ইউটার্ন চালুর পরও কমেনি যানজট
রাজধানীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর তেজগাঁও বিজি প্রেসের সামনে, নাবিস্কো মোড় এবং বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় তিনটি ইউটার্ন যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ইউটার্ন চালু হওয়ার একমাস পেরিয়ে গেলেও কমেনি এই রোডের যানজট। আগের চেয়ে যানজট বেড়েছে, যাতায়াতের সময়ও বেড়েছে বলে অভিযোগ যাত্রী ও চালকদের।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় খুলে দেওয়া ইউটার্ন সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফার্মগেট থেকে মহাখালী ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে এই ইউটার্ন পার হতে ছোট বড় যানবাহনগুলোর যানজটে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে বেশ কিছুক্ষণ। এছাড়াও তেজগাঁও থেকে বিমানবন্দরমুখী গাড়িগুলোও মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে সিগন্যালের জন্য। একইভাবে উত্তরা-আব্দুল্লাহপুর থেকে বিমানবন্দর হয়ে আসা গাড়িগুলোর অবস্থাও একই।
সাধারণ পথচারী ও যাত্রীরা বলছেন, সবচেয়ে বেশি যানজটে পড়তে হয় সকালে অফিস যাওযায় সময় এবং বিকেলে। এখনতো বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ তাতেই এই অবস্থা, সব স্কুল খুলে দিলে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে।
টঙ্গী থেকে গুলিস্তানের দিকে চলাচলকারী স্কাই লাইন পরিবহনের গাড়ি চালক হুমায়ুন আলী বিরক্তি নিয়ে বার্ত২৪.কম-কে বলেন, ইউটার্নের ফলে সড়ক আগের চেয়ে সরু হয়ে এসেছে। ফলে গাড়িও চলছে ধীরগতিতে। আবার ক্রসিংগুলোও খোলা রয়েছে। আগের মতোই সিগন্যালের জ্যামে পড়তে হচ্ছে। ফলে আমাদের ট্রিপের সংখ্যা কমে গেছে। তাছাড়া গাড়িগুলো বেশিক্ষণ জ্যামে আটকে থাকার ফলে যাত্রীরা বাস থেকে নেমে যাচ্ছে। এতে লসে পড়তে হচ্ছে তাদের।
আব্দুল্লাহপুর থেকে মোহাম্মদপুর জাপান গার্ডেনে চলাচল করা ভূঁইয়া প্রাইভেট লিমিটেডের গাড়ি চালক লোকমান হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ইউটার্ন হওয়ার ফলে কিছুটা সুবিধা হয়েছে, তবে রাস্তাও কিছুটা সরু হয়ে গেছে। যার ফলে বেড়েছে গাড়ির চাপ। তাই উত্তরা এয়ারপোর্টগামী গাড়ির অপেক্ষা সেই আগের মতোই রয়ে গেছে। তাছাড়া মহাখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ইউলুপ না থাকায় এখানেও যানজটে বসে থাকতে হয় আগের মতন।
এদিকে, বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় ইউটার্ন নিতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না ট্রাফিক সিগন্যালের। ছোটবড় বাসও অনায়াসেই বাঁক নিচ্ছে। তবে উভয় পাশের গাড়ির চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশের।
তাছাড়া, যানজটে বিরক্তির ছাপ লক্ষ্য করা গেছে এই রুটের যাত্রীদের মধ্যে এসময় কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী তুহিন হালদারের সাথে তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, স্বস্তির বদলে অস্বস্তি এনে দিয়েছে এই ইউটার্ন। একটু পরপরই সিগন্যালে পড়তে হচ্ছে গাড়িগুলোকে একইসাথে যাতায়াতের সময়ও বেশি লাগছে।
এবিষয়ে ডিএনসিসির ইউটার্ন প্রকল্পের পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সবগুলো ইউটার্ন চালু না হলে এর সুফল পাওয়া যাবে না। আমরা আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই বাকি সবগুলো ইউটার্নের নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারবো। এর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তারপর হয়তো নগরবাসী এসব ইউটার্নের সুফল পুরোপুরি পাবেন।
উল্লেখ্য, ডিএনসিসির ১১টি ইউটার্ন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এখন পর্যন্ত ৬টি চালু করা হয়েছে। এর আগে কাওলা, উত্তরা র্যাব-১ কার্যালয়ের সামনে এবং উত্তরা জসিম উদ্দিন মোড়ের ইউটার্ন খুলে দেওয়া হয়। শুরুতে এই প্রকল্পের ব্যয় ছিল ২৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। পরে সংশোধনে তা বেড়ে ৩১ কোটি ৮০ লাখ ৯৭ হাজার টাকায় দাঁড়িয়েছে বলে জানা যায়।