পাংশাতে সরকারি জায়গা দখলের অভিযোগ উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে
রাজবাড়ীর পাংশাতে সরকারি জায়গা দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: ফরিদ হাসান ওদুদের বিরুদ্ধে। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। এটাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি উপজেলা চেয়ারম্যানের।
সোমবার (৭ ডিসেম্বর) বিকালে সরকারি জায়গা দখলের চেষ্টার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পাংশা মাছ বাজার সংলগ্ন উপজেলা পরিষদ তাদের নিজস্ব জায়গায় টিনশেডের তৈরি ৩৫টি দোকান ঘর নির্মাণ করেন। কিন্তু টিনশেডের উপরের ছাউনি এখনো দেওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন ঐভাবেই পড়ে আছে।
কিন্তু হঠাৎ করে শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: ফরিদ হোসেন ওদুদ জায়গাটি দখলে নেওয়ার জন্য তার নিজস্ব দোকানের সবজি বিক্রেতাদেরকে তাড়াহুড়া করে উপজেলা পরিষদের নির্মিত টিনশেড ঘরে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, পাংশা পৌরসভার মেয়র, সহকারী কমিশনার (ভূমি), থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওই রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে অবৈধ দখল থেকে জায়গাটি মুক্ত করে।
সবজি বিক্রেতা আলম মল্লিক, মো: সিদ্দিকুর রহমান ও মহব্বত বিশ্বাস বার্তা২৪.কম’কে বলেন, আমরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয়ের নিজস্ব দোকানে ভাড়া থাকি। কিন্তু হঠাৎ করে শুক্রবার রাতে তিনি আমাদেরকে বলেন রাতেই ঐ টিনশিডে উঠে যেতে হবে। পরে আমরা উঠতে গেলে প্রশাসন বাঁধা দেন।
পাংশা মাছ বাজারের সভাপতি কমিশনার মো: বাদশা মন্ডল ও সাধারণ সম্পাদক মো: লাল্টু বিশ্বাস বার্তা২৪.কম’কে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান হঠাৎ করে রাতে সরকারি ঐ টিনশেডে ৩০-৩৫ জন সবজি বিক্রেতাকে জোর করে বসিয়ে দিচ্ছিল। পরে প্রশাসন এসে তা বন্ধ করে দেন।
উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মো: জালাল উদ্দিন বিশ্বাস বার্তা২৪.কমকে বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্মিত দোকানগুলোতে কোন ভাড়াটিয়া উঠাতে হলে তার একটি সরকারিবিধি রয়েছে। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান সরকারি জায়গাটি দখলে নেওয়ার জন্য গভীর রাতে ভাড়াটিয়া বসিয়ে দিচ্ছিলেন। যা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং লজ্জাজনক।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপুল চন্দ্র দাস বার্তা২৪.কম’কে বলেন, শুক্রবার রাতে ফোনে খবর পাই যে সরকারি জমি দখলে নিচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। খবর পেয়েই তাৎক্ষনিকভাবে ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। আমার সাথে ওসি, ভাইসচেয়ারম্যান, সহকারি কমিশনার এরা ছিলেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা মিললে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত।
অভিযুক্ত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: ফরিদ হোসেন ওদুদ তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বার্তা২৪.কম’কে বলেন, ‘আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি কেন সরকারি জায়গা দখল করতে যাবো। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এটি একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ।’