চরে আটকা যাদের জীবন



মো. রুবেল ইসলাম তাহমিদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মন্সীগঞ্জ
ভাঙনের খেলায় চরে আটকা যাদের জীবন

ভাঙনের খেলায় চরে আটকা যাদের জীবন

  • Font increase
  • Font Decrease

মুন্সীগঞ্জ জেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে দেশের ১০টিরও বেশি নদ-নদী। এসব নদ-নদীর অববাহিকায় রয়েছে সাড়ে ৩শ’র বেশি চর। যুগের পর যুগ নদীর ভাঙা-গড়া খেলায় বন্দী হয়ে আছে মুন্সীগঞ্জের চরাঞ্চলের প্রায় ২ লাখেরও বেশি চরবাসীর জীবন। দরিদ্রতা যেন তাদের পিছু ছাড়ছেই না।

তাদের অবস্থা এমন- কোন চর ভাঙনের কবলে পড়লে সেই চরের বাসিন্দারা সর্বস্ব হারিয়ে আবার নতুন করে বসতি গড়ে তোলেন জেগে ওঠা নতুন কোন চরে। তবে ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই ফের ভাঙনে ঘর-বাড়ি জমি-জমাসহ হারিয়ে নিঃশ্ব হচ্ছেন তারা। এভাবেই চলছে তাদের জীবন চক্র।

কোন চর ভাঙনের কবলে পড়লে সেই চরের বাসিন্দারা সর্বস্ব হারিয়ে আবার নতুন করে বসতি গড়ে তোলেন জেগে ওঠা নতুন কোন চরে

মুন্সীগঞ্জের চরাঞ্চলের বাসিন্দা জাব্বার মোল্লা। বয়স ৭০ বছর। নদী যতই দুঃখ দিক না কেনো, নদীর সাথেই যেন তার রক্ত ও জন্মের সম্পর্ক। নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে শিশুকাল, শৈশব, যৌবন পেরিয়ে এখন ৪ সন্তানের জনক তিনি। নদীর পানিতে মাছ আর নদীর জেগে ওঠা চরে জীবিকা নির্বাহ করতে করতেই ৭০ বছর পার করলেন এই বৃদ্ধ।

১৯৭০ সালের কথা। মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কনকসার ইউনিয়নে বাপ-দাদার জোতদারী ছিল। বর্তমান টেউটিয়া চরে বাড়ি তাদের চৌচালা টিনের ঘর, সুপারীর বাগান, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ ছিল সেই বাড়িতে।

মুন্সীগঞ্জ জেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে দেশের ১০টিরও বেশি নদ-নদী

ভারতের সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশের সীমানা দিয়ে অভ্যন্তরে প্রবেশ করা ব্রহ্মপুত্র নদ একদিন গড়িয়ে গড়িয়ে তাদের বসত ভিটার নিকটবর্তী হলো। ভাঙন আরো তীব্র হলো। সেই সময়ে নদের প্রখর স্রোত আর তীব্র ভাঙনে একদিন-একরাতেই নিশ্চিহ্ন করে দিলো তাদের বসত ভিটা। ঘর-বাড়ির সামান্য কিছু সরাতে পারলেও বাকি সব গ্রাস করে নিয়েছিল ব্রহ্মপুত্র।

তারপর ঠিকানা হয় ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে জেগে উঠা নতুন চর ঝাউটিয়া চরে। সেখানে ৫ থেকে ৬ বছর বাপ-দাদার জেগে ওঠা জমিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা। তারপর আবারো বসত-ভিটাসহ ঘর-বাড়ি ভেঙে নেয় ব্রহ্মপুত্র। আবারো ঠিকানা হয় ওই নদের বুকে জেগে ওঠা দক্ষিণের চরে। সেখানে ৩ থেকে ৪ বছর আবারো ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা। তারপর আবারো ভাঙন। স্থান পরিবর্তন হয় পাষে চরে। এভাবেই তার জীবদ্দশায় ৯ থেকে ১০ বার এই ভাঙা গড়ার খেলা খেলতে খেলতে বর্তমানে ঠিকানা মিলেছে লৌহজং চরে। সেখানেই পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন জাব্বার মোল্লা।

চরের বালু জমিতে কাশবন সরিয়ে নতুন করে শুরু হয় হাড়ভাঙা পরিশ্রম

ব্রহ্মপুত্রের চরে বসবাসকারী মেছের আলীর (৫০) ভাগ্যেও জব্বারের মতো ভাঙা গড়া খেলা হয়েছে বহুবার। নয়বার ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে ঘর-বাড়ি সরাতে সরাতে আশ্রয় মিলেছে লৌহজং টানিংয়ের খাসারহাট চরে। সাত সন্তানের জনক মেছের আলী। সবার বিয়ে দিয়েছেন চরেই।

চরাঞ্চলে বসবাসরত এমন কোন পরিবার পাওয়া যাবে না যাদের ঘর-বাড়ি নদ-নদী গ্রাস করেনি। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র নদের চরগুলোতে বসবাসকারীদের প্রায় প্রত্যেক পরিবারের ঘর-বাড়ী নদের ভাঙনের শিকার হয়েছে ৫ থেকে ১০ বার পর্যন্ত।

জেলার দুর্গম চরাঞ্চলগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, যখন একটি চর পুরোটাই ভাঙনের কবলে পড়ে তখন সেই চরে বসবাসরত ৪ থেকে পাচঁশ পরিবার একই সাথে পার্শ্ববর্তী কোন নতুন চরে বসতি গড়ে তোলে। সেখানে চরের বালু জমিতে কাশবন সরিয়ে নতুন করে শুরু হয় হাড়ভাঙা পরিশ্রম। বালু জমিতে দিনরাত পরিশ্রম করে চিনা বাদাম, কাউন, ধান, ডাল, ভুট্টা, গম, চিনা, সুজি, টিসি, গুজি তিল, তিল, কালিজিরা, ধনিয়া, শালুক, মিষ্টি আলুসহ নানা ফসল চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকে। এক সময় ভিটের নতুন লাগানো গাছ বড় হয়। ভিটেতে শাক-সবজি  যেমন মামাকলা (জংলি পটল) গাছের পাতা, ঢেঁকি শাক, থানকুনি পাতা, কচুর লতি, কুমারী লতা, তিত বেগুন, কলমি শাক, হেলেঞ্চা শাক, ভাউত্তা শাক, চটা শাক, আগ্রা শাক, মুরমুইররা শাক, গোল হেলেঞ্চা শাকসহ আরও কত  শাক-সবজি চাষ হয়।

চরে জমিতে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ফলান শাক সবজি

তাছাড়া হাঁস-মুরগী পালন হয়, দু-একটি গরুও। কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানোর এই সময়টাতে আবারো ভাঙনের কবলে পড়ে সেই চরের মানুষেরা।

এরপর ৩ থেকে ৫ বছরে হাড়ভাঙা পরিশ্রমে সঞ্চিত সবটুকুই চলে যায় ঘর সরিয়ে অন্য কোন নতুন চরে ভিটে তৈরি আর ঘর মেরামতের পিছনে। নিঃস্ব হতে হয় আবারো। অবশিষ্ট থাকে শুধু দুটি হাত আর নতুন চরের ধু ধু বালু জমি। এ অবস্থায় কিছু পরিবারের প্রাইমারি পাশ করা সন্তানরা কাজের সন্ধানে ঢাকাসহ অন্যান্য বড় শহরে পাড়ি জমালেও সেখানে তাদের শ্রমিকের কাজ ছাড়া আর কিছুই জোটে না। তাদের সামান্য রোজগারে নিজেদের খরচ মেটানোর পর পরিবারের জন্য আর কিছুই করতে পারে না।

চরাঞ্চলের মানুষদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা সরকারি বা বেসরকারি কোন রিলিফ চান না। তারা শুধু নদ-নদীর ভাঙনটাই বন্ধ চান। তাহলেই তারা চরের বাসিন্দা হয়েও সুখে শান্তিতে বাঁচার স্বপ্ন দেখতে পারবে। তারা জানান, চরের জমি হলেও সেটা নিজের জমি।

জন্ম থেকেই ব্রহ্মপুত্রে অববাহিকায় বেড়ে ওঠা সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের দশবিশের চরের তমিজ মিয়া (৭৫) জানান, ৪০/৪৫ বছর আগে ব্রহ্মপুত্রে দুই দিকে এতো বেশি চর ছিল না। আগে ব্রহ্মপুত্রের একটি মাত্র নদ ছিল যার গভীরতা ছিল অনেক বেশি। ফলে ভারত থেকে নেমে আসা পানি সহজেই নদ বেয়েই গড়িয়ে যেতো। কিন্তু ধীরে ধীরে নদের গভীরতা কমতে শুরু করে। এতে করে বন্যার সময় উজান থেকে নেমে আসা পানি নদ আর বহন করতে পারে না। ফলে এই পানি নদের দু’কুল ছাপিয়ে নতুন নতুন পথ তৈরি করে বিস্তীর্ণ এলাকা ভেঙে নিয়ে যায়। এতে করে অনেক শাখা নদীর সৃষ্টি হয়েছে।

দারিদ্রতার জরিপে প্রতিবছর দারিদ্রতার শীর্ষেই অবস্থান মুন্সীগঞ্জ জেলার

লৌহজংয়ে টেউটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইলাম বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় পুরোটাই ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় অবস্থিত। এখানে বসবাসকারী সকল মানুষই দারিদ্র সীমার নীচে। একমাত্র ভাঙনের কারণেই তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারছেন না। স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ করা গেলে দারিদ্রতা থাকবে না।

দীর্ঘদিন চরাঞ্চল নিয়ে কাজ করা স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা ‘মর্তুজাখান মনে করেন, ভাঙন রোধে ইমারজেন্সি ওয়ার্কে টাকা না ঢেলে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করে গবেষণার মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় ভাঙনরোধ করতে হবে। তবেই চরের মানুষদের সুদিন ফিরে আসবে।

তা না হলে এদেশের দারিদ্রতার জরিপে প্রতিবছর দারিদ্রতার শীর্ষেই অবস্থান থাকবে মুন্সীগঞ্জ জেলা।

মুন্সীগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট সুত্র বলে, জেলার সবগুলো নদ-নদীর ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্ল্যান তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে তীর রক্ষার কাজ হচ্ছে। দ্রুত শুরু হবে পরিকল্পনা । পর্যায়ক্রমে সবগুলো নদ-নদীর তীর রক্ষায় স্থায়ী কাজ করা হলে আর নদ-নদীর ভাঙন থাকবে না।

মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, নদ-নদীর ভাঙনরোধ হলে চরবাসীর জীবন-মানের উন্নয়ন হবে। সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। পাশাপাশি চরের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।

   

সাভারে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

সাভারে শহিদুল ইসলাম নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে খুন করেছে দূর্বৃত্তরা। নিহতের নিথর দেহ উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাত ৮ টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করে সাভার মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন্স) নয়ন কারকুন। এর আগে দুপুরের দিকে সাভার পৌরসভার সোবহানবাগ আমতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মো. শহিদুল ইসলাম (২৪) চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট থানার চরধরমপুর গ্রামের সাইদুলের ছেলে। তিনি সাভারের সোবহানবাগ আমতলা এলাকায় ভাড়া থাকতেন। পেশায় ছিলেন দন্ত চিকিৎসকের সহকারী।

হত্যাকান্ডের কারণ বা এর সাথে কারা জড়িত তা এখনও বলতে পারেনি পুলিশ। তবে ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জেরে এ হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে।

পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন্স) নয়ন কারকুন বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জেরে এ হত্যাকান্ড হয়েছে। কিশোর গ্যাংয়ের কোন সম্পৃক্ততা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনই কিছু বলা যাচ্ছেনা। তদন্ত করে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

;

মৎস্য খাতের উন্নয়নে ১৭২ কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে জাপান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মৎস্য খাতের উন্নয়নে ১৭২ কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে জাপান

মৎস্য খাতের উন্নয়নে ১৭২ কোটি টাকা অনুদান দিচ্ছে জাপান

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের কক্সবাজার জেলার মৎস্য খাতের উন্নয়নে ২ হাজার ২৯৪ মিলিয়ন ইয়েন (১৭২ কোটি টাকা) অনুদানের কথা জানিয়েছে জাপান।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ও বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়োমা কিমিনোরির এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

বাংলাদেশস্থ জাপানের দূতাবাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কক্সবাজার জেলার মৎস্য খাতের উন্নয়নের জন্য এ অনুদান দিয়েছে জাপান। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) প্রকল্পের আওতায় এ অর্থ ব্যয় হবে।

অনুদান প্রসঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) জানিয়েছে, জাপান সরকারের অনুদানে মৎস্য আহরণ, উপকূলে অবতরণ এবং হস্তান্তরে দক্ষতা বাড়ানো হবে। এছাড়া কক্সবাজারে বিএফডিসির মৎস্য আহরণ কেন্দ্রের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং মাছ ধরার যন্ত্রপাতি উন্নত করার মাধ্যমে মৎস্য আহরণ ও উপকূলে অবতরণের মান উন্নয়ন, জেলেদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিতরণ ব্যবস্থায় উন্নতিতে ব্যয় হবে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি বলেন, এ অনুদানের অর্থ বাংলাদেশের ব্লু ইকোনমিকে সমৃদ্ধির পাশাপাশি কক্সবাজার অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাবে। পাশাপাশি এ অনুদানের অর্থ দেশে রোহিঙ্গা নিয়ে যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে সেটিরও প্রশমন ঘটাবে।

;

রেল কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটি একটি প্রতিষ্ঠান: রেলমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রেল কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটি একটি প্রতিষ্ঠান: রেলমন্ত্রী

রেল কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটি একটি প্রতিষ্ঠান: রেলমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

রেল কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়, এটি একটি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তুলতে হলে সবাইকে মন দিয়ে রেলের জন্য কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম।

তিনি বলেন, রেলের কিছুটা পরিবর্তন সাধারণ মানুষ দেখতে পাচ্ছেন এই পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর রেলভবনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ উপলক্ষে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান- এর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব এবং দেশের উন্নয়ন’ বিষয়ে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে রেলকে একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অনেক কষ্টে অর্জিত হয়েছে আমাদের এই স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যুদ্ধ করে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। এই স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত প্রতিকূল অবস্থা পেরিয়ে আসতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এ দেশের কৃষক, শ্রমিক ও জনতা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানুষকে অনেক স্নেহ করতেন, ভালোবাসতেন। এদেশের মানুষকে ভালোবেসেই তিনি নিজের জীবন দেশের জন্য উৎসর্গ করেছেন। আমাদের এই দেশকে ভালোবাসতে হবে, দেশকে ভালোবেসে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকের মনে, চেতনায়, মননে ও মানসিকতায় বঙ্গবন্ধুর নাম আমাদের বুকে লেখা হয়ে গেছে। তাই আমরা যদি সবাই মিলে উন্নত সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারি, তাহলেই আমাদের মহান স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর আত্মদান অর্থবহ হবে।

এর আগে অফিস কক্ষে মন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় কুমার ভার্মা সাক্ষাৎ করেন। ভারতের সহায়তায় বাস্তবায়নধীন বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি নিয়ে অলোচনা করেন তারা।

;

মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

  • Font increase
  • Font Decrease

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মুক্তিযুদ্ধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনা তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে দলমত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বঙ্গভবনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করে দেশকে অন্য পথে পরিচালিত করতে চেয়েছিল কিন্তু দেশের জনগণ তা হতে দেয়নি।

রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন জানান, এ বিষয়ে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। স্বাধীনতার পক্ষের সকল শক্তির ইস্পাত কঠিন ঐক্যের প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন।

সাক্ষাৎকালে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিনিধিদল ৩ মে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সম্মেলনে যোগদানের জন্য রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানান।

প্রতিনিধিদল ১৯৭১ এর গণহত্যাকারীদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার প্রয়োজনে সর্বোচ্চ আদালতে অধিক সংখ্যক বিচারক নিয়োগ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সাহাবুদ্দিন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য স্মারকপত্র প্রদান করেন।

তাঁরা সাহাবুদ্দিন কমিশনের প্রস্তাবনা ও সুপারিশ বাস্তবায়নে রাষ্ট্রপতির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।

এ সময় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি সাহাবুদ্দিন কমিশনের প্রস্তাবনা ও সুপারিশ সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করবে মর্মে জানানো হয়।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালে সাধারণ নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাকর্মীদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা, হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা তদন্তে পরবর্তী সময়ে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এ কমিশন সাহাবুদ্দিন কমিশন নামে পরিচিত।

সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান, প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস. এম সালাহউদ্দিন ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

;