সূর্যমুখী ফুলের হাসিতেই পুলকিত কৃষক
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কৃষক বটতৈল এলাকার কৃষক জিয়ারত প্রামাণিক। তিনি তার একবিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। কৃষি অফিস বিভাগের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে এই সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন তিনি।
বৃহত্তর কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চল কৃষি উন্নয়ন অধিদপ্তরের আওতায় তেল জাতীয় ফসলের প্রযুক্তি বিস্তার ও দানা জাতীয় ফসলের প্রযুক্তি বিস্তার প্রদর্শণীর আওতায় আরডিএস-২৭৫ জাতের সুর্যমুখী ফুলের আবাদ করেছেন।
জেলায় ২০ হেক্টর জমিতে হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ৩৩ হেক্টর জমিতে। এসব জমির অধিকাংশতেই গাছে ফুল ধরেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শতভাগ জমিতেই ভালো বীজ পাওয়ার আশা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সূর্যমুখীর বাগানগুলো এখন প্রকৃতপ্রেমীদের উপভোগের বিষয় হয়ে উঠেছে। দলে দলে তারা ছুটে চলছেন এসব বাগানে। ছবি তুলে পোস্ট করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। পড়ন্ত বিকেলে সূর্যমুখীর বাগানগুলো প্রকৃতিপ্রেমীদের ভিড় থাকে বেশি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সূর্যমুখীর চাষের ৯০-১০৫ দিনের মধ্যেই কৃষকরা ফুল থেকে বীজ ঘরে তুলতে পারেন। প্রতি বিঘা জমিতে ৭-৮ মণ বীজ পাওয়া যাবে। বিঘা প্রতি কৃষকরা ২০-২৫ হাজার টাকার বীজ বিক্রি করতে পারেন। সূর্যমুখীর বীজ থেকে যে সয়াবিন তেল পাওয়া যাবে তাতে কোনও ক্ষতিকর কোলেস্টোরল নেই।
সদর উপজেলার বটতৈল ইউনিয়নের বটতৈল গ্রামের কৃষক জিয়ারত প্রামাণিক জানান, তারা দুই ভাই প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে ধানের পাশাপাশি সবজীর আবাদ করেন। তবে এবারই প্রথম কৃষি অফিসারের পরামর্শে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। এক বিঘা জমির জন্য কৃষি অফিস থেকে তাদের বিনামূল্যে সূর্যমুখীর বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিনিয়ত পরামর্শ দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে গাছে ফুল দেখা দিয়েছে। ফুল দেখতে প্রতিদিন শত শত লোক ভিড় করেন তার জমিতে।
শহরের বাসিন্দা বিপুল হোসেন পরিবার পরিজন নিয়ে এই বাগানে এসেছিলেন। তিনি জানান, সূর্যমুখী ফুলের কথা শুনে পরিবার নিয়ে এসেছেন। মাঠ ভরা সূর্যমুখী ফুল দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় তাদের।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহারুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আমার আওতাধীন প্রথমবারের মতো বৃহত্তর কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চল কৃষি উন্নয়ন অধিদপ্তরের আওতায় তেল জাতীয় ফসলের প্রযুক্তি বিস্তার ও দানা জাতীয় ফসলের প্রযুক্তি বিস্তার প্রদর্শণীর আওতায় আরডিএস-২৭৫ জাতের সুর্যমুখী সূর্যমুখীর চাষ করা হয়েছে। চাষের তদারকি করা হচ্ছে নিয়মিত। আশা করছি কৃষকরা ভালো ফলন পাবেন।’
কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘জেলার ছয়টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এবার ৩৩ হেক্টর জমিতে হাইসান-৩৩ জাত ও আরডিএস-২৭৫ জাতের সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। যদিও লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হেক্টর। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।’