বাংলাদেশকে যেন আর পরমুখাপেক্ষী হতে না হয়: প্রধানমন্ত্রী



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড গঠন করে সেই ফান্ড থেকে অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে পায়রা বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং কাজ শুরু করা হচ্ছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে আলাদা একটি ফান্ড তৈরি করছি যেটা বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ফান্ড নামে অভিহিত। সেই ফান্ড থেকে প্রথম যে অর্থটা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সেটা পায়রা বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং এর জন্য। আমরা নিজেদের টাকা দিয়ে কাজ শুরু করে দিচ্ছি। যাতে বাংলাদেশকে আর কখনো পরমুখাপেক্ষী হতে না হয়, কারো মুখের দিকে তাকিয়ে যেন চলতে না হয়। আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি, আমরা বিজয়ী জাতি, নিজের পায়ে দাঁড়াবো আর সম্মান নিয়ে চলবো এটাই হচ্ছে আমাদের চিন্তা।

বৃহস্পতিবার (০৬ মে) সকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার অবকাঠামো ও জলযানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এসকল জলযান ও অবকাঠামোর উদ্বোধন করেন। অন্যদিকে নৌ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে যুক্ত ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কারো কাছে যেন হাত পাততে না হয়। আমরা যেন নিজেরা নিজেদের অর্থ ব্যয় করতে পারি। একসময় পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে একটা চ্যালেঞ্জ ছিল বিশ্বব্যাংকের সাথে। তখন আমি বলেছিলাম কারো অর্থে নয় নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করব। আল্লাহর রহমতে আপনাদের দোয়ায় এবং দেশবাসীর দোয়ায় আমরা নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি করছি।

নৌপথ ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যাপকভাবে সারা দেশের নদী খনন করার জন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০২৪-২০২৫ সালের মধ্যে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ খনন করা। শুধু খনন করলেই চলবে না যেহেতু ক্যাপিটাল ড্রেজিং করার পর প্রতি বছর মেনটেইন্যান্স ড্রেজিংটা করতে হবে। একবার খনন করে ছেড়ে দিলে চলবে না তার কারণ হচ্ছে আমরা সবচাইতে বেশি পলি বহন করি। সেভাবে সে দিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। তাছাড়া আমরা বন্দর সংযোগকারী নদী ড্রেজিং এবং রাস্তাসমূহ ৬ লেন ও ৪ লেনে উন্নীত করা হয়েছে। সমস্ত বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করে দিচ্ছি।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দরের সাথে আমাদের অভ্যন্তরীণ নৌপথগুলোর সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে আমাদের আমদানি-রফতানির আরও সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, সুগম হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বাণিজ্যকে সহজ করার লক্ষ্যে ভারতের সাথে নৌপথে বাণিজ্য আরও বাড়িয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। তাছাড়া বাংলাদেশের বন্দরগুলো যেন নেপাল, ভুটান ও ভারত ব্যবহার করতে পারে সেই সুযোগটাও আমরা সৃষ্টি করে দিয়েছি।

ঢাকার চারদিকের নদী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঢাকার চারপাশে চারটা নদী। অপরিকল্পিত ব্রিজ নির্মাণ এবং বিভিন্ন কারণে দখলের ফলে তাছাড়া দূষণের ফলে সেগুলি খুবই করুণ অবস্থা। সেগুলো যাতে পুনরায় সচল করা যায় এবং যে ব্রিজগুলির কারণে নৌযান চলতে পারে না সে গুলির পরিবর্তে নতুনভাবে ব্রিজ করা এবং সেগুলোকে সংস্কার করা, তাছাড়া নদীর গভীরতা বৃদ্ধি করা অর্থাৎ পানি প্রবাহ যেন অব্যাহত থাকে আর দূষণমুক্ত করবার জন্য প্রত্যেকটা শিল্পাঞ্চলের দূষণমুক্ত ব্যবস্থা যেন করা হয় সে ব্যাপারে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। তাছাড়া নদীগুলো দখলমুক্ত করে মানুষ জন্য একটু বেরোতে পারে, ঘুরতে পারে, মানুষ যেন সেখানে যেতে পারে তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার ব্যবস্থা নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোংলা বন্দর একসময় ছিল চালনা বন্দর। পরে নদীর সরে যায় এরপর মোংলায় সে বন্দরটা হয় এই বন্দরটা যাতে ভালোভাবে সচল হয় তার জন্য জাতির পিতা নিজে উদ্যোগ নিয়ে ঘাসিয়াখালি নদীতে ড্রেজিং করেন। ড্রেজিং করে জাতীয় পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা হয় তার ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।

কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্যে '৭৫ এরপর ২১ বছর পরে আমরা ক্ষমতায় আসি। দেখলাম মংলা বন্দর মুমূর্ষ অবস্থায় পড়ে আছে। আমাদের সবসময় এটা ছিল প্রায় ৪০ ভাগ খাদ্য সামগ্রী মোংলা বন্দরে নামতো এবং খুব সহজে নৌপথে বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে যেত। ঘাসিয়াখালি নদীটা প্রায় বন্ধ অবস্থায় ছিল। সেটা ড্রেজিং করে সচল করা হয়েছে। জাতির পিতার যে চিন্তাভাবনা যে নীতিমালা ছিল সেটাকে মাথায় রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। '৭৫ পরবর্তী যারা ক্ষমতায় ছিল জেনারেল জিয়াউর রহমান, জেনারেল এরশাদ বা খালেদা জিয়া তাদের আমলে কিন্তু কোন ড্রেজার সংগ্রহ করা বা নদী খনন করা এদিকে তাদের কোন দৃষ্টি ছিল না। আমরা ক্ষমতায় আসার পর এ পর্যন্ত ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১৮টি ড্রেজার সংগ্রহ করি এবং আজ আরও ২০টি ড্রেজার বিআইডব্লিউটিএতে যুক্ত হয়ে মোট ৪৫ টি ড্রেজার হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাছাড়া বেসরকারি ড্রেজার দিয়ে বছরে প্রায় ৭৫০ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করা যায়। আর নদ-নদীগুলো সংরক্ষণের জন্য ড্রেজিংয়ের চাহিদা ১ হাজার ৬০০ লাখ ঘনমিটার। আমরা চাই আমাদের দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন হোক, কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে কিছুটা হয়তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি তবুও আমাদের নিজেদেরই পুষিয়ে নিতে হবে তার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।

তিনি বলেন, নদীগুলোকে বাঁচাতেই হবে আমাদের। ইতিমধ্যে চিলমারী এলাকায় নদী বন্দর, এক সময় এই নদী বন্দর চালু ছিল। আমরা সেই নদী বন্দর নির্মাণ এবং বাঘাবাড়ী নদীবন্দর আধুনিকায়ন, গোমতী নদীর নাব্যতা উন্নয়নের কাজ, ঘাঘট, চিনাই এবং বংশী নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি সিলেট এবং কক্সবাজার এলাকায় নদীবন্দর উন্নয়ন, আরিচা ফেরি সার্ভিস চালুসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।

   

জব্বারের বলীখেলার নতুন চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মাথার ওপর বৈশাখের কাঠফাটা রোদ। সেটি উপেক্ষা করে ২০ বাই ২০ হাতের চতুর্ভুজ আকৃতির রিংয়ের চারপাশ ঘিরে অসংখ্য দর্শকের হই-হুল্লোড়। রেফারির বাঁশি বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হলো শক্তির লড়াই। দাঁতে দাঁত চেপে, মাথায় মাথা লাগিয়ে শুরু হলো বাঘা শরীফ ও রাশেদের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই।

ঘামে ভিজে, রোদে পুড়ে অস্থির। তবু যেন ‘কেহ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান’। কিন্তু থামতে যে হবেই! ৩১ মিনিটেও কেউ কারও পিঠ রিংয়ের বালুতে ছোঁয়াতে পারেনি। তবে শেষমেশ আর না পেরে হার মেনে নেন রাশেদ বলী। এর মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক এই বলীখেলা পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন।

১১ রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে রেফারি বাঘা শরীফের হাত উঁচিয়ে বললেন, ‘ওই এবারের আবদুল জব্বার বলীখেলার চ্যাম্পিয়ন’। মন ভাঙলেও মেনে নেন কুমিল্লারই আরেক বলী রাশেদ।

একটা সময় জব্বারের বলীখেলা মানেই ছিল কক্সবাজারের দিদার বলীর হাতে ট্রফি। রেকর্ড ১১ বারের চ্যাম্পিয়ন দিদার ২০১৭ সালে অবসরে যাওয়ার পর থেকে আসল দ্বৈরথটা হচ্ছে জীবন ও শাহজালালের মধ্যে। ২০১৯ সালের বলীখেলায় ফাইনালে জীবনকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিলেন শাহজালাল। পরেরবার শিরোটা পুনরুদ্ধার করেন জীবন। এরপর গতবার শোধ নেন জীবন। তবে এবার দুজনেই নাম প্রত্যাহার করেন।

যুবসমাজকে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করতে ১৯০৯ সালে চট্টগ্রামের বকশিরহাটের ব্যবসায়ী আবদুল জব্বার সওদাগর চালু করেছিলেন বলীখেলা। সময়ের ব্যবধানে লালদীঘির মাঠে বসা ‘জব্বারের বলীখেলা’ হয়ে উঠেছে এই জনপদের অন্যতম আকর্ষণ। শুধু কি তাই? বলীখেলাকে কেন্দ্র করে বৃহত্তর চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলাটিও বসে এখানে। কিন্তু করোনার থাবা এই আনন্দ-উৎসব থামিয়ে দিয়েছিল ২০২০ সালে। এরপর গত বছরও এই মেলা হয়নি একই কারণে। এবারও ঐতিহাসিক এই আয়োজনের ভবিষ্যৎ ঝুলছিল সুতার ওপর। শেষ পর্যন্ত সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর প্রচেষ্টায় তিন বছর পর বলীখেলা দেখল নগরবাসী।

এবার আবদুল জব্বারের বলীখেলায় অংশ নিতে ৮৪ জন বলী নিবন্ধন করেন। তাঁদের মধ্যে ২৫ বছরের তরুণ যেমন ছিল, তেমনি ছিলেন ৭০ বছরের বলীও। প্রথম রাউন্ডে শখের বশে খেলতে আসা বলীরা অংশ নেন। এরপর হয় চ্যালেঞ্জ রাউন্ড। এই রাউন্ড থেকেই জয়ী হয়ে বাঘা শরীফ, রাশেদ, রাসের ও সৃজন চাকমা যান সেমিফাইনালে।

সেমিফাইনাল শেষে ফাইনালে মুখোমুখি হন বাঘা শরীফ ও রাশেদ। ফাইনালে দুই দুরন্ত বলীর লড়াইয়ে এক প্রস্থ নাটকও হলো। ২০ বাই ২০ হাতের চতুর্ভুজ আকৃতির রিংয়ে শক্তির লড়াইয়ে কেউ কাউকে ফেলতে পারছিলেন না। দুজনের মধ্যে বেশ কয়েকবার ধাক্কাধাক্কিও হলো।

পিঠ নিচে ফেলতে না পারলেও অবশ্য বাঘা শরীফ বারবারই পরাস্থ করেন রাশেদতে। খেলার ১১ মিনিটের মাথায় রাশেদ বলে আর ফেরে উঠতে না পেরে সরে দাঁড়ান।

কুমিল্লার হোমনা বাসিন্দা বাঘা শরীফ মাংস বিক্রেতা। কাজের ফাঁকে যে টুকু অবসর মিলে তার পুরোটা দেন বলীখেলায়। কুমিল্লার অন্যতম সেরা বলী হিসেবে পরিচিতি আছে তার। সেজন্য তার নাম হয়ে দাঁড়ায় বাঘা শরীফ।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বাঘা শরীফ বলেন, প্রথমবারের মতো অংশ নিলাম। আর প্রথমবার অংশ নিয়েই চ্যাম্পিয়ন হলাম। যারা সুযোগ করে দিয়েছেন। সামনের আসরগুলোতে আরও শিরোপা চাই।

;

দুই দপ্তরের অনাদায়ী অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমার নির্দেশ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

খাদ্য, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দুই দপ্তরের অডিট আপত্তির বিরুদ্ধে নির্দেশনা দিয়েছে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি। এই দুই দপ্তরের অনিষ্পন্ন অডিট আপত্তির প্রমাণক সাপেক্ষে নিষ্পত্তিসহ অনাদায়ী অর্থ আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমার নির্দেশনা দিয়েছে কমিটি।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ২য় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ এমপি। কমিটির সদস্য ফয়জুর রহমান, মো. মুজিবুল হক, মো. জাহিদ মালেক, ফজিলাতুন নেসা, সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী, নূর মোহাম্মদ, আখতারউজ্জামান, এস. এ. কে একরামুজ্জামান, মো. রেজাউল হক চৌধুরী ও মো. নজরুল ইসলাম বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।

বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন খাদ্য অধিদপ্তর এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এর ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের কমপ্লায়েন্স অডিট রিপোর্ট নম্বর ৩৫/২০২১ এ অন্তর্ভুক্ত অডিট আপত্তির অনুচ্ছেদ নং- ০১, ০২, ০৩, ০৪, ০৫, ০৬, ০৭, ০৮ এবং ০৯ এর বিষয়ে আলোচনা ও প্রমাণক সাপেক্ষে নিষ্পত্তিসহ অনাদায়ী অর্থ আদায়পূর্বক সরকারি কোষাগারে জমা প্রদানের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের রিপোর্টভুক্ত অনিষ্পন্ন অডিট আপত্তিগুলোর মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিষ্পত্তির জন্য প্রমাণকসহ মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে প্রেরণের পরে সিএজি কর্তৃক নিষ্পত্তির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

বৈঠকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সিএজি কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, খাদ্য অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, সিজিডিএফ কার্যালয় এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

;

এক দিনের ব্যবধানে আরও কমল স্বর্ণের দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

একদিন না যেতেই আবারও স্বর্ণের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

বৃহস্প‌তিবার (২৫ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মি‌নিট থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর করা হয়েছে।

ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানো হয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ দাম এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা থেকে কমিয়ে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে, গত ৬, ৮ ও ১৮ এপ্রিল স্বর্ণের দা‌ম বা‌ড়ি‌য়ে‌ছিল বাজুস। এর ম‌ধ্যে ৬ এপ্রিল বে‌ড়ে‌ছিল ১৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল বে‌ড়ে‌ছিল দুই হাজার ৬৫ টাকা। পরে ২০ এপ্রিল ৮৪০ টাকা কমানোর একদিন পর ২১ এপ্রিল আবার ভরিতে ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।

এর দুই দিন পর ২৩ এপ্রিল তিন হাজার ১৩৮ টাকা, ২৪ এপ্রিল ২০৯৯ টাকা ও ২৫ এপ্রিল ভালো মানের স্বর্ণ ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোর ঘোষণা দিল বাজুস। অর্থাৎ তিন দিনে ভ‌রি‌তে স্বর্ণের দাম ক‌মেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।

;

টাঙ্গাইল শাড়িসহ ১৪টি জিআই পণ্যের সনদ বিতরণ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ একটি অমিত সম্ভাবনাময় দেশ। ষড়ঋতুর এ দেশকে প্রকৃতি যেমন দু'হাত ভরে তাঁর বৈচিত্র্যময় সম্পদ ঢেলে দিয়েছে, তেমনি এদেশের মেহনতি মানুষ তাঁদের আপন শৈল্পিক কারুকার্যের মাধ্যমে অনন্যসাধারণ সামগ্রী প্রস্তুত করে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের সুনাম ও খ্যাতি বৃদ্ধি করেছে। মাটি, বায়ু, পানি, পরিবেশ, কারিগরদের দক্ষতা প্রভৃতি স্বতন্ত্র ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ছোট এ ভূখণ্ডের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব পণ্যকে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি এর গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) মন্ত্রী রাজধানীর বেইলি রোডে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমির মাল্টিপারপাস হলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) আয়োজিত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ও নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা-সহ ১৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ডিপিডিটি'র মহাপরিচালক মোঃ মুনিম হাসান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা, ফরেন সার্ভিস একাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফী বিনতে শামস ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা।

মন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে জিআই পণ্যের প্রচার ও প্রসারে আমাদের এখনই কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশের বাংলাদেশ মিশনসমূহ, দেশের সকল আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয়ভাবে এসব পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মেলায় জিআই পণ্যসমূহ প্রদর্শন করা যেতে পারে। তিনি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ডিপিডিটি, বিসিক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এসব পণ্যের উন্নয়ন ও প্রসারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, বাংলাদেশ এখন কোন খালি বাস্কেট নয়, এটি একটি পরিপূর্ণ ভরা বাস্কেট। আমাদের সম্পদের কোনো অভাব নেই, প্রয়োজন এর সদ্ব্যবহারের। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা, কারিগরি সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব সম্পদ ও পণ্যের প্রচার-প্রসার ঘটাতে হবে।

সিনিয়র শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে এমন ৫০০টি পণ্যের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছি। একটু দেরিতে হলেও আমরা এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় আমরা ২০১৩ সালে 'ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন প্রণয়ন করি এবং পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করি। বিশেষ অতিথি বলেন, আমাদের জিআই পণ্যকে সুরক্ষা দিতে হবে এবং একইসঙ্গে এর পেটেন্ট দিতে হবে। জিআই পণ্যের প্রচার-প্রসারে বিভিন্ন উৎসব, পালাপার্বণ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এসব পণ্যকে আমরা উপহার হিসেবে প্রদান করতে পারি। তাছাড়া এসব পণ্য সম্পর্কে টিভিসি, ডকুমেন্টারি তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যবস্থা প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল শাড়িসহ বাংলাদেশের মোট ১৪টি ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সনদ প্রদান করা হয়। সেগুলো হলো যথাক্রমে গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মৌলভীবাজারের আগর, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মুক্তাগাছার মণ্ডা, যশোরের খেজুরের গুড়, রাজশাহীর মিষ্টি পান এবং জামালপুরের নকশিকাঁথা। এ নিয়ে ডিপিডিটি কর্তৃক জিআই সনদপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১টিতে।

;