একটি বকের জীবন বাঁচানোর গল্প
প্রতিদিন সন্ধ্যার ঠিক আগে শত শত পানকৌড়ি আর সাদা বকের আসর জমে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণের গাছে গাছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এই আবাসস্থলে ছুটি আসা একটি বক ঘুড়ির সুতায় আটকে যায়। বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির দেয়ালে সাঁটানো পত্রিকা পড়তে এসে বকের আত্মকান্না শুনে চোখ যায় সংবাদকর্মী রাসেল হোসেনের৷
পত্রিকা পড়া বাদ দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ছুটে আসেন বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির ভিতরে বসা সিনিয়র সাংবাদিক সুশান্ত ঘোষের কাছে। সুতায় আটকে পড়া বকের কথা শুনে সাথে সাথে ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দেন সুশান্ত ঘোষ।
ফোনের ১০/১২ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ফায়ার ফাইটারম্যান নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে।
শুরু হয় চাম্বল গাছের মগডালে ঘুড়ির সুঁতায় আটকে যাওয়া বকটিকে বাঁচানোর উদ্ধারযজ্ঞ।
অভিযান দেখতে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে উৎসুক জনতা ভিড়। সবাই মোবাইল ও ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করে। অনেকেই প্রার্থনা করে বকের জীবনটা ভিক্ষা চান। প্রায় পৌনে একঘণ্টা শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান শেষে বকটিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
সাথে সাথে নাসির উদ্দিন নামে এক ফায়ার ফাইটারম্যান নিজের মুখ দিয়ে মুমূর্ষু বকটির মুখে শ্বাস-প্রশ্বাস দেন।
বকটির দ্রুত চিকিৎসার জন্য প্রাণীসম্পদ বিভাগের ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে আরেক সংবাদকর্মী জহির রায়হান।
ডাক্তার আসার আগেই ২/৩ মিনিট জীবিত থাকার পর, সবাইকে বিমর্ষ করে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়ে বকটি।
বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার হাসান আলী উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, বক নয়, একটি জীবনকে বাচাঁনোর জন্য এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের প্রতি সহায় হয় বলেই আমরা চেষ্টা করি দুর্ঘটনা কবলিতদের উদ্ধার করতে৷
পড়ে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির পিছনে মাটি খুঁড়ে মৃত বকটিকে পুঁতে রেখে মাটি চাপা দেন ইউনিটির অফিস সহকারী উত্তম৷ এভাবে শেষ হয় একটি বকের জীবন বাচাঁনোর উদ্ধার কাহিনী।