কোটালীপাড়ায় সোমবার বসছে ‘কবি সুকান্ত মেলা’
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় আগামীকাল সোমবার (১ মার্চ) দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে কবি সুকান্ত মেলা। জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মেলাটি উদ্বোধন করবেন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন এ মেলার আয়োজন করেছে।
উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের উনশিয়া গ্রামে কবির পৈত্রিক ভিটায় এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। বিগত বছরগুলোতে ৫দিন ব্যাপী মেলা অনুষ্ঠিত হলেও এ বছর করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে একদিন এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
মেলায় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও থাকবে বাংলাদেশের বিভিন্ন নামী-দামী শিল্পীর অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বসবে গ্রামীণ মেলা। ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে মেলার সকল প্রস্তুতি। এই মেলাকে ঘিরে উপজেলা ব্যাপী বইছে উৎসবের আমেজ। উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কবির বাড়িটি সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করছে। অপরদিকে এই মেলাকে কেন্দ্র করে নবরূপে সেজেছে কবির বাড়ি ও এর আশপাশের এলাকা।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, এ মেলাকে ঘিরে উপজেলা ব্যাপী বইছে উৎসবের আমেজ। উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তি ও স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা এ মেলার আয়োজন করেছি। আগামীতেও এ মেলা যাতে অব্যাহত থাকে সে জন্য আমরা দলীয় ভাবে কাজ করে যাবো।
জেলা পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম হাজরা মন্নু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা কবির জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী যাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয় তার জন্য চেষ্টা করে আসছি। আমাদের চেষ্টা কিছুটা হলেও সার্থক হয়েছে। এ বছর আনন্দমুখর পরিবেশে মেলাটি উদযাপিত হবে।
আমতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হান্নান শেখ বলেন, আমি চাইবো সরকার কবির স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। বিশেষ করে কবির পৈত্রিক ভিটায় একটি পর্যটন কেন্দ্র ও একটি আধুনিক লাইব্রেরি গড়ে তুলে আগামী প্রজন্মের কাছে কবিকে তুলে ধরবেন।
কবি সুকান্ত স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক অশোক কর্মকার বলেন, কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ৯ বছর ধরে কবির পৈত্রিক ভিটায় আমরা মেলা করে আসছি। কবির জন্ম আগস্ট মাসে। কিন্তু আগস্ট মাস শোকের মাস থাকায় আমরা প্রতিবছর মার্চের প্রথম সপ্তাহে এ মেলার আয়োজন করে থাকি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন,স্থানীয় সুধীজনদের সহযোগীতায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসন এ মেলা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা মেলার সকল আয়োজন শেষ করেছি। আমি চাইবো প্রশাসন ও এলাকাবাসী যেন আগামীতে কবির স্মৃতি ধরে রাখার জন্য এ ধরনের গ্রামীণ মেলার আয়োজন করেন। এ ছাড়া কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের আদর্শকে বর্তমান যুব সমাজের মাঝে ছড়িয়ে দিতে আমাদের নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট কবি সুকান্ত ভট্রাচার্য্য কলকাতার কালীঘাটের মহিমা হালদার স্ট্রিটে মামা বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম নিবারন ভট্রাচার্য্য। মাতা সুনীতি দেবী। ১৯৪৭ সালের ১৩ মে মাত্র ২১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ছাড়পত্র, ঘুম নেই, পূর্বাভাস, অভিযান, হরতাল- তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। কবির প্রতিটি কবিতায় অনাচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে।