কবে হবে চালকদের ডোপ টেস্ট?



তৌফিকুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

গণপরিবহনের চালকদের মাদকগ্রহণের অভিযোগ বেশ পুরোনো যা হরহামেশাই শোনা যায়। পরিবহনের চালক-শ্রমিকরা মাদকাসক্ত কিনা জানতে এরই মধ্যে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গেল বছরের ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসের অনুষ্ঠানে মাদকাসক্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো বন্ধে চালকদের ডোপ টেস্ট করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই নির্দেশের প্রায় চার মাস হতে চলেছে তবে এখনো বাস্তবায়ন হয়নি চালকদের ডোপ টেস্ট। একই সাথে সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম একটি কারণ হলো চালক শ্রমিকদের মাদকাসক্তি বলছেন যাত্রী অধিকার ও সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরে চালকদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করতে খানিকটা নড়েচড়ে বসে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। ডোপ টেস্ট চালু করার কর্মকৌশল ঠিক করতে গঠন করা হয় ৯ সদস্যের একটি কমিটি। এরই মধ্যে কমিটি কাজ এগিয়ে নিয়ে এসেছে। তবে এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এরই মধ্যে চালকদের ডোপ টেস্ট কিভাবে করা হবে তার সুপারিশ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় পাঠানো হয়েছে।

চালকদের ডোপ টেস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ'র মুখপাত্র ও রোড সেফটি শাখার পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুব ই-রব্বানী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, যখনই কোনো চালক বিআরটিএর কাছে লাইসেন্স করতে আসবেন, তখনই আমরা তাদের এই ডোপ টেস্ট করাবো। এছাড়াও টিমের মাধ্যমে এটি করা হবে যেমন, পরিবহন মালিক, শ্রমিক ও পুলিশের সমন্বয়ে বিভিন্ন টার্মিনালগুলোতে পরিবহন চালকদের সন্দেহ হলেই তাদেরকে আমরা টেস্ট করাবো। চালকদের ডোপ টেস্ট হাসপাতালের ল্যাবে করানো হবে বলে তিনি জানান।

বাস টার্মিনাল

কবে নাগাদ এই প্রক্রিয়া মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন হবে জানতে চাইলে বিআরটিএর এই মুখপাত্র বলেন, চালকদের ডোপ টেস্ট করার একটি খসড়া কর্মপরিকল্পনার সুপারিশ আমরা ইতিমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এরপর বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা পর্যালোচনা শেষে মন্ত্রণালয় আমাদের যে সিদ্ধান্ত দেবে সে অনুযায়ী আমরা পরবর্তীতে ডোপ টেস্ট বাস্তবায়নে কাজ করব।

বিআরটিএ সূত্র বলছে, বর্তমানে চালকদের লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নের সময় তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু এর মধ্যে চালকদের মাদকাসক্তি দেখার কোন ব্যবস্থা নেই। ডোপ টেস্টের কর্মপরিকল্পনা অনুমোদন হলে, প্রথমে লাইসেন্স দেওয়ার সময় এবং পরবর্তীতে সেটি নবায়নের সময় বাধ্যতামূলকভাবে চালকের ডোপ টেস্ট করা হবে। সেক্ষেত্রে চালকের মাদকাসক্তি প্রমাণিত হলে তার লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।

এদিকে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ডোপ টেস্টের ব্যয়ভার বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ নাকি মালিক-শ্রমিক বহন করবে সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, চালকদের ডোপ টেস্ট করার বিষয়ে আমরা বরাবরই আগ্রহ দেখিয়েছি। সবার প্রথমে আমরাই চালকদের ডোপ টেস্ট করার বিষয়ে সামনে আনি। প্রথম যখন বিআরটিএর সাথে আমাদের মিটিং হয় তখন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বিআরটিএকে আমরা সুপারিশ করেছি, চালকদের ডোপ টেস্ট করালে যে ব্যয় হবে, সেটি যেন বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ বহন করে। সাম্প্রতিক সময়ে এই বিষয়ে আমাদের সাথে বিআরটিএর আর কোনো আলোচনা হয়নি।

চালকদের ডোপ টেস্টের সার্বিক বিষয় নিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ'র চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ডোপ টেস্টের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই টেস্টের খরচ কে দিবে। টেস্ট করাতে ৯০০ টাকা খরচ হবে। এখন এই টাকা যদি সরকার দেয় তাহলে সরকারকে বরাদ্দ দিতে হবে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে। তাছাড়া ডোপ টেস্টের সাথে অনেক ধরনের টেস্ট আছে সুতরাং এর জন্য একটি নীতিমালাও লাগবে । এই সবগুলোর বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি।

পরিবহন চালকদের মাদক সেবন

বিআরটিএ'র চেয়ারম্যান আরও বলেন, বিআরটিএ এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো ডোপ টেস্টের খরচ পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক সবাইকে মিলে দিতে। তবে মালিকপক্ষ সেটাতে রাজি হয়নি। তারা চাচ্ছে সম্পূর্ণ খরচ সরকার দিবে। তবে বিআরটির পক্ষ থেকে আমরা অনুরোধ করেছিলাম মালিকপক্ষ যেন খরচটা দেয়। তবে এখন যে অবস্থায় পৌঁছেছে সেটা সরকারের পর্যায় থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিআরটিএ এই ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। এজন্য সরকারের কাছে এসকল বিষয়ে সুপারিশ পাঠিয়ে দিয়েছি। সরকার আমাদের যত দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাবে, আমরা ততো তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করতে পারবো। তাছাড়া মুখের লালা দিয়েও মাদকাসক্ত পরীক্ষার কার্যকম কিন্তু চলমান আছে।

এদিকে, যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর পর্যবেক্ষণ বলছে, দুর্ঘটনার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। কিন্তু পরিবহন চালকদের মাদক সেবনের কারণে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটছে। গত বছরের দুর্ঘটনার পরিসংখ্যানে দেখা যায় ২০২০ সালে ৪৮৯১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৬৮৬ জন নিহত, ৮৬০০ জন আহত হয়েছে। তাছাড়া ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে পথচারীকে গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৩.৩৯ শতাংশ এবং বেপরোয়া গতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হায়িয়ে খাদে পড়ার ঘটনা ঘটেছে ০.৯৯ শতাংশ বলে জানা গেছে। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশে ভারী মোটরযানের চালকদের প্রায় ৬৯ শতাংশই মাদকাসক্ত। বিশেষ করে মহাসড়কে দীর্ঘ রুটে গাড়ি চালানোর সময় অনেক চালকই মাদক গ্রহণ করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসব বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বাংলাদেশে যে পরিমাণ সড়ক দুর্ঘটনা হয়। তার একটি অংশ চালকদের মাদকাসক্তির কারণে হয় বলে আমরা মনে করি। আমরা প্রকাশ্যে দেখছি রাজধানীর সিটি সার্ভিসের যেসব বাসগুলো রয়েছে সেসব বাসের চালকরাও কিন্তু মাদক গ্রহণ করে। যা মালিকরাও প্রকাশ্যে বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আমরা অবজারভেশন করে দেখেছি পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন কারণে পরিবহনের চালকরা এই মাদকাসক্তিতে জড়াচ্ছেন। ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে পরিবহনের চালকরা মাদকাসক্ত হয়েই গাড়ি চালাচ্ছেন। এক পর্যায়ে বেপরোয়া চালানোর ফলে দুর্ঘটনা ঘটছে।

এই অবস্থায় চালকদের ডোপ টেস্ট দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দুর্ঘটনা রোধে চালকদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডোপ টেস্টের আওতায় আনা দরকার। এর আগেও দুর্ঘটনা প্রতিরোধের জন্য অনেক গাইডলাইন হয়েছে কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন হয় না, আসলে বাস্তবায়ন কে করবে ? সরকারি সংস্থা বিআরটিএ'র কথা কি বলবো তারা তো আসলে রাজস্ব আহরণে ব্যস্ত।

উল্লেখ্য, সারাদেশে ৪০ লাখ ৭২ হাজার ৬১৬টি লাইসেন্স আছে। এর মধ্যে ভারী যান চালানোর লাইসেন্স ১ লাখ ২ হাজার, মাঝারি মানের ১৫ হাজার ৪৭১টি ও হালকা যানের লাইসেন্স রয়েছে ১২ লাখ ১ হাজার ৫৬টি। এর মধ্যে অপেশাদার ১০ লাখ। এছাড়া মোটরসাইকেল, থ্রি হুইলার ও অন্যান্য ক্যাটাগরির লাইসেন্স রয়েছে।

   

জুনেই ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন হবে: গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেছেন, তৃতীয় ধাপে জুন মাসের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন হবে। পর্যায়ক্রমে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে উত্তীর্ণরা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ১০ টায় তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পরিক্ষায় সচেতনতা নিশ্চিতে আমরা জিরো টলারেন্সে আছি। আমরা ডিভাইসের মাধ্যমে পরিক্ষার্থী নিশ্চিত করেছি। কোনও আবেদনকারী যেন প্রতারণার শিকার না হন, সেজন্য মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। পরীক্ষার্থীরা সবাই সুশৃঙ্খল পরিবেশেই পরীক্ষা দিচ্ছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান, উপাধ্যক্ষ মৃণাল কান্তি গোস্বামী ও পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এই ধাপে কুমিল্লা জেলায় ৩২ হাজার ১৯৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ১৪ হাজার ৭৬৭ এবং পুরুষ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।

;

সার্টিফিকেট ছাড়াই দাঁতের চিকিৎসক আবু বক্কর



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ি ইউনিয়নের কাটখইর বাজারে বেশ কয়েক বছর ধরে দাঁতের ডাক্তার সেজে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন মো. আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি হাঁসাইগাড়ি ইউনিয়নের হাঁসাইগাড়ি গ্রামের ছামছুর রহমানের ছেলে। 

প্রায় সাত বছর ধরে উপজেলার কাটখইর বাজারে 'সেবা ডেন্টাল কেয়ার’ প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন তিনি। অথচ নেই কোনো চিকিৎসা সনদ, এমনকি নেই মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল, বিএমডিসির নিবন্ধন অথচ নামের আগে ডা. পদবী ব্যবহার করেন তিনি। প্রতিদিন বিভিন্ন গ্রামের মানুষরা দোকানটিতে আসছেন দাঁতের চিকিৎসা নিতে।

সরেজমিনে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে দাঁতের ফিলিং, স্কেলিং, লাইট কিউর, ফিলিং ক্যাপ, দাঁত ওঠানো, দাঁত বাঁধানোর সব কাজই করা হচ্ছে তার প্রতিষ্ঠানে। এমনকি নামের আগে ডা. লেখা সিল ব্যবহার করে সাদা প্যাডে প্রেসক্রিপশন লিখেও দিচ্ছেন তিনি। 

বিভিন্ন কাজে রোগীদের কাছ থেকে পাঁচশত টাকা থেকে  শুরু করে কয়েক হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছে সে। এসএসসি পাশ বলে দাবি করলেও তবে সেটির সনদপত্রও দেখাতে পারেননি তিনি।

দাঁতের সব রকম চিকিৎসা চলে ভূয়া দাঁতের ডাক্তার আবু বক্কর সিদ্দিক এর গড়ে তোলা এই প্রতিষ্ঠানে। আবার দেখা যায় কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই দাঁতের নানারকম ঔষধ ব্যবস্থাপত্রে লিখে দিচ্ছেন তিনি। দিচ্ছেন অ্যান্টিবায়োটিক মেডিসিন আবার কখনো করছেন ঝুকিপূর্ণ দাঁতের সার্জারি, এতে রোগীদের প্রাণ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যক্তি বলেন, ‘তার বড় ভাইয়ের সাথে তাকে প্রায়ই দেখতাম। হঠাৎ করে কয়েক বছর আগে বিদেশ চলে যান তার বড় ভাই। এরপর সে প্রতিষ্ঠান খুলে কোনো সার্টিফিকেট ছাড়াই। নামের আগে ডা. বসিয়ে দাঁতের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন সাধারণ মানুষদের।

এলাকার আরেকজন বাসিন্দা বলেন, প্রতি বৃহস্পতিবার ও রোববার হাটবারে সকাল থেকে রাত অব্ধি নানা বয়সের মানুষ তার নিকট ভীড় করে দাঁতের চিকিৎসকা নেয়ার জন্য। শুনেছি হঠাৎ করেই সে নামের আগে ডা. পদবী ব্যবহার করে নিজেকে জাহির করেন। 

তিনি আরও বলেন, হঠাৎ করে ডাক্তার বনে যাওয়া দেখে আমরাও অবাক হয়েছি তবে জানতাম না তার কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই, আমাদের এলাকাবাসীর দাবি তার বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষকে তার হাত থেকে রক্ষা করা।

ভুয়া দাঁতের ডাক্তার, আবু বক্কর সিদ্দিক নিজের দোষ স্বীকার করে বলেন, ‘আমি কোনো দাঁতের চিকিৎসক না, আমার কোনো সার্টিফিকেট নেই।নওগাঁ সিভিল সার্জন অফিস থেকেও নিবন্ধন নেই আমার তবে আমরাই একটা সংগঠন বানাতে চেয়েছিলাম। বড় ভাই এর কাছ থেকে শিখেছে, তিনি বিদেশ চলে যাওয়ার পড়ে আমি প্রতিষ্ঠান দিয়েছি ,আমি কোনো দাঁতের ডাক্তার নই।’ 

এ বিষয়ে হাঁসাইগাড়ি ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান  জানান, সে প্রায় অনেক বছর ধরে ডাক্তারি করে। তার সার্টিফিকেট (আরএমপি) আছে মনে হয়, চিকিৎসাও ভালোই।

সার্টিফিকেট ছাড়া কিভাবে ডাক্তার হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সাটিফিকেট লাগবে ঠিক আছে তবে তার চিকিৎসা ভালো। ইউএনও মহোদয় আমাকে ম্যাসেজ পাঠিয়েছে আমি তার সার্টিফিকেটটা দেখবো এখন। ডেন্টালে আমি দেখি অনেক মানুষ তার কাছে ভিড় করে তবে ভুল চিকিৎসার জন্য যদি ক্ষতি হয় এটাও বিষয়।  ইউএনও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।’ 

এ বিষয়ে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুনির আলী আনন্দ মুঠোফোনে বলেন, এমবিবিএস ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারবে না। গ্রাম্য চিকিৎসক হয়ে থাকলে গ্রাম্য চিকিৎসক লিখতে পারে সেটা আইনে বলায় আছে। ভুয়া ডাক্তার হলে আমরা তো কিছু করতে পারবো না, তবে কোর্টে পাঠাতে পারবো। সেটা কোর্টের ব্যাপার। সে যদি ভুয়া হয় ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করতে হবে।

;

ফেনীতে চলতি বছরে সর্বোচ্চ ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীতে চলতি বছরে সর্বোচ্চ ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলায় ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়ছেন জেলা আবহাওয়া অফিসের উচ্চমান পর্যবেক্ষক মুজিবুর রহমান।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বার্তা২৪.কমকে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫ মিনিট থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলায় ৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সারাদিন আকাশ মেঘলা ছিল। আজ শুক্রবার (২৯ মার্চ) জেলায় অস্থায়ী বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে গত কয়েক দিনের গরমের পর বৃষ্টিতে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি দেখা গেছে। তবে বিভিন্ন উপজেলায় বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতাও দেখা দিয়েছে। কিছু সড়কে ​​​​​​​অবৈধ মাটি পরিবহনের সময় ট্রাক থেকে মাটি পড়ে তা বৃষ্টির পানিতে কাদায় পরিণত হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন স্থানীয় লোকজন। এছাড়াও খেটে-খাওয়া মানুষজন ও বিভিন্ন শপিং মল ও বিপনী বিতানের ব্যবসায়ীরা পড়েছেন দুর্ভোগে।

ফেনী শহীদ মার্কেটের বস্ত্র ব্যবসায়ী ফাহিম রিমু বলেন, ঈদ পর্যন্ত এখন প্রতিটি দিনই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখন বেচাবিক্রির সেরা সময়। বৃষ্টিতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। দোকানে ক্রেতাও খুব একটা নেই। মানুষজন বৃষ্টিতে সচারাচর ঘর থেকে বের হতে চায়না।

আবুল কাশেম নামে এক রিকশাচালক বলেন, রমজানে সারাদিন রোজা রেখে এমন আবহাওয়া স্বস্তির। তবে বৃষ্টির জন্য বাইরে রিকশা চালিয়ে কষ্ট হয়েছে। অন্যান্য দিনের মতো রাস্তায় তেমন যাত্রী ছিল না।

অন্যদিকে বৃষ্টির কারনে ফসলের বিভিন্ন ক্ষতির আশংকা করছেন কৃষকরা। তবে কৃষি অফিস দিচ্ছে স্বস্তির খবর।

ফেনী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, জমিতে পানি না জমলে বৃষ্টিতে ফসলের খুব বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। বরং আউশ আবাদের জন্য এই সময়ের বৃষ্টি কৃষকের উপকার হবে। তবে সূর্যমুখী ও ভুট্টার গাছ নুয়ে পড়তে পারে। এছাড়া নিচু জমির পানি না নামলে ফলন কম হবে।

;

কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিন ব্যবহারে কমেছে উৎপাদন খরচ 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ায় এ বছর গমের ফলন ভাল হয়েছে। কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিনে গম কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। হার্ভেস্টার মেশিন ব্যবহারে উৎপাদন খরচও কমেছে। ফলে কৃষকের মুখে ফুটেছে সোনালি হাসি। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, শ্রমিক সংকট সহ নানা কারণে একসময় গম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন কুষ্টিয়ার কৃষকরা। 

সরকারি প্রণোদনায় কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিন দিয়ে অর্ধেক খরচে কম সময়ে গম কাটা ও মাড়াই করতে পারায় গম চাষ বেড়েছে কুষ্টিয়ায়। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, এবছর জেলায় ১২ হাজার ৭১৬ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সীমান্তবর্তী দৌলতপুর উপজেলায় চাষ হয়েছে ৬ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমিতে। 

মেশিনে প্রতি বিঘা জমির গম কাটা মাড়াইয়ে কৃষকের খরচ হচ্ছে মাত্র ১ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা; যা শ্রমিক দিয়ে গম কাটা ও মাড়াইয়ের মজুরির অর্ধেকেরও কম। ফলে কৃষকদের গম চাষে আগ্রহ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর গমের ফলন ভাল হয়েছে।

প্রতি বিঘা জমিতে গমের ফলন হচ্ছে ১৮ মণ থেকে ২০ মণ হারে। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কৃষকের আয় হচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি। এখন গম কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। 

দৌলতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের চুয়ামল্লিকপাড়া গ্রামের কৃষক রানা হোসেন জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবছর গমের ফলন ভাল হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে গমের ফলন হচ্ছে গড়ে ১৮ মণ থেকে ২০ মণ হারে। 

কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিনে গম কাটা ও মাড়াইয়ে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমেছে। ফলে কৃষকদের গম চাষে আগ্রহ বেড়েছে। 

মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের খয়েপুর এলাকার কৃষক তিন কৃষক (পার্টনার প্রোগ্রাম) এর আওতায় দুই একর জমিতে বারি-৩০ গম আবাদ করেছেন। এতে করে গম আবাদে তুলনামূলকভাবে খরচ কম হওয়ায় এবং লাভ বেশি হওয়ায় আগামীতে আরও বেশি করে গমের আবাদ করবেন। 

মিরপুর উপজেলা কৃষি অফিসের অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মতিয়র রহমান জানান, ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল এ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ এ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার প্রোগ্রাম) এর আওতায় আমাদের উপজেলার আমলা ব্লকে আব্দুল হালিম, আব্দুস সাত্তার ও মোস্তফা কামাল তারা যৌথভাবে দুই একর জমিতে গমের আবাদ করেন। এতে আমরা সার বীজ প্রণোদনা করেছি। পাশাপাশি কৃষি অফিসের মাধ্যমে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে গম কাটা ও মাড়াই যন্ত্র প্রদান করেছি।’  

এদিকে সরকারি প্রণোদনায় পাওয়া কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন ১৫ বিঘা থেকে ২০ বিঘা জমির গম কাটা ও মাড়াই করছেন মেশিন মালিকরা। এতে তাদের উপার্জন বেড়েছে।

উন্নতজাত সরবরাহ, প্রশিক্ষণ, প্রদর্শনী ও প্রণোদনা প্রদানসহ সবধরনের সুবিধা দেওয়ায় কৃষকরা গম চাষে আগ্রহী হয়েছেন এবং এ বছর গমের ফলন ভাল হয়েছে বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধিতে দেশ হবে সমৃদ্ধ। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন কৃষকদের সবধরনের সুযোগ সুবিধার।

;