সুদীপ্ত হত্যা: ২৪ জনের নামে চার্জশিট
চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাসকে হত্যা মামলায় আলোচিত সেই ‘বড় ভাই’সহ মোট ২৪ জনকে আসামি করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা মহানগর আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় অভিযোগপত্রটি জমা দেন। আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্রের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত।
অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হয়েছে ৭৫ জনকে। আসামিদের ১৮ জনকে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার করা হয়েছে। ছয়জন এখনও পলাতক।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৪ আগস্ট রাতে এ মামলায় রাজধানীর বনানী থেকে গ্রেফতার করা হয় দিদারুল আলম মাসুমকে। কিন্তু পরে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর ভোরে চট্টগ্রাম নগরের সদরঘাট থানাধীন নালাপাড়ার বাসায় হানা দিয়ে সুদীপ্তকে ঘুম থেকে তুলে টেনেহিঁচড়ে বাইরে নিয়ে আসে সেই ‘বড় ভাইয়ের’ নিয়ন্ত্রণে থাকা ছাত্রলীগ ও যুবলীগকর্মীরা। এরপর সেখানেই তাকে বেদম পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সুদীপ্তকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি মিজানুর রহমান জানিয়েছিলেন, সুদীপ্ত হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন লালখানবাজার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম। যিনি ঘটনার আগের দিন আরেক আসামি আইনুল কাদের নিপুকে দুই ঘণ্টার ভেতর কাজ শেষ করে, পুরো ঘটনা ভিডিও করে আনার নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি থাকার সময় মাসুম প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ২০১৪ সালে সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের বলয়ে চলে আসেন। মাঝে তিনি সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ডা. আফসারুল আমীনের পক্ষের লোক হিসেবেও নিজেকে পরিচয় দিতেন।
এরপর থেকে লালখানবাজারে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নিজ দলের প্রতিপক্ষের সঙ্গে ক্রমাগত সংঘাত, কয়েকটি খুনের ঘটনায় বারবার গণমাধ্যমে মাসুমের নাম উঠে আসে। একপর্যায়ে গণমাধ্যমে ‘বড় ভাইয়ের’ তকমাও পান মাসুম। সর্বশেষ সুদীপ্ত বিশ্বাস হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রামের রাজনীতিতে ‘বিতর্কিত’ নেতা হিসেবে পরিচিতি পান দিদারুল আলম মাসুম।