ভারতীয় সংগঠনের ৫ দফা দাবিতে বেনাপোল বন্দরে বাণিজ্য বন্ধ
আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের নানান হয়রানি বন্ধসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্য বন্ধ রেখেছেন ভারতের পেট্রাপোল বন্দর জীবন-জীবিকা বাঁচাও কমিটি নামে একটি সংগঠন। তবে এপথে আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকলেও বেনাপোল বন্দর খোলা রয়েছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে স্বাভাবিক রয়েছে দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত।
সংগঠনটির অনিদিষ্টকালের ডাকা কর্মবিরতিতে সোমবার (২১ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টা থেকে এপথে সব ধরনের পণ্য আমদানি-রফতানি বন্ধ রয়েছে।
এদিকে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ থাকায় দুই পার বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় প্রায় সহস্রাধিক পণ্য বোঝায় ট্রাক আটকা পড়েছে। এ পর্যন্ত কোন সমাধান না আসায় বাণিজ্য সচল অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের লোকসানের কবলে পড়েছেন। আটকে পড়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে- পাট ও পাট জাত পণ্য, মাছ, শিল্প কলকারখানার কাঁচামাল, তৈরি পোশাক, মেশিনারিজসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্য দ্রব্য।
জানা যায়, প্রতিদিন এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ৫ শতাধিক ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পন্য আমদানি ও দেড় শতাধিক ট্রাকে বিভিন্ন পণ্য ভারতে রফতানি হয়ে থাকে। বাণিজ্যিক কার্যক্রম সম্পাদনে ভারতীয় সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ সদস্যরা বেনাপোল বন্দরে আসা-যাওয়া করতেন। কিন্তু সীমান্তরক্ষী বিএসএফ সাম্প্রতি নিরাপত্তা জনিত কারণ দেখিয়ে তাদের যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। এছাড়া বিএসএফের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া ট্রাক তল্লাশিতে দীর্ঘ সময় ক্ষেপন হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হতে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। কিন্তু কোন সমাধান না আসায় বাধ্য হয়ে বন্দর জীবন-জীবিকা বাঁচাও সংগঠনটি কর্মবিরতি পালন করে আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দেয়।
৫ দফা দাবি হলো-
১. সাধারণ ব্যবসায়ী এবং মুদ্রা বিনিময়কারী পরিবহন, ক্লিয়ারিং ও ফরোয়াডিং এজেন্ট ও ট্রাক চালক সহকারীর উপর বিএসএফ ও অনান্য এজেন্সির কর্তৃক নিরাপত্তার নামে অত্যাচার বন্ধ করতে হবে।
২. অবিলম্বে পূর্বের ন্যায় হ্যান্ডকুলি ও পরিবহন কুলিদের কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে দিতে হবে।
৩. বাণিজ্যিক সার্থে পূর্বের ন্যায় পণ্যবাহী চালক ও সহকারীদের পায়ে হেটে পেট্রাপোল ও বেনাপোল বন্দরের মধ্যে যাতায়াতের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. বাংলাদেশে পণ্য নিয়ে যাওয়া পরিবহনের ট্রাকগুলো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খালি করার ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. আধুনিকতার অযুহাতে বন্দরের শ্রমিকদের কর্মহীন করা চলবে না।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, ভারতীয় সংগঠন যৌতিক দাবি নিয়ে তারা কর্মবিরতি পালন করেছে। তবে আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা যেমন লোকসানের মুখে পড়েছেন তেমনি সরকারও হারাচ্ছে রাজস্ব। সন্তোষজনক সমাধানের মাধ্যমে দ্রুত পণ্য পরিবহন শুরু হবে এমনটি আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে সবাই ক্ষতির মুখে। তবে চলমান সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে যাতে দ্রুত বাণিজ্য সচল হয় তার জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।