স্বপ্ন দেখছেন স্বপ্না!
পরিবারের গণ্ডি ছেড়ে আজ সবার কাছে অনুপ্রেরণার এক অনন্য নাম। শত প্রতিকূলতার সঙ্গে সংগ্রাম করে নিজের ও পরিবারের সদস্যেদের ভাগ্যে নির্ধারণ করতে তিনি পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছেন ব্যবসা। সংগ্রামী এই সফল নারীর নাম স্বপ্না ঘোষ (৩০)।
স্বপ্না ঘোষ কুষ্টিয়ার চৌড়হাসের রঞ্জিত বসুর ছোট মেয়ে। বিবাহসূত্রে এখন তিনি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের আমতলা গ্রামের স্বপন ঘোষের স্ত্রী। স্বপ্না এখন স্বপ্ন দেখছেন স্বাবলম্বী হওয়ার। স্বনির্ভরতারই প্রতিচ্ছবি স্বপ্না ঘোষ।
সোমবার (৮ মার্চ) দুপুরে কথা হয় স্বপ্নের সাথে। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ২০০৫ সালে তার বিয়ে হয় তার। বিয়ের পরই মুখোমুখি হন নানা ঘাত-প্রতিঘাতের। সংসার চালাতে গিয়ে টানাপোড়েন আর অভাবের মধ্যে পড়ে যান তিনি। পরে দীর্ঘ ৯ বছর পর আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য স্বপ্না ঘোষ বেছে নেন ব্যবসা। সিদ্ধান্ত নেন পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোঁটানোর জন্য ব্যবসাই হবে তার অর্থ উপার্জনের সিড়ি।
যাত্রা শুরু করেন তিনি। ২০১৫ সালের শুরুতে মাত্র ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ‘সন্ধী কালেকশন’ নামে একটি শাড়ি, থ্রি-পিস, কসমেটিক্সসহ শিক্ষার্থীদের শিক্ষার বিভিন্ন উপকরণের সমন্বয়ে বালিয়াকান্দিতে মনি মুকুর কিন্ডার গার্টেনের সামনে একটা দোকান বরাদ্দ নেন। এরপর থেকেই তার পথচলা শুরু। এখন তিনি স্বাবলম্বী। সাফল্যের কারণে স্বনির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠেছেন তিনি।
প্রতি মাসের খরচ বাদে এখন তার আয় হয় ১০-১২ হাজার টাকা। তাছাড়াও দোকানের পুঁজি এখন প্রায় ৭-৮ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। স্বপ্না ঘোষের এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে। মেয়ের নাম সম্প্রীতি ঘোষ সন্ধী। সে বালিয়াকান্দি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আর ছোট ছেলের নাম স্বপ্নীল ঘোষ (৪) । সন্তানের লেখাপড়া সবই চলে দোকানের আয় থেকে।
স্বপ্না ঘোষ বার্তা২৪.কমকে বলেন, পুরুষ শাষিত এই সমাজে নারীদের ব্যবসা করাটা খুবই কষ্টের। নানা ঘাত-প্রতিঘাত এবং সমাজের কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যকে উপেক্ষা করে আজ আমি সফল।
এ সময় তিনি আরো বলেন, নারীদের ঘরে বসে থাকলে চলবে না। নারীদেরকে এগিয়ে যেতে হবে নিজেদের মেধা ও শ্রম দিয়ে।