রাজধানীতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ অপহরণ চক্রের ৬ সদস্য গ্রেফতার
রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ অপহরণ চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের একটি টিম।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. সাদেকুল ইসলাম, মো. ইফরান, মোহাম্মদ আলী রিফাত, মো. কুতুব উদ্দিন, মো. মাছুম রানা ও গোলাম রাব্বি। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলিভর্তি ম্যাগাজিন, একটি ছুরি, অপহৃত একটি মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
এর আগে শনিবার (৩০ জানুয়ারি) দক্ষিণখানের চেয়ারম্যান পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
হাফিজ আক্তার বলেন, গত ২৯ নভেম্বর রাত ৯টা ১৫ মিনিটে ভিকটিম মো. আনোয়ারুল ইসলাম উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্বপাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসময় হঠাৎ অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা মাইক্রোবাসে ভিকটিমের কাছে আসে। চক্রটি সু-কৌশলে ভিকটিমকে গাড়িতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে অপহরণকারীরা ভিকটিমের স্ত্রী ও বড় ভাইয়ের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। মুক্তিপণ পাওয়ার পর অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা ভিকটিমকে উত্তরা পূর্ব থানা এলাকার ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা হয়। মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশ ছায়া তদন্ত শুরু করে।
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, এই অপহরণের ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে অপহরণ চক্রটির সন্ধান পায় গোয়েন্দা পুলিশ। এই চক্রটি রাজধানীতে গত কয়েকদিনে চারজনকে অপহরণ করেছে তার মধ্যে আনোয়ারুল একজন। প্রাথমিকভাবে ভিকটিমরা কেউই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেনি। তারা যখন দেখলো গোয়েন্দা পুলিশ অভিযোগ পাওয়া মাত্র একের পর এক অভিযান চালিয়ে অপহরণকারীদের গ্রেফতার করছে, তখন আস্থা পেয়ে অভিযোগ নিয়ে ছুটে আসে পুলিশের কাছে। ইতিমধ্যে চারজন ভিকটিমই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, অপহরণকারীরা অপহরণের পর এই চক্রের নারী সদস্যদের দিয়ে ভিকটিমের অশ্লীল ছবি তুলে রাখতো, যাতে ভিকটিম মুখ খুলতে না পারে। যদি এ বিষয়ে পুলিশ অথবা অন্য কারো কাছে অভিযোগ করে তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকটিমের অশ্লীল ছবি ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখাতো। সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার ভয়ে তারা চুপ থাকতো। এছাড়াও, অস্ত্রের মুখে ভিকটিমদের জিম্মি করে রাখা হতো। যার ফলে তারা ভয়ে মুখ খুলতো না।
এমন ঘটনার সম্মুখীন হলে, ভয় পেয়ে বা অন্য কোন কারণে চুপ না থেকে বিষয়টি প্রকাশ্যে অথবা গোপনে পুলিশকে অবহিত করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান পুলিশের এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম, উত্তরা পূর্ব ও বিমান বন্দর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।