছেন। আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। দুই কার্য দিবসে রায় এবং আসামিকে খালাস দেয়ায় আমরা খুশি।