ভাসানচরে জাতিসংঘ প্রতিনিধিদল
নোয়াখালীর ভাসানচরে জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধি দল পৌছেঁছেন। বুধবার সকালে প্রতিনিধি দলটি চট্রগ্রাম থেকে রওয়ানা হয়ে দুপুর ২টায় ভাসানচর এসে পৌঁছান। ১৮ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার কাজেযুক্ত জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
ভাসানচরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. মাহে আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুপুরে ভাসানচরে এসে প্রতিনিধি দল ক্লাস্টারের (গুচ্ছ গ্রাম) ফোকাল মাঝিদের সাথে পরিচিতি সভা করেন। এরপর বিভিন্ন কাস্টার পরিদর্শন করেন। প্রতিনিধি দল ৩ দিন ভাসানচরে অবস্থান করবেন। শনিবার সকাল ১০টায় তাদের ভাসানচর ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, ভাসানচর অবস্থানকালে তারা রোহিঙ্গাদের প্রয়োজনের বিষয়ে খোজঁখবর নেবেন। সেখানে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলবেন। দ্বীপটিতে এই প্রথম জাতিসংঘের কোন প্রতিনিধি দল সফর করছে।
এর আগে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ওআইসির সহকারী মহাসচিব ইউসেফ আল ডোবেয়ার নেতৃত্বে ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল নোয়াখালীর ভাসানচর পরিদর্শন করেন।
ওআইসির ৬ জন সদস্য সহ মোট ১৮ জন ভাসানচর ছিলো ওই দলে। এসময় তারা ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের জন্য তৈরি ক্লাস্টার (গুচ্ছ গ্রাম), আশ্রয় কেন্দ্রসহ বিভিন্নস্থান পরিদর্শন করেন এবং রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলেন।
সফরকালে তারা রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় সকল ক্লাস্টারের মাঝি ফোকাল মাঝিদের নিয়ে ওআইসি প্রতিনিধিদল সম্মেলন করেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের ফলে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে আসে আরো কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি শরণার্থী ক্যাম্পে রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় সাড়ে ১১ লাখ। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের চাপ সামলাতে সরকার এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসমানচর স্থানান্তরের উদ্যোগ নেয়। সে প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ধাপে ধাপে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য ২০১৯ সালের ১৯ এপ্রিল হাতিয়ায় মেঘনা নদীর বুকে জেগে উঠা ভাসানচরে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ শেষ হয়। ২০১৯ সালের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও আগেই শেষ হয় সকল অবকাঠামো নির্মাণ। হাতিয়া থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে ১৩ হাজার বর্গ কিলোমিটার দ্বীপের এ আশ্রয়ন প্রকল্পে ১২০টি গুচ্ছগ্রাম রয়েছে। এতে ১ লাখ রোহিঙ্গার বাসযোগ্য করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৩ হাজারের অধিক রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়।