চলছে যাত্রীটানা মোটরবাইক
প্রথম ধাপে জারি করা লকডাউনের মধ্যেই শহর জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ভাড়ায় যাত্রীটানা মোটরবাইক। পুলিশের কঠোর তল্লাশি উপেক্ষা করেও এসব বাইক যাত্রী বহন করছে। পুলিশি চেকিং থেকে বাঁচতে এসব মোটরবাইকের চালকরা অধিকাংশ সময় মূল সড়ক বাদে সরু গলি ও ভেতরের রাস্তা ব্যবহার করছেন। পুলিশের চেকপোস্টে পড়লে কখনো কখনো জরিমানাও গুণতে হচ্ছে তাদের।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডি ১৫ নম্বর বাসস্ট্যান্ড, সাইন্সল্যাব মোড়, শাহবাগ মোড়, কারওয়ান বাজার, সার্ক ফোয়ারাসহ প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দেখা গেছে প্রকাশ্যে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছে ভাড়ায় চালিত এসব মোটরবাইক। যাত্রীদের বাহন সংকটের কারণে এসব বাইকে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে বাধ্য হয়েই।
দুপুর একটায় ভাড়ায় চালিত মোটরবাইকে করে মিরপুর থেকে কারওয়ান বাজার এসেছেন একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা শামীম আহমেদ। তিনি বলেন, সর্বোচ্চ ১২০ টাকার ভাড়া ৩০০ টাকা দিয়ে আসতে হলো। একে তো পয়সা খরচ হচ্ছে বেশি তার ওপর আবার পুলিশি চেকপোস্ট তো আছেই। পুলিশি চেকপোস্ট কিভাবে পার হলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাইক ভাড়া নেওয়ার সময় চালক জানিয়ে দিয়েছিলো পুলিশ জিজ্ঞেস করলে বলবেন আমরা এক সাথেই থাকি। আমার অফিসে লেইট হয়ে যাওয়ায় ইনি আমাকে ড্রপ করতে যাচ্ছেন। এর জন্য আমরা একে অপরের সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নিয়েছি। যদিও বিষয়টা অনিরাপদ তবুও কাজের প্রয়োজনে এমনটা করতেই হচ্ছে।
ধানমন্ডি ১৫ নম্বর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নর্দানের গলিতে সকাল থেকেই জটলা করে এসব অপেক্ষারত ভাড়ায় চালিত বাইকারদের হাঁকডাক দিয়ে যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দেখা গেছে। তাদের একজন জামিলুর রহমানের সাথে কথা হলে বলেন, এটিই আমার বর্তমান পেশা। বাইক নিয়ে বের না হলে রোজগার বন্ধ। রোজগার বন্ধ থাকলে পরিবার নিয়ে চরম বিপাকে পড়তে হবে। তাই পুলিশি জরিমানা, হয়রানি ও যাত্রীদের দুর্ব্যবহার উপেক্ষা করেই জীবনের রিস্ক নিয়ে রাস্তায়। এই কয়দিনে একবার জরিমানা ও দুই বার পুলিশকে টাকাও দিতে হয়েছে। লকডাউন শুরুর দুই দিন আমিসহ অনেকেই যাত্রী না পেয়েই ঘরে ফিরেছে।
শাহবাগ মোড়ে কথা হয় বাইক চালক মিথুন কর্মকারের সাথে। তিনি বলেন, পুলিশের ভয়ে মূল সড়ক এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি সব সময়। তবুও মাঝে মাঝে চেকপোস্ট এড়ানো যায় না। পুলিশের সামনে পড়লেই কাগজপত্র নাই বইলা হাজার হাজার টাকার মামলা বা জরিমানা করতেছে। একটা মামলা দিলেই অন্তত তিন দিনের ইনকাম চলে যায়। লকডাউনে অ্যাপ বন্ধ থাকায় এভাবে চুক্তিতে যাওয়া লাগতেছে। পুলিশকে রিকোয়েস্ট করলেও শুনছে না।
ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোডের উনিশ নম্বর চেকপোস্টে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সকালে যান বাহনের চাপ থাকে অনেক। তখন অফিস আওয়ার হওয়ায় খুব একটা চেক করার সু্যোগ থাকে না। তবে ১১টার পর থেকে যতগুলো বাইক চেক করা হয়েছে তার অধিকাংশই ক্ষ্যাপে যাত্রী টানে। তাদের জরিমানাও করা হচ্ছে। প্রতিদিনই এমন হয় কিন্তু এতে কোন লাভ হচ্ছে না। এসব মোটরবাইক ঠেকানো যাচ্ছে না।