‘মুক্তিযোদ্ধাদের যারা কাফের বলেছিল, তাদের পরবর্তী প্রজন্মই ভাস্কর্যবিরোধিতা করছে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: বার্তা২৪.কম

আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

‘মুক্তিযোদ্ধাদের যারা কাফের বলেছিল, তাদের পরবর্তী প্রজন্মই ভাস্কর্যবিরোধিতা করছে’ বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বুধবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে শেখ ফজলুল হক মনির ৮১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি একথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী এসময় বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘একজন মেধাবী দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতা, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মনি মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রেখেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে অস্ত্রধারণ করে রণাঙ্গণে যুদ্ধ করেছিল এবং মুক্তিযুদ্ধের পর বীরবেশে বাংলাদেশে স্বাধীনতার লালসূর্যকে ছিনিয়ে আনতে অসামান্য অবদান রেখেছিল, তাদেরকে সংগঠিত করে দেশ গঠনের জন্য তার নেতৃত্বেই যুবলীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যেদিন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, শেখ ফজলুল হক মনিকেও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজুমনিসহ সেদিন হত্যা করা হয়।’

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি ও তাদের ভাবধারা-নীতি-আদর্শে বিশ্বাসী পরবর্তী প্রজন্ম চায় না দেশ এগিয়ে যাক। ১৯৭১ সালে তারা ফতোয়া দিয়েছিল, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যারা লড়াই করছে তারা সবাই কাফের। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করা ইমানের বরখেলাপ। পাকিস্তান ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করা ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সামিল। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সময় যখন আমাদের মা-বোনদের ইজ্জত লুণ্ঠন করা হচ্ছিল, তখন তার স্বপক্ষে এই ফতোয়াও দেয়া হয়েছিল যে, এরা ‘গণিমতের মাল’, তাদেরকে ভোগ করা যাবে। যারা সেই ফতোয়া দিয়েছিল, তাদের পরবর্তী প্রজন্মই আজকে ভাস্কর্য বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে, একটি শ্রেণিকে উস্কে দিচ্ছে, ভাস্কর্য ভাঙচুর করছে।’

এই দেশে শতশত বছর ধরে বহু ভাস্কর্য আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ব্রিটিশ আমল, পাকিস্তান আমলে বহু ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরও আমাদের ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতির অংশ হিসেবে ইতিহাসকে ধারণ করার স্বার্থে বহু ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে। তখন কেউ কথা বলেনি। যখন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বিভিন্ন জায়গায় নির্মিত হচ্ছে, তখন তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে। এটি রহস্যজনক।’

ড. হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু মানেই মুক্তিযুদ্ধ। যারা দেশটা চায়নি, যারা মুক্তিযুদ্ধকে গন্ডগোলের বছর বলে, তারা বঙ্গবন্ধুকেও পছন্দ করেনা। সেজন্য মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা ফতোয়া দিয়েছিল মুক্তিবাহিনীর সব সদস্য কাফের, তারাই আজকে বলছে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ করা সঠিক হচ্ছে না। এটিকে গ্রহণযোগ্য করার জন্য আবার বঙ্গবন্ধুর পক্ষে দুই-চার কথা বলার চেষ্টা করে। এ হচ্ছে ছলচাতুরী, তাদের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়নের অপকৌশলের অংশ, সেটা সবাইকে বুঝতে হবে। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে যে মৌলবাদী অপশক্তিকে পরাভুত করে, যে ধর্মান্ধগোষ্ঠীকে পরাভূত করে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সবার মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে রচিত বাংলাদেশে তাদেরকে আর মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়া যায় না’, বলেন তিনি।

‘ভাস্কর্য নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলেছেন- এটি আমার কাছে কোনো ইস্যু নয়’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে কিভাবে দেশে ফেরত আনা যায়, দুর্নীতির দায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি কিভাবে করা যায় আর খালেদা জিয়ার হাঁটুর ব্যথা, পায়ের ব্যথা হচ্ছে উনার কাছে ইস্যু।’

বিএনপি’র উদ্দেশ্যে ড. হাছান বলেন, ‘আপনারাতো জিয়াউর রহমানের ভাস্কর্য সারাদেশে বানিয়েছেন, আপনাদের বক্তব্য স্পষ্ট করুন, এই অপশক্তির বিরুদ্ধে বক্তব্য দিন, এই বক্তব্য দিতে আপনাদের এতো লজ্জা কেন? অন্যথায় আপনারা এর পেছনে ইন্ধনদাতা হিসেবে জনগণের কাছে চিহ্নিত হবেন।’

ভাস্কর্যবিরোধীদেরকে চোখ মেলে ইসলামী বিশ্বের দিকে তাকানোর অনুরোধ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আরবে ভাস্কর্য মিউজিয়াম আছে, রাস্তায় রাস্তায় ঘোড়ার-উটের এমনকি মানুষের মুখাবয়বের ভাস্কর্য আছে। আরব রাষ্ট্রগুলোতে সেখানকার বাদশা-সুলতানদের মুখাবয়বসহ ভাস্কর্য আছে। আরব আমিরাতের মিশনপ্রধান আমার সাথে দেখা করার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, তাদের দেশে শতশত বছর ধরে কৃষ্টি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির অংশ হয়ে থাকা ভাস্কর্যগুলো অপরিবর্তনীয়। আর তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ঘোষণা দিয়েছেন, তারা এখানে কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য নির্মাণ করবেন। যারা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট প্রশংসায় পঞ্চমুখ, তারা সেখানে এরদোগানের ভাস্কর্যগুলো বা যারা আরব আমিরাত থেকে অর্থ নিয়ে প্রতিষ্ঠান চালান, তারা আরব আমিরাতের ভাস্কর্যগুলো দেখেন না!’

ভাস্কর্যবিরোধীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী, ‘ভাস্কর্য নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না। আাপনারাও বিভ্রান্তির হাত থেকে মুক্ত হোন এবং চোখ মেলে সারা পৃথিবীর দিকে তাকান। অন্যথায় দেশের মানুষ যেভাবে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে এই বিক্ষোভের আগুন আপনাদের গায়ে লাগবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের তথ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি বলতে চাই, আমরা এই ধরণের বক্তব্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা কোনোভাবেই বরদাশত করবো না। দেশের সমস্ত সাংস্কৃতিক সংগঠন ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে আহ্বান জানাই মাঝেমধ্যে এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সবসময় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা লায়ন চিত্তরঞ্জন দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, কণ্ঠশিল্পী এস ডি রুবেল, স্বাধীনতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন টয়েল প্রমুখ।

   

মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে পিতার মৃত্যুদণ্ড



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে পিতার মৃত্যুদণ্ড

মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে পিতার মৃত্যুদণ্ড

  • Font increase
  • Font Decrease

১৪ বছরের কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় পিতাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৪ এর বিচারক শাহরিয়ার কবির এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রায় ঘোষণার আগে আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর আসামিকে ফের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী কিশোরী বাবার সঙ্গে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ এলাকায় বসবাস করত। কিশোরীর মা বিদেশে থাকতেন।

২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বাসায় ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে তার বাবা। এই ঘটনায় ওই কিশোরী বাদী হয়ে রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় বাবার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

পরবর্তীতে আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর আসামি মেয়েকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।

রায় ঘোষণার আগে মামলায় ছয় জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত।

;

সাতক্ষীরায় পিলারে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, চালক নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সাতক্ষীরায় বাইপাস সড়কের ধারে পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে রাজমোহন দাস (৩৫) এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল দশটার দিকে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কে এই ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম। 

নিহত রাজমোহন সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার রাজেন্দ্রপুর গ্রামের প্রভাত কুমার দাসের ছেলে।

পুলিশ জানায়, রাজমোহন দাস মোটরসাইকেলে সাতক্ষীরা থেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বেলা দশটার দিকে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কের ধারে থাকা একটি পিলারের সাথে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে রাজমোহন দাস ঘটনাস্থলে নিহত হন।

 

;

একটা রিকশার আক্ষেপে ২৫ বছর পার



ছাইদুর রহমান নাঈম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪ কম, কটিয়াদী ( কিশোরগঞ্জ)
একটা রিকশার আক্ষেপে ২৫ বছর পার

একটা রিকশার আক্ষেপে ২৫ বছর পার

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র দাবদাহ ও কাঠফাটা রোদে রাস্তার মোড়ে মাথায় হাত দিয়ে বসা এক রিকশাচালক। টপটপ করে ঘাম ঝরছে। বারবার মাথার ঘাম গামছা দিয়ে মোছার চেষ্টা করছেন। গরমের কারণে রাস্তায় তেমন লোকজন নেই। রিকশাচালক গোলাপ মিয়ার মাথায় চিন্তার ভাঁজ। একদিকে রিকশার ভাড়ার চাপ, আরেকদিকে সংসার চালানো।

দিনটা পার হলেই রিকশার ভাড়া দিতে হবে, তিনশো টাকা৷ সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে দুপুর একটা পর্যন্ত তার উপার্জন মোট আশি টাকা। রাতে রিকশার মহাজনকে যেভাবেই হোক টাকা দিতেই হবে। উপার্জন হোক বা না হোক এ-টাকা তাকে দিতেই হবে। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে তার।

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পৌরবাজারে দেখা মিলেছে এমনই এক রিকশারচালকের৷ তার নাম গোলাপ মিয়া (৪০)। পার্শ্ববর্তী নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউপির পূর্ব বীরগাঁও গ্রামের মাঝিবাড়ির বাসিন্দা তিনি।

এলাকাবাসী ও রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্ত্রী দুই মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে ছয় সদস্যের সংসার গোলাপ মিয়ার। মেয়ে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বাকিরাও স্কুলে লেখাপড়া করছে। ছেলেমেয়েরা সবাই মেধাবী। লেখাপড়ায় তারা আগ্রহী। তীব্র অভাব অনটনে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এলাকাবাসী জানান, গোলাপ খুবই সহজ সরল ও পরিশ্রমী মানুষ। নিয়মিত নামাজ পড়েন। নিজস্ব থাকার নিজস্ব কোন জায়গা নাই। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনায় ভালো। অভাবের কারণে খাবার জোটানো কঠিন। লেখাপড়ার খরচ তাদের জন্য যুদ্ধ করার মতো কষ্ট হচ্ছে। তার নিজস্ব একটা গাড়ি হলে পরিবার নিয়ে উপার্জন করে ভালোভাবে চলতে পারতেন বলে ধারণা তাদের।

রিকশাচালক গোলাপ মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, সংসার নিয়ে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছি। ভাত জোটানো যেখানে দায় সেখানে লেখাপড়া কীভাবে করাব বলেন? তবুও সন্তানের মুখের দিকে তাকালে মনডা মানে না আর, তাদের আবদার রাখতে পারি না।

তিনি আরও জানান, একটা আনলে আরেকটা বাকি থাকে। আমার নিজস্ব একটা প্যাডেলের রিকশা ছিল। ২৫ বছর আগে চিকিৎসার খরচ আর তীব্র অভাবে বিক্রি করেছিলাম। পরে আর কেনার সাধ্য হয়নি। একটি অটোরিকশা হলে সংসারটা চালাতে পারতাম। বাড়িটাও ঝুপড়ি ঘর, বৃষ্টি আসলেই ভিজতে হয়; এভাবেই চলছি।

;

কুষ্টিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত ৪



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ায় আধিপত্য বিস্তার ও মসজিদ কমিটি কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার ইবি থানার উজানগ্রাম ইউনিয়নের বিত্তিপাড়া গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের বিত্তিপাড়া গ্রামের মৃত কলিল মন্ডলের ছেলে জাহিদুর মন্ডল (৫৫), মৃত ফকির মন্ডলের ছেলে মনি মন্ডল (৬০), মৃত মকবুল মন্ডলের ছেলে খালেক মন্ডল (৫৫) ও মৃত আহসান আলীর ছেলে আক্কাস মন্ডল (৫০)।

আহতরা সবাই উজানগ্রামের বিত্তিপাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন মেম্বারের সমর্থক।

আহতরা জানান, মাগরিবের নামাজের পরে বিত্তিপাড়া তেল পাম্পের নিকটে মোহিদের দোকানে বসে চা পান করছিলেন তারা। হঠাৎ করে উজানগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কার সিদ্দীক ও তার লোকজন তাদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে , বিত্তিপাড়া গ্রামে প্রভাব বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের বিরোধ অনেক পুরনো। একপক্ষে নেতৃত্ব দেন উজানগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কার সিদ্দীক এবং অপরপক্ষে বিত্তিপাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন মেম্বার।

বুধবারের এই ঘটনার আগে গ্রামের ঈদগাহ কমিটি নিয়ে এই দুপক্ষের মতানৈক্য চলছিল। এর আগে ঈদের (ঈদুল ফিতর) নামাজের পর বসে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু ১১ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গোশত কিনতে গিয়ে দু’পক্ষের কর্মী রশিদ ও জামালের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়।

এরপর ঈদগাহে আসার পথে বক্কার গ্রুপের লোকদের মারধর করা হয়। পরে সাড়ে ৮টার দিকে ঈদগাহের দখল নিয়ে দুপক্ষের তুমুল সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষে বক্কার গ্রুপের যোয়াদ মণ্ডল, আব্দুল্লাহ, শাহীন ও বাবু এবং হোসেন মেম্বার গ্রুপের রাজা ও মিন্টু আহত হন। পূর্বের ঘটনার জেরে সর্বশেষ এই ঘটনা ঘটেছে।

সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫, ৬ ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার মোছা. শারমিন আক্তার জানান, ‘আমার মাধ্যমে জেলা পরিষদ থেকে বিত্তিপাড়া জামে মসজিদের গেইটের জন্য এক লক্ষ টাকা অনুদান পাই। পরবর্তীতে আবু বক্কার সিদ্দীক মসজিদে গিয়ে দাবি করেন, তিনি এ টাকা জেলা পরিষদ থেকে নিয়ে এসেছেন, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। সে সময় তিনি দাবি করেন তাকে মসজিদ কমিটির সভাপতি বানাতে হবে। এই নিয়ে মসজিদে মধ্যে হট্টগোল বাঁধে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরপর হোসেন মেম্বারের লোকজন বাজারে গোশত কিনতে আসে। লোক মুখে শুনেছি, তখন সরদার পাড়ার জামাল পাগল অর্থাৎ জামাল খোড়া হোসেন মেম্বারের এক সমর্থককে মারধর করে। পরবর্তীতে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সেই সংঘর্ষে ৭ জন আহত হয়। ওই মারামারি ঘটনা সমাধান না হওয়ার জের ধরে বুধবার অতর্কিতভাবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বাক্কার সিদ্দীকের সমর্থকরা হোসেন মেম্বারের সমর্থকদের উপর এই হামলা চালিয়েছে।’

তিনি আরও দাবি করেন, ‘জেলার শীর্ষ নেতারা উভয় পক্ষের লোকজনদের এক জায়গায় বসিয়ে এই মারামারি, এই সংঘর্ষ পুনরায় যাতে না হয়, সে বিষয়ে একটি সমাধান করে দেবেন। আমরা গ্রামের শান্তি চাই।’

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন অহত হয়েছে। বর্তমানে তারা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বিত্তিপাড়া গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

;