কাপ্তাই হ্রদে স্পিডবোটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ
ঈদকে কেন্দ্র করে পাহাড়ের ঘরমুখো মানুষদের কাছ থেকে দ্বিগুণ হারে ভাড়া আদায় করছে কাপ্তাই হ্রদে চলাচলকারী স্পিডবোটগুলো।
সারাবছরই রাঙামাটি থেকে লংগদু উপজেলায় যাতায়াতকারী স্পিডবোটগুলো জনপ্রতি ৫শ টাকা হিসেবে ভাড়া নিলেও ঈদ কে কেন্দ্র বুধবার (১২মে) সকাল আটটার পর থেকেই ভাড়া আদায় করেছে একহাজার টাকা করে। এতে করে ঘরমুখো নিম্ন আয়ের কয়েকশো যাত্রী বেশ বিপাকে পড়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাঙামাটি থেকে বর্তমান করোনাকালীন সময়ে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় দেশীয় ইঞ্জিন বোট ও স্পিডবোটকেই চলাচলের একমাত্র বাহন হিসেবে ব্যবহার করে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করছে। ৫০ থেকে ৭০টি স্পিডবোটে করে যাত্রীরা ৫শ টাকা করে চলাচল করলেও মঙ্গলবার থেকে ভাড়া আদায় করা হয় ৬শ টাকা করে। পরে বুধবার (১২মে) সকাল আটটার পর থেকে ভাড়া আদায় করা হয় হাজার টাকা করে।
সরেজমিনে গিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে অভিযোগ প্রাপ্তির পর বিষয়টি নিয়ে জানতে স্পিডবোট মালিক সমিতির সভাপতি কুদ্দুস কোম্পানীকে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
লংগদুমুখী যাত্রী শিক্ষানবিশ আইনজীবী হারুনুর রশিদ, ছাত্রনেতা নাজিম আল হাসান, যাত্রী শ্যামল মিত্রসহ একাধিক যাত্রী জানালেন,বিগত পুরো বছরজুড়েই স্পিডবোটগুলোতে জনপ্রতি যাত্রী থেকে ৫’শ টাকা ভাড়া নিতো। তবে বুধবার সকালেও এই ভাড়া ৬’শ টাকা নিয়েছে। কিন্তু সকাল আটটার পর থেকে হঠাৎ করেই এক হাজার টাকা দাবি করতে শুরু করে তারা। এতে করে সময় স্বল্পতার কারণে কিছু কিছু যাত্রী কষ্ট হলেও বাধ্য হয়ে চলে গেলেও নিম্ন আয়ের শতাধিক মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ভাড়া কমানোর অনুরোধ জানাতে থাকে। যাত্রীদের ভাড়া প্রদানে বাধ্য করার কৌশল হিসেবে স্পিডবোট মালিক পক্ষের নিয়োজিত লাইনম্যান ঘটনাস্থল থেকে সটকে পরে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বিষয়টি দেখছেন বলে প্রতিবেদককে জানান।
সাংবাদিকের তৎপরতা ও যাত্রীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠায় দুপুরে ঘটনাস্থলে আসেন লাইনম্যান মহিউদ্দিন। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে জানান, সামান্য তেল খরচ বেশি নেওয়া হচ্ছে তার চেয়ে বেশি কিছু নয়।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, প্রতিদিনই রাঙামাটি থেকে কাপ্তাই হ্রদ দিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় অন্তত দেড় শতাধিক যাত্রীবাহী স্পিডবোট চলাচল করে। প্রশাসনের কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়াই এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান, পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট কর আদায়কারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে কোনো প্রকার ট্যাক্স না দিয়ে এবং অবৈধভাবে স্ট্যান্ড বানিয়ে স্পিডবোট ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আ.লীগ-বিএনপি, জেএসএস ও অন্যান্য আঞ্চলিক দলের কয়েকজন নেতা।
এদিকে স্পিডবোটগুলোতে মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি। প্রতিবাদকারী যাত্রীদের সাথে প্রতিনিয়তই বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হচ্ছেন স্পিডবোট চালকরা। যাত্রী হয়রানি চরমে পৌঁছেলেও দেখার যেন কেউ-ই নেই।