মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ যমজ ভাইয়ের পাশে এলজিআরডি মন্ত্রী
‘আমার যমজ দুই ছেলে আরিফুল ইসলাম ও শরিফুল ইসলাম এবারের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। সরকারি দু’টি মেডিকেলে তারা পড়ার সুযোগ পাওয়ায় পরিবারের সবাই আনন্দে ভাসছিলো, মনে হয়েছিলো আমি পৃথীবির সবচেয়ে গর্বিত বাবা। এমন আনন্দের মধ্যে হঠাৎ মনে হলো- কীভাবে তাদের চিকিৎসক বানাবো, আমিতো এক অসহায় বাবা। দিন এনে দিন খাই। কিন্তু এখন আমি আরিফ-শরিফের পড়াশোনা নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চিন্ত। কারণ, তাদের দায়িত্ব নিয়েছেন আমাদের স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম মহোদয়। তিনি আমাদের এলাকার এমপি এজন্য আসলেই আমরা ভাগ্যবান। অতীতেও তিনি আমার ছেলেদের পড়াশোনার জন্য অনেক সহযোগিতা করেছেন।’
শুক্রবার বিকেলে কথাগুলো বলছিলেন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের হাসনাবাদ ইউনিয়নের মানরা গ্রামের অটোরিকশা চালক বিল্লাল হোসেন।
অটোচালকের যমজ দুই ছেলে মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেলেও অর্থনৈতিক সমস্যায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে, এমন খবর জানতে পেরে বৃহস্পতিবার রাতে ওই অটোচালকের ঘরে নগদ এক লাখ টাকা শুভেচ্ছা উপহার পাঠিয়েছেন এলজিআরডি মন্ত্রী। পাশাপাশি তাদের চিকিৎসক হয়ে উঠা পর্যন্ত পড়াশোনার যাবতীয় বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। একদিকে দুই ছেলে সাফল্যের সঙ্গে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া, আবার অন্যদিকে ছেলেদের পড়াশোনার দায়িত্ব মন্ত্রীর নেওয়া। সবকিছু মিলিয়ে ওই অটোচালকের ঘরে এখন উৎসবের আমেজ। এলাকার মানুষও এজন্য মন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা যুবলীগ সদস্য ও এলজিআরডি মন্ত্রী উন্নয়ন সমন্বয়ক মো.কামাল হোসেন বলেন, মন্ত্রী মহোদয় দেশের কাজে ব্যস্ত থাকার পরও নিজ এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখের সকল খবরই রাখেন। মন্ত্রী বলেছেন- অদম্য মেধাবি এই দুই ভাইয়ের পড়াশোনা অর্থের কারণে ব্যাঘাত ঘটতে পারে না। তাই আরিফ-শরিফের পড়াশোনার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। আমাদের মাধ্যমে এখন ভর্তিসহ যাবতীয় কাজের জন্য এক লাখ টাকা পাঠিয়েছেন। মেধাবি এই ছাত্রদের পড়াশোনা নিয়ে তাদের পরিবার আর কোন চিন্তা করতে হবে না। অতীতেও মন্ত্রী মহোদয় তাদের সহযোগিতা করেছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে, মন্ত্রীর এমন সহযোগিতা ও ভালোবাসা পেয়ে আরিফ-শরিফও এখন মহা খুশি। তারা মানবিক চিকিৎসক হয়ে মন্ত্রীর মতো দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করতে চায়। পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে মন্ত্রীর প্রতি।
বৃহস্পতিবার রাতে মন্ত্রীর উপহার তুলে দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লা জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো.আমিরুল ইসলাম, এলজিআরডিমন্ত্রী উন্নয়ন সমন্বয়ক মো.কামাল হোসেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো.কামাল হোসেন প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় উপজেলার বাইশগাঁও ইউনিয়নের মান্দারগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পান আরিফ ও শরিফ। এরপর দুইজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় উচ্চ মাধ্যমিকে তারা ভর্তি হন কুমিল্লা সরকারি সিটি কলেজে। সেখানেও বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পান যমজ এই দুই ভাই। এবারের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, আরিফ সারাদেশে ৮২২তম হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ আর শরিফ ১১৮৬ তম হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। ইতিমধ্যে এই দুই শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়িয়েছেন জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন ব্যক্তিরা।