করোনা ঝুুঁকিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে খুলনার মার্কেটে মানুষের ঢল
দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের সবথেকে বড় উৎসব ঈদুল ফিতর। শেষ মুহূর্তে মার্কেট ও শপিংমলে ক্রেতাদের ভিড়ে লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে মার্কেটপাড়া। স্বাস্থ্যবিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে করোনা মহামারিকে যেন পায়ে মাড়িয়ে চলছে সবার কেনাকাটা!
বৃহস্পতিবার (১৩ মে) খুলনা নগরীর নিউ মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, জলিল মার্কেট, হকার্স মার্কেট, শিববাড়ী মোড়ের শোরুম, সোনাডাঙ্গার শো রুম, ডাকবাংলা মোড়, রেলওয়ে মার্কেট, পিকচার প্যালেস মোড়, বড় বাজার, মশিউর রহমান মার্কেট, কবি কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, দরবেশ চেম্বার, নান্নু সুপার মার্কেট, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মার্কেট, হাজী মালেক চেম্বার, নূর চেম্বার, এশা চেম্বার, আড়ং, অঞ্জনস ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি মার্কেট এলাকা ও বিপনীবিতান গুলোতে ঈদের আমেজ বইছে। সব ধরণের ক্রেতা সমাগমে মুখরিত হয়ে উঠেছে দোকানপাট। শেষ মুহূর্তে বেচাকেনায় যেনো ধুম পরেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আর ঈদ উপলক্ষে শপিং করতে হাজারো মানুষের ঢলে ঠাসা খুলনার মার্কেটপাড়া। নেই কোনো স্বাস্থ্যবিধি, নেই কোনো সচেতনতা। সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতেও দেখা যায়নি কাউকেই।
নগরীর ডাকবাংলা মোড়ে খুুলনা বয়রা এলাকার বাসিন্দা অাশরাফুল ইসলাম বলেন, মনেকরেছিলাম করোনার ভেতর এখন মার্কেটে লোক কম হবে। সেজন্যই কেনাকাটা করতে শেষ মুহূর্তে অাসা, যে ফাঁকায় ফাঁকায় একটু শপিং সেরে নেই। কিন্তু এখন তো এসে দেখি অন্যরকম চিত্র। এরকম জনসমাগম হলে করোনা ভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার অাশংকা রয়েছে। বিশেষ করে নিক্সন মার্কেটের ভেতরে ভিড় দেখলাম সবচেয়ে বেশি, যা সত্যিই এই পরিস্থিতিতে গা শিউরে ওঠার মতো।
এদিকে নগরীর বড় বাজার এলাকার ভেতরেও প্রায় একই চিত্র। ভিড়ের মধ্যে দোকানে দোকানে ঘুরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনছেন ক্রেতারা। কাউকে দেখে মনেই হচ্ছেনা বর্তমান সময়টি করোনা মহামারির। করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে এবং সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব একেবারেই উপেক্ষিত। অনেক দোকানদার ও ক্রেতাদের মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। এছাড়া কেউ কেউ হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে বা দোকানে রাখলেও অধিকাংশ দোকানেই তা দেখা যায়নি। পুরো চিত্র দেখে মনে হয়েছে, করোনার ভয়াবহতা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে নগরী।
নগরীর অভিজাত শপিং সেন্টার নিউ মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, জলিল টাওয়ার মার্কেট ও শিববাড়ী মার্কেটের সামনে ফুল বডি স্যানিটাইজার মেশিন থাকলেও দু-একটি ছাড়া বাকিগুলো চলতে দেখা যায়নি।
নগরীর পিটিঅাই মোড় থেকে শপিং করতে অাসা অাফরোজা পারভীন বলেন, দীর্ঘ সময় শপিং করতে না পারায় আসতে বাধ্য হয়েছেন তারা। তবে করোনা সংক্রমণ নিয়েও ভয়ে আছেন।
এদিকে রেলওয়ে মার্কেটের ছোঁয়া ফ্যাশন হাউজের স্বত্বাধিকারী খমিন অাহমেদ বলেন, অামরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ করছি। ক্রেতাদের দিচ্ছি হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক না থাকলে দিচ্ছিনা সেবা। এসব করতে গিয়ে ক্রেতারাই অসন্তুষ্ট হচ্ছেন।
এ বিষয়ে খুলনা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি'র সভাপতি কাজী অামিনুল হক বলেন, দীর্ঘদিন বন্ধের ফলে প্রয়োজনের তাগিদেই এখন মানুষ মার্কেটে আসছে। আমরা সব সময়ই ব্যবসায়ীদের সচেতন করছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পণ্য বিক্রির জন্য। যারা মানছেন না তাদের জন্য কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে এবং আমরা সচেতনভাবে ব্যবসা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে উল্টো হচ্ছে ক্রেতাদের কাছ থেকেই। ক্রেতাদের কাছ থেকেই স্বাস্থ্যবিধি পালনে দেখা গেছে অনীহা।