ঠিকাদারের কাছে ঘুষ দাবি, কারাগারে দুই প্রকৌশলী
রংপুরে ঠিকাদারের নিকট ঘুষ দাবির মামলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) দুই প্রকৌশলীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। এর আগে ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকার কাজের দুই শতাংশ হারে ঘুষ দাবি ও সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েও কাজ না দেয়ার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টার দিকে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শাহেনূর এ আদেশ দিয়ে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
অভিযুক্তরা হলেন, এলজিইডি রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন এবং সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারম্যান কাওছার আলম।
উভয় আসামি উচ্চ আদালতে থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন। বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জামিনের মেয়াদ শেষ হলে রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবদেন জানান তারা। শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর, রংপুর এর (এলজিইডি) আওতায় ৪ কোটি ২৬ লাখ ও ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে দুটি প্যাকেজে মোট ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকার কাজের দরপত্র আহবান করা হয়। বিধি মোতাবেক ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ও ওই বছরের ৪ মার্চ দরপত্র জমা দেন নগরীর নিউ ইঞ্জিনিয়ারপাড়ার মৃত আশরাফ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে ঠিকাদার রবিউল আলম বুলবুল।
কিন্তু দরপত্র দু’টি গ্রহণ ও অনুমোদন করার পরেও নোটিফিকেশন অফ অ্যাওয়ার্ড (এনওএ) না দিয়ে রবিউল আলম বুলবুলের কাছে মোট কাজের (৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা) দুই শতাংশ হারে ঘুষ দাবি করেন উল্লেখিত দুই প্রকৌশলী।
এ ঘটনায় রবিউল আলম বুলবুল বাদি হয়ে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে (দুদক) এলজিইডি রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন এবং সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারম্যান কাওছার আলমকে আসামি করে ২০১৯ সালের ৭ মে মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে দুদুকের সহকারী পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
দুদুকের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) একেএম হারুন-উর রশীদ জানান, ‘জালিয়াতির মাধ্যমে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ না দিয়ে অন্য একজনকে কাজ দেয়ায় সরকার এক কোটি ২৬ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে ওই দুই প্রকৌশলীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।’
অভিযুক্ত দুইজনের মধ্যে আখতার হোসেন পরবর্তীতে বদলি হয়ে ঢাকা প্রধান কার্যালয়ে এবং অপরজন রংপুরে কর্মরত আছেন।