নারী চিকিৎসকের বিচার দাবি করেছে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন
সরকারি আদেশ অনুযায়ী দেশে চলছে কঠোর লকডাউন। লকডাউনের ৫ম দিন ঢাকার এলিফ্যান্ড রোডে এক চিকিৎসকের পরিচয়পত্র চাওয়ায় তিনি ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করেছেন। তাই বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন ওই নারী চিকিৎসকের বিচারের দাবি করেছে।
রোববার (১৮ এপ্রিল) এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ এক চিকিৎসকের গাড়ি আটকে পরিচয়পত্র দেখতে চান। পরে ওই চিকিৎসক বলেন, তিনি পরিচয় পত্র বাসায় রেখে এসেছেন। একপর্যায়ে পুলিশের সাথে তার বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। ডা. সাঈদা শওকত জেনি নামের ওই চিকিৎসক হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক। পুলিশের সাথে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তিনি রেগে যান। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি পুলিশকে বলছেন- করোনায় জীবন গেছে কয়জন ডাক্তারের, আর আপনারা কতজন মরছেন। ডাক্তারদের আবার কিসের মুভমেন্ট পাস? ডাক্তার হয়রানি বন্ধ করুন। এ সময় তিনি নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবি করে বলেন, আমি বিএসএমএমইউ অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, বীর বিক্রমের মেয়ে। তারপর নিউমার্কেট থানার ওসি এসএম কাইয়ুম বলেন, আপনি আমাদের ধমক দিচ্ছেন কেন? আপনি একা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না আমিও মুক্তিযোদ্ধার ছেলে। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে চিকিৎসক জেনি বলেন, তুই মেডিকেলে চান্স পাস নাই, তাই তুই পুলিশ। আমি চান্স পাইছি তাই আমি ডাক্তার। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে ওই চিকিৎসক তার কাছে পুলিশ সদস্যদের ক্ষমা চাওয়ার দাবি করেন। পরবর্তীতে নারী চিকিৎসকের অন্য সহকর্মীরা ঘটনাস্থলে এলে বিষয়টি সমাধান হয়।
এ ঘটনায় সোমবার (১৯ এপ্রিল) পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে বলেছে, জনৈক চিকিৎসকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাঁকে পরিচয়পত্র দেখাতে বলা হয়েছিল। এ সময় তিনি অত্যন্ত ন্যক্কারজনকভাবে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এই আচরণ একজন পেশাদার ও সচেতন নাগরিকের কাছে কাম্য নয়। তিনি শুধু ওই পুলিশ সদস্যদের অপমান করেননি, গোটা পুলিশ বাহিনীকে কটাক্ষ ও হেয় করেছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ১৪ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপনে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা সেবাসহ অন্যান্য কাজে জড়িত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দাপ্তরিক পরিচয়পত্র আবশ্যিকভাবে ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তিনি ওই নির্দেশনা অমান্য করেছেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পরিচয় না দিয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের আদেশ লঙ্ঘন করেছেন।
জানা যায়, কর্তব্যরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করে নিয়ম ভঙ্গ করার কারণে ওই চিকিৎসকের বিচার দাবি করেছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।