ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে খুলনায় দমকা বাতাস, আকাশে ঘন মেঘ
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আরও ঘনিভূত হয়ে উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। যার ফলে খুলনার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে। একই সাথে থেমে থেমে কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি অাবার কখনো মাঝারি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। বইছে দমকা বাতাস।
মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল থেকেই ইয়াসের প্রভাবে খুলনার আকাশে হালকা মেঘ ছিলো। বেলা বাড়ার সাথে সাথে আকাশে ঘন কালো মেঘের সৃষ্টি হয়। একই সাথে শুরু হয় মাঝারি বর্ষণ। এ রিপোর্ট লেখার সময় খুলনায় ঝড়ো বাতাস না থাকলেও গুমোট অাবহাওয়া বিরাজ করেছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বার্তা২৪.কম কে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সকাল থেকে খুলনার আকাশে মেঘ ডাকছে। হালকা বাতাসও আছে অনেক স্থানে। গত কয়েকদিন তাপদাহ থাকলেও খুলনায় মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কিছুটা কমেছে।
তিনি আরও জানান, দুপুর পর্যন্ত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা বন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ সর্বোচ্চ ৮৯ কিলোমিটার, যা ঝড়ো হাওয়া বেগে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টি ধীর গতিতে এগিয়ে আসছে খুুলনা ও পশ্চিমবঙ্গের দিকে। তবে স্থলভাগ অতিক্রমের সময় ঝড়টির গতি কমতেও পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নদীতে জোয়ারের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হবার সম্ভাবনা আছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলার জন্য খুলনা জেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৪৯টি সাইক্লোন শেল্টার। এসব সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিতে পারবেন প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। এ ছাড়া প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৫ হাজার ৩২০ জন স্বেচ্ছাসেবক।
খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়াদ্দার বলেন, খুলনার উপকূলীয় অঞ্চল কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটা উপজেলার সব স্কুল-কলেজকে সাইক্লোন শেল্টার হিসেবে ব্যবহার করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্পানের সময় ৮১৪টি প্রতিষ্ঠানকে সাইক্লোন শেল্টার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। এবারও সে রকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ৮১৪টি সাইক্লোন শেল্টারে প্রায় সাড়ে ৪লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন।
খুলনার জেলা প্রশাসক হেলাল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে সম্ভাব্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমি খুলনার উপকূলীয় অঞ্চলে তদারকি করছি। করোনা ঝুঁকির এ সময়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ঘূর্ণিঝড়ে সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে প্রায় দুই লাখ ৩৮ হাজার ৯৫০ জন মানুষের ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত ৩৪৯ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খুলনার উপকূলীয় এলাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। সতর্কতার জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে মাইকিং করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ঝড় শুরু হলে জেলা-উপজেলা ও উপকূলীয় অঞ্চলের সিপিপির ২ হাজার ৪৬০ জন এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার এক হাজার ১০০ স্বেচ্ছাসেবক সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার জন্য প্রস্তুত আছে। এছাড়া খুলনার ৯ উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।