তিস্তা চুক্তি দ্রুত সম্পাদনের জোর দাবি শেখ হাসিনার
তিস্তার পানিবন্টনের “অন্তর্বর্তী চুক্তি” দ্রুত সম্পাদনের জোর দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৭ মার্চ) বাংলাদেশ-ভারত প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক শেষে হোটেল সোনারগাঁওয়ে এ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি জানান, যৌথ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার ওপর বাংলাদেশের অলংঘনীয় অধিকারের বিষয়টি বরাবরের মতোই জোরালোভাবে উত্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি জানান, চুক্তিটি দ্রুত স্বাক্ষরে ভারত আন্তরিকভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ এবং এ বিষয়ে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা ও দুধকুমার- এই ছয়টি ট্রান্স বাউন্ডারি নদীর পানিবণ্টনের অন্তর্বর্তী চুক্তির ফ্রেমওয়ার্ক চূড়ান্তকরণের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে দুই দেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। "সুরমা-কুশিয়ারা সেচ প্রকল্পে” কুশিয়ারা নদীর পানি ব্যবহারের উদ্দেশ্যে রহিমপুর খালের অবশিষ্টাংশ খননের আবশ্যকতার ওপর গুরুত্বারোপ করে “কুশিয়ারা নদীর পানির জন্য প্রস্তাবিত সমঝোতা স্বাক্ষরে ভারতের দ্রুত সম্মতি কামনা করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে একটি আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে ২০২২ সালে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ড. মোমেন বলেন, আপনারা জানেন, ভারত স্বাধীন বাংলাদেশকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি প্রদান করেছিল ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১। এজন্য ৬ ডিসেম্বরকে “মৈত্রী দিবস” হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। যৌথ উদযাপনের ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলমান রয়েছে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালালি ক্ষেত্রে দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতা, বিশেষতঃ নেপাল ও ভুটানকে সাথে নিয়ে উপআঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আপনারা জানেন, ব্যয় সাশ্রয়ের নিরীখে নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত জলবিদ্যুৎ ব্যবহারে আগ্রহী বাংলাদেশ। ভুটানের সাথে সদ্য সম্পাদিত যৌথ বিবৃতিতে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রসংগটি উঠে এসেছে। আমরা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এলাকায় বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে চাই। এলওসির আওতাধীন প্রকল্পগুলোকে আরো বেগবান করার ব্যাপারেও দুই প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করেছেন। এ বিষয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটিকে তারা প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন।
নিরাপত্তা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতার বিষয়ে উভয় নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা বিধানে বাংলাদেশের অকুণ্ঠ সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছে ভারত। সীমান্তে একজন বাংলাদেশিও যেন কোনো কারণেই বিএসএফ কর্তৃক নিহত না হন, সেটি নিশ্চিত করার জোরালো দাবী উত্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সীমান্তে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাবার নির্দেশনা দিয়েছেন দুই প্রধানমন্ত্রী। ঝুঁকিপূর্ণ চলাফেরা পরিহার করতে সীমান্তবর্তী এলাকার নাগরিকদেরকে সচেতন করে তোলার কার্যক্রম চালু করা হবে।