ম্রো জনগোষ্ঠী উৎখাত বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন
পার্বত্য চট্টগ্রামে বন ভূমি ধ্বংস, জীব বৈচিত্র রক্ষা এবং ম্রো জনগোষ্ঠী উৎখাত বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) সকালে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে বন উজাড় ও চিম্বুক পাহাড়ের ম্রো পাড়া উচ্ছেদ করে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানববন্ধনের আয়োজন করেন সচেতন প্রকৃতি ও পাহাড়প্রেমী জনগণ।
ম্রোদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে হোটেল নির্মাণের পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে বক্তারা বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী মহল স্থানীয় জনগোষ্ঠীর ভূমি দখল করে গড়ে তুলছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি এর মাত্রা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ, প্রকৃতির কথা বিবেচনা না করে এবং স্থানীয় ম্রো জনগোষ্ঠীর পুর্নবাসনের ব্যবস্থা না করেই চিম্বুক পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের আত্মঘাতি যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের তিন পার্বত্য জেলা। এই বিশাল অঞ্চল বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বর্ণাঢ্য সংস্কৃতি ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যময়তায় ভরপুর। পাহাড়, লেক, নদী, ঝর্ণা-ঝিরি, বনভূমি ও বিপন্ন প্রায় প্রাণীর শেষ আশ্রয়স্থল। তবে পরিতাপের বিষয় পরিবেশ ও প্রকৃতি বিনাশের নষ্ট প্রতিযোগিতায় আমরা হারাতে বসেছি অমূল্য বনভূমি ও জীববৈচিত্র। তা ধ্বংসের ভয়াবহ রূপ সম্প্রতি আমরা দেখতে পেয়েছি। অসময়ে বন্যা, পাহাড় ধস, ঝিরিগুলো পানি শুন্য হয়ে পরছে অবাদে বনভূমি ধ্বংসের ফলে। এই অমূল্য সম্পদ রক্ষা করতে না পারলে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমরা অপরাধী হয়ে থাকবো। তাই সকলে মিলে পরিবেশ ও বনভূমি ধ্বংস এবং উন্নয়নের নাম করে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহলের সকল ধরনের অপচেষ্টা রুখে দিতে হবে।
তারা আরো বলেন, ঐতিহাসিক ভাবে ম্রোদের একটা বিশেষ অবদান আছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম অশান্তকালীন সময়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অপতৎপরতা প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে ম্রো’রাও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে অংশগ্রহণ করেন। যার ফলে সেই সময় পাহাড়ে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর সাথে হানা হানিতে প্রচুর ম্রো জীবন দিয়েছেন। এই জন্য পাহাড়ে আনসার ভিডিপি এর অধীনে ম্রোদের নিয়োগ দেয়া হয়। এই অসহায় মানুষগুলোর বসত ও কৃষি ভূমি দখল করে তাদের জীবনকে অনিশ্চয়তার দিকে আমরা ঠেলে দিতে পারিনা।