রংপুরে জেঁকে বসেছে শীত, হিমেল হাওয়ায় ভাসছে কুয়াশা
ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে রংপুর। লুকিয়ে আছে পূব আকাশে সূর্য। হিমেল হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে শীতের আগাম প্রকোপ। সড়কে আলো জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি। ঘরে বাইরে উষ্ণতা পেতে শরীরে উঠেছে মোটা কাপড়। যেন জেঁকে বসেছে হাড়কাঁপানো শীত।
সকালে রংপুর নগরের বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে শীত মৌসুমের প্রথম ধাক্কাটা এমনটাই দেখা গেছে। সাতসকালে কাজের প্রয়োজন বের হওয়া সাধারণ মানুষের সাথে চাকরিজীবীদেরও পড়তে হচ্ছে খানিকটা বিপাকে। সড়কে কমেছে হালকা যানবাহন চলাচল।
মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল নয়টা পর্যন্ত রংপুরে ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী কুড়িগ্রাম জেলায় ১২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াতে। এখানে আজকের তাপমাত্রা ১২.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রংপুরে শীতের সকালে ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। কোথাও কোথাও সড়কে, অলিগলি আর খোলা জায়গায় খড়কুটো জ্বালিয়ে চলছে শীত নিবারণের চেষ্টা। ঘরে বাইরে উষ্ণতা পেতে শরীরে উঠেছে মোটা কাপড়।
মাঘ আসতে বাকি আরও এক মাস। কিন্তু ঘরের বাইরে বের হওয়া মানুষদের কাছে এ যেন মাঘের শীত। হিমেল হাওয়ায় সাথে ঝিরিঝিরি জলফোঁটায় ভিজে গেছে প্রকৃতির বুক। দিগন্ত জোড়া মাঠে প্রতিদিনের মতো কাজে ব্যস্ত কৃষাণ-কৃষাণি। শীতের সকালে সবুজের ক্ষেতবুননে তাদের কাছে লাপাত্তা শীত। তবে ছিন্নমূল ও নিম্নআয়ের মানুষের জীবনের পাশাপাশি গবাদি পশুপাখি টের পাচ্ছে শীতের ঝাঁঝ।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর কুয়াশা পড়তে শুরু করে। সময় যত গড়িয়েছে ততোই যেন কুয়াশায় চাদরে ঢাকা পড়ে রংপুরের চারপাশ। নগর-বন্দর, হাট-বাজার সবখানেই মধ্যরাত থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে। ভোরে কিছুটা কুয়াশা কমলেও হেডলাইটের আলো ছাড়া ভালো দেখাচ্ছে না সড়ক।
এদিকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে কুয়াশাচ্ছন্ন আকাশ কিছুটা পরিষ্কার হতে দেখা যায়। তবে সকাল দশটা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। তাপমাত্রার তেমন একটা উন্নতিও হয়নি। ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
শহর থেকে একটু দূরে গ্রামে থাকা ছিন্নমূল, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারগুলো শীতবস্ত্রের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন বেশি। অনেকের শীতবস্ত্র কেনার মতো সামর্থ্যও নেই। তাই খড় ও শুকনা পাতা কুড়িয়ে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা।
তাদের অনেকে জানান, রাতের বেলায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝড়ছে। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা নাকাল। আগাম শীতের প্রকোপ মোছবিকাবেলায় প্রস্তুতি না থাকায় অনেকেই কষ্টে আছেন।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। মঙ্গলবার সকাল নয়টা পর্যন্ত রংপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক তিন।
তিনি আরো জানান, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে শীতের প্রকোপ বাড়বে। দিন দিন তাপমাত্রা কমতে থাকবে। এতে করে রংপুরে আশপাশের এলাকাগুলোতে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।