তারাবি-ইফতার-সেহেরিতে লোডশেড নয়
রমজানে ইফতার, তারাবি ও সেহরির সময়ে লোডশেড না করা, লোডশেড করার প্রয়োজন হলে পূর্বেই জনসাধারণকে অবহিত করতে হবে। টেকনিক্যাল কারণে বা অন্য কোন কারণে যেন লোডশেড না হয় সে দিকে সজাগ থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগ।
রোববার (৪ এপ্রিল) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আসন্ন রমজান ও চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির সার্বিক বিষয় নিয়ে ভার্চুয়াল এই সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সভা থেকে বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়। সকল বিতরণ সংস্থা/ কোম্পানিকে ওভারলোডেড ট্রান্সফরমার পরীক্ষা করে প্রতিস্থাপন করতে হবে, স্টোরে পর্যাপ্ত ট্রান্সফরমার মজুদ রাখা, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন কার্যক্রম জোরদার করা, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা, বিদ্যুতের অপচয় রোধে সিএফএল বাল্বের পরিবর্তে এলইডি বাল্ব প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা, সুপার মার্কেট, পেট্রোল পাম্প ও সিএনজি গ্যাস স্টেশনে প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাতি ব্যবহার না করা।
আসন্ন রমজান মাসে দোকানপাট, মার্কেট ও বিপণী বিতানসমূহ খোলা রাখার বিষয়ে বিদ্যমান বিধি-বিধান আইন অনুসরণ করা, ইফতার ও তারাবির সময় শপিংমল, ডিপার্টমেন্টাল স্টের ও অন্যান্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে এসি ব্যবহার সীমিত রাখা, সকল দোকান মালিকগণকে মার্কেটের অভ্যন্তরীণ বৈদ্যুতিক ইকুইপমেন্টসমূহ পরীক্ষা করা, বিএসটিআই এর প্রমাণ অনুযায়ী তার/ইকুইপমেন্ট বাজারজাতকরণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা/আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয়ছে।
সভায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিদ্যুতের চাহিদা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপন করেন। চলতি গ্রীষ্মকালে পিক আওয়ারে ১৪,৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা প্রাক্কলন করা হয়েছে। গ্যাসের সম্ভাব্য চাহিদা থাকবে ১৫৫০ এমএমসিএফডি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম বলেন, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে। আমাদের সক্ষমতা থাকলেও অহেতুক বিদ্যুৎ অপচয় করা যাবে না। যারা বিদ্যুৎ উৎপাদন বা অন্যান্য জরুরি কাজে নিয়োজিত তাদের দ্রুত করোনার টিকা নিতে হবে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, বিল সংক্রান্ত গ্রাহক হয়রানি যেন না হয়। ওভারলোডের সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে হবে। বিতরণ কার্যক্রমে গ্রাহক সম্পৃক্ততা বাড়ানো প্রয়োজন। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চাহিদা মতো গ্যাসের সরবরাহ করার জন্য পেট্রোবাংলাকে নির্দেশ দিয়ে বলেন প্রয়োজনে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।
ভার্চুয়াল এই সভায় অন্যান্যের মাঝে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)-এর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর চেয়ারম্যান মে.জে. মঈন উদ্দিন (অব.), পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এবিএম আব্দুল ফাত্তাহ, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দপ্তর প্রধানগণ সংযুক্ত ছিলেন।