জনসংখ্যার নিরিখে নয়, বিপর্যস্ততার অনুপাতে ত্রাণ বরাদ্দের তাগিদ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ভার্চুয়াল সংলাপ।

ভার্চুয়াল সংলাপ।

  • Font increase
  • Font Decrease

চলমান কোভিড-১৯ অতিমারি এবং সাম্প্রতিক বিধ্বংসী বন্যায় সিরাজগঞ্জের মতো তুলনামূলকভাবে বেশি দুর্যোগপ্রবণ চর এলাকায় উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে যে ধরনের ত্রাণ ও কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, তা যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি পরিষেবার কার্যকারিতা বাড়ানো দরকার।

আর সেজন্য বিশদ ডাটাবেজ তৈরিসহ ত্রাণ বিতরণ সম্পর্কিত অবাধ তথ্য প্রবাহ ও তথ্যের প্রচারের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। একই সাথে ত্রাণসহ অন্যান্য সরকারি সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে জনসংখ্যার পরিবর্তে সামগ্রিক বিপন্নতা মূল মাপকাঠি হিসেবে বিবেচ্য হতে পারে।

সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) আয়োজিত “করোনা ও বন্যা মোকাবিলায় ত্রাণ কর্মসূচি এবং কৃষি প্রণোদনা: সরকারি পরিষেবার কার্যকারিতা” শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল সংলাপে এসব কথা বলেন বক্তারা।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) ও অক্সফাম ইন বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের আর্থিক সহায়তায় “গণতান্ত্রিক সুশাসনে জনসম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ” শীর্ষক চলমান প্রকল্পের আওতায় এ সংলাপটি আয়োজিত হয়। এ সংলাপটির সহযোগী আয়োজক ছিল মানব মুক্তি সংস্থা, সিরাজগঞ্জ এবং এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ।

সিপিডি’র সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট মুনতাসির কামাল তার উপস্থাপিত মূল প্রতিবেদনে এই আঙ্গিকগুলো তুলে ধরেন। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলায় করোনা ও বন্যা মোকাবিলায় গৃহীত সরকারি ত্রাণ এবং কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির কার্যকারিতার একটি প্রাথমিক মূল্যায়নও উপস্থাপন করেন।

করোনা ও বন্যা মোকাবিলায় ত্রাণ এবং কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে বিভিন্ন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ পরিলক্ষিত হয়েছে। এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, প্রণোদনার সহায়তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। ত্রাণ সেবা সম্পর্কিত ‘হটলাইন’ নাম্বারসহ (যেমন: ৩৩৩) প্রযুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন অভিনব যেসব উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে সে সম্পর্কে স্থানীয় পর্যায়ের সুবিধাভোগীরা এখনও যথেষ্ট সচেতন নন। সুবিধাভোগী নির্বাচন অনেক ক্ষেত্রেই অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। সামগ্রিক চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এবং উপজেলা/ইউনিয়ন ভিত্তিক বরাদ্দের বিভাজনের মধ্যে অধিকতর সমন্বয়ের জায়গা আছে। সুবিধাভোগী নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটি বিশদ ডাটাবেসের অভাব সরকারি পর্যায় থেকে বারংবার উল্লিখিত হয়েছে।

এ মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে সুপারিশ রাখা হয় যে, সঠিক চাহিদা নিরূপন এবং সে অনুযায়ী বরাদ্দ নির্ধারণের জন্য স্থানীয় পর্যায়ের দারিদ্র্যের হার, জনঘনত্বের হার, বেকারত্বের হার ইত্যাদি বিবেচনায় নিতে হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে আর্থসামাজিক সূচকসমৃদ্ধ একটি বিশদ ডাটাবেজ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরী। ত্রাণ সেবা সংক্রান্ত প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগ (যেমন: হটলাইন/নির্ধারিত মোবাইল নাম্বার) সম্পর্কে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সুবিধাভোগী নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বৃদ্ধির জন্য বাস্তবায়ন নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রচার-প্রচারণা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও যেন সরকারি কৃষি প্রণোদনাসমূহ দুর্যোগে অধিকতর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে পৌঁছায় তা নিশ্চিত করার ব্যাপারে সুপারিশ রাখা হয়।

সংসদ সদস্য মো. হাবিবে মিল্লাত বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তিনি ত্রাণ ও প্রণোদনা সরবরাহে অপ্রতুলতার কথা স্বীকার করে বলেন, অনিয়মের যেসমস্ত অভিযোগ এসেছিলো সে ব্যাপারে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি ত্রাণ সরবরাহে সংসদ সদস্যদেরকে আরও প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত করার বিষয়ে মত দেন, এবং ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলিকে আরও ভালোভাবে মোকাবেলার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সংলাপের আরেক বিশেষ অতিথি মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব তানভীর শাকিল জয় বলেন, করোনা মোকাবিলায় ও ত্রাণ বিতরণে স্থানীয় প্রশাসন অত্যন্ত স্বচ্ছভাবে কাজ করেছে, যদিও কিছু অপ্রতুলতা রয়েছে। তিনি বলেন, “উত্তরাঞ্চল যেহেতু একটি দুর্যোগপূর্ণ এলাকা, প্রণোদনা বরাদ্দের ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগের প্রয়োজন।”

চৌহালী ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা থেকে প্রায় ১২০ জন সিবিও সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ এই সংলাপে যোগ দেন এবং বিভিন্ন পরামর্শ ও মন্তব্য উপস্থাপন করেন। তাদের বক্তব্যে ত্রাণ সহায়তার অপ্রতুলতা এবং সময়মাফিক ত্রাণ বিতরণ করার বিষয়গুলো উঠে আসে।

শোয়েব ইফতেখার, প্রধান, ইকোনমিক ইনক্লুশন অ্যান্ড জাস্টিস, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে এই প্রকল্প ও সংলাপের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন। সংলাপের শেষে বক্তব্য রাখেন মানব মুক্তি সংস্থা-এর নির্বাহী পরিচালক মো. হাবিবুল্লাহ বাহার। তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গবেষণা প্রতিবেদনটি খুবই সময়োপযোগী ও কার্যকর হয়েছে। 

অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, সম্মাননীয় ফেলো, সিপিডি সংলাপে সভাপতিত্ব করেন। তিনি সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে অনুষ্ঠানটি শেষ করেন।

এই সংলাপে কমিউনিটি-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, উন্নয়নকর্মী, এনজিও প্রতিনিধি, ব্যক্তিখাতের উদ্যোক্তা, সমাজকর্মী, পেশাজীবি এবং গণমাধ্যমকর্মীসহ সিরাজগঞ্জ জেলার নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সিলেটে নৌকা থেকে ২৬৫ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার, আটক ১



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
উদ্ধারকৃত ভারতীয় চিনি।

উদ্ধারকৃত ভারতীয় চিনি।

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটের গোয়াইনঘাটে পুলিশের অভিযানে চিনি বোঝাই ২টি নৌকা থেকে ২৬৫ বস্তা ভারতীয় চিনিসহ এক চোরাকারবারিকে আটক করা হয়েছে।

শুক্রবার (০৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জাফলং ইউনিয়নের অন্তর্গত উত্তর প্রতাপপুর এলাকা থেকে চিনি উদ্ধার ও তাকে আটক করা হয়। 

আটককৃত আবুল হায়াত (৩০) পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের লুনি হাওর গ্রামের আব্দুল ওয়াহিদের ছেলে।

শুক্রবার রাতে গোয়াইনঘাট পুলিশ জানায়, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশনায় একটি আভিযানিক টিম উপজেলার ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের উত্তর প্রতাপপুর গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে পলাতক আসামিদের ফেলে যাওয়া ২টি নৌকাসহ ২৬৫ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার এবং আবুল হায়াতকে আটক করা হয়। উদ্ধারকৃত ভারতীয় চিনির মূল্য ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। 

এদিকে এ ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে আটককৃত আবুল হায়াতকে প্রধান আসামি করে ও ৫ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা রুজু করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম পিপিএম।

;

নিরাপত্তাকর্মীকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা, আত্মগোপনে ফ্ল্যাট মালিক মফিদুল



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় গাড়িচাপা দিয়ে নিরাপত্তাকর্মী মো. ফজলুল হককে (২৫) হত্যার পর গাঁ ঢাকা দিয়েছে ঘাতক গাড়ি চালক ও ফ্ল্যাট মালিক ইঞ্জিনিয়ার মফিদুল ইসলাম (৬৯)।

গত বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) সকালে এ ঘটনার পর রাতে মফিদুলকে আসামি করে মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী। এরপর শুক্রবার (০৫ জুলাই) পর্যন্ত একাধিক অভিযান চালালেও তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেট ভেঙে ফজলুলকে চাপা দেয় মফিদুল। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, কোন কারণে জিদ থেকে বা পরিকল্পনা করে এই হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

মামলার এজাহারে নিহতের স্ত্রী শরীফা বেগম দাবি করেন, ঢাকায় সেফ ফোর্স সিকিউরিটি কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন ফজলুল। এক মাস আগেই এই ভবনে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে নিয়োগ পান। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে তার ডিউটি ছিল। এসময় সকাল সোয়া ৮টার দিকে আসামি মফিদুল গ্যারেজ থেকে বের হওয়ার সময় দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে ফজলুলকে ধাক্কা দিলে গেট ভেঙ্গে রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে সে। এসময় মফিদুল তার গাড়িটি ফজলুলের শরীরের উপর উঠিয়ে দেয়। এসময় তার কোমর ভেঙ্গে যায়, কপাল, ডান হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটাসহ গুরুতর জখম হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন। এর মধ্যে গাড়ির মালিক মফিদুল তার গাড়িটি রেখেই পালিয়ে যান।

তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে শরিফা বেগম বলেন, আমার দুইটা মেয়ে। বড় মেয়ের বয়স ৫ বছর আর ছোট মেয়ের বয়স ১৬ মাস। আমার মেয়ে দুটো এতিম হয়ে গেলো। আমি এখন এদের নিয়ে কীভাবে থাকবো। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।

নিহতের বোন মিনারা বেগম বলেন, ঘটনার পর পুরো বিষয়টি ম্যানেজের চেষ্টা করছে রাজাবাজারের স্থানীয় বড় ভাই পরিচয় দেওয়া চুন্নু ও শাহজাহান নামে দুই লোক। কয়েক দফায় কাউন্সিলরের অফিসে তাদের বুঝানো হয়েছে মীমাংসার জন্য। 

তিনি বলেন, আমাদের সাথে মীমাংসার কথা বলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে মফিদুল ইসলামের গাড়ির চালক বলছেন, গাড়ির ব্রেকপ্যাড ক্ষয় হয়ে গিয়েছিল। স্যার সেটা চেক করতে গাড়িতে উঠে পা দিয়ে একসেলেটর চাপ দেন, এরপর গাড়ি চলতে শুরু করলে তিনি হয়তো থামাতে গিয়ে ব্রেকে পা না দিয়ে ভুলে একসেলেটরে আরও জোরে চাপ দেন। এতে গাড়ি মুহূর্তের মধ্যে গেট ভেঙে বাইরে গিয়ে ধাক্কা খায়।

এ ঘটনায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গেট ভেঙে ফজলুলকে চাপা দেয় আসামি মফিদুল। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। আমরা তাকে গ্রেফতারের জন্য কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছি। খুব দ্রুতই আসামিকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

;

নরসিংদীতে নিখোঁজের একদিন পর শিশুর মরদেহ উদ্ধার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নরসিংদী
নিহত শিশু আয়েশা/ছবি: সংগৃহীত

নিহত শিশু আয়েশা/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নরসিংদীর মনোহরদীতে আয়েশা আক্তার নামে দেড় বছরের এক শিশু নিখোঁজের একদিনপর ধান ক্ষেত থেকে তার মরদেহ পাওয়া গেছে। 

শুক্রবার (০৫ জুলাই) বেলা এগারটার দিকে মনোহরদী পৌরসভার হাররদীয়া এলাকায় ধান ক্ষেত থেকে শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। শিশু আয়েশা মনোহরদী পৌরসভার হাররদিয়া গ্রামের আসাদ মিয়ার মেয়ে। 

শিশুর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) সকাল ৯টার পর থেকে নিখোঁজ হয় শিশু আয়েশা। অনেক খোঁজাখুঁজি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিসহ পোস্ট দেওয়ার পরও নিহত আয়েশাকে না পেয়ে চিন্তায় পড়ে যায় পরিবারের লোকজন। 

পরে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে বাড়ির পাশে বৃষ্টির পানি জমে থাকা ধানের জমিতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশি। পরে শিশুটির পরিবারের লোকজন এসে মরদেহটি শনাক্ত করে এবং মনোহরদী থানায় খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুর মরদেহটি উদ্ধার করে। 

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া বার্তা২৪.কমকে জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে।

;

সাপের খামারে রিমালের তাণ্ডব, ২৫০ সাপের মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে পুরো পটুয়াখালী। বাদ যায়নি বাংলাদেশ স্নেক`স ভেনাম (Bangladesh snakes venom) নামের দেশের প্রথম বিষধর সাপের খামারটিও। রিমালের তাণ্ডবে খামারের প্রায় ২৫০টি বিষধর সাপের মৃত্যু হয়েছে।

তবে খামারটির সরকারি অনুমোদন না থাকায় বনবিভাগ তথা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার সহযোগিতার সুযোগ নেই। আব্দুল রাজ্জাক বিশ্বাস নামের এক তরুণ দেশসেরা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ২০০০ সালে পটুয়াখালী জেলার সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের নন্দিপাড়া গ্রামে তার নিজ বাড়ির পাশে একটি কিং কোবরা সাপ এবং ২৪টি ডিম নিয়ে গড়ে তোলেন দেশের প্রথম বিষধর সাপের খামার। পরিকল্পনা ছিল সরকারি অনুমোদন পেলে সাপের বিষ সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে হবেন দেশ সেরা উদ্যোক্তা। কিন্তু সেই রাজ্জাক বিশ্বাসের স্বপ্ন এখন অধরাই রয়ে গেল।

বর্তমানে দেশীয় নামে পরিচিত কিংকোবরা, পাইথন, পঙ্খীরাজ, কালকুলিন, সাদা গোমা, কেউটে, দাঁড়াশ, বাসুয়া, পদ্ম গোমা, বিষঝুড়ি ও গোঁড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দের শতাধিক বিষধর সাপ রয়েছে রাজ্জাক বিশ্বাসের খামারে।

নন্দিপাড়া গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, রাজ্জাক বিশ্বাস ভাই ২৩ থেকে ২৪ বছর পর্যন্ত এর সাপের খামার লইয়া কষ্ট করতে আছে। এই বইন্নায় আমাগো এলাকায় কোমর পর্যন্ত পানি উঠছিল, আর এই পানিতে ভাইর কয়েক'শ সাপ মারা গেছে। ভাই তার বাপ মায় মরণেও এতো কষ্ট পায় নাই, এই সাপগুলা মরণের কারণে যে কষ্ট পাইছে।

একই এলাকার হায়দার বিশ্বাস বলেন, রাজ্জাক ভাই এই সাপের খামার কইরা কইরা নিজের আর বাপের টাহা পয়সা সব শেষ করছে। এহন বাপের থুইয়া যাওয়া জমি বন্ধক আর বেইচা চলতেছে। সরকার যদি এই মুহূর্তে তারে একটু সাহায্য করতো তাহলে হয়তো রাজ্জাক বিশ্বাস আবারও ঘুইরা দাড়াইতে পারতো।

এ বিষয়ে রাজ্জাক বিশ্বাস বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে এই সাপের খামারটি এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছি৷ সাপের খামারটি টিকিয়ে রাখতে গিয়ে আজ আমি নিঃস্ব। কিছুদিন আগে আমার একমাত্র ছেলেটা মারা যায়, ছেলের মৃত্যু কথা শুনে আমার আব্বাও মৃত্যুবরণ করলেন। ছেলে আর বাবার মৃত্যুর এক মাস পর আমার মা মারা গেলেন! স্বজনদের হারানো শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই রিমালের কারণে পানি উঠে আমার খামারের প্রায় আড়াইশ সাপ মরে যায়। আমি শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি, কিছুই করতে পারি নাই! 

সাপের খামারের ২৫০ সাপের মৃত্যুর বিষয়ে পটুয়াখালী উপকূলীয় বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, 'যেহেতু রাজ্জাক বিশ্বাস অবৈধ ভাবে সাপের খামারটি পরিচালনা করছে, তাই তাকে সরকারি সহযোগিতার কোনো সুযোগ নেই। গত বছরের ১১ এপ্রিল বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ও উপকূলীয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত হয়ে খামারটি বন্ধ করে সাপ বনে ছেড়ে দেওয়ার জন্য একটি নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু খামারটি এখনও চলমান আছে তাই এটিকে বন্ধের জন্য আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো৷

;