শরবত বেচে স্বচ্ছল হতে চান শামীম
বেকারির শ্রমিক ছিলেন শামীম ফকির (৩৫)। কিন্তু ভাগ্য বদলাতে সেই কাজ ছেড়ে নামেন শরবতের ব্যবসায়। কিছুটা সফলও হন। কিন্তু করোনায় ব্যবসা বন্ধ হলে জীবিকার তাগিদে অনেক কিছু করা চেষ্টা করেন তবে তা স্থায়ী হয়নি। তাই ঘুরে দাঁড়াতে ফের শরবতের ব্যবসায় নেমেছেন তিনি। আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শরবত বেচেই স্বচ্ছল হওয়ার।
বুধবার (২৬ মে) দুপুরে ময়মনসিংহ শহরের মধ্যবাজার এলাকায় দেখা মিলে শামীমের। সড়কের পাশে ভ্যানে শরবত বিক্রি করছে সে। কাছে গিয়ে কথা হয় তার সাথে। কথায় কথায় শরবত বিক্রেতা হওয়ার গল্পটা বের হয়ে আসল শামীমের মুখ থেকেই।
শামীম ফকির বলেন, অভাবের তাড়নায় পড়াশোনা হয়নি। পেটের দায়ে ছোটবেলায় কাজ নেই বেকারিতে।কিন্তু বিয়ের পর আয়ের টাকায় সংসার চালাতে কষ্ট হত। পরে ভাগ্যবদল করতে চাচা আমির হামযার পরামর্শে শরবতের ব্যবসায় নামি। আয়ও হতে থাকে ভাল। কিন্তু গত বছর করোনার প্রকোপে ব্যবসা বন্ধ হলে অন্য কাজে স্থায়ী হওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। তাই ঘুরে দাঁড়াতে আবারো এই পেশায় এসেছি।
প্রতিদিন দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হারুনপার্ক এলাকায় শরবত বিক্রি করেন শামীম। তার এখানে লেবু, অ্যালোভেরা, ইসবগুল, তুকমা, বিভিন্ন প্রকার ফল সহ ভেষজ শরবত পাওয়া যায়। দাম ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা। দিনশেষে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা বিক্রি করে লাভ হয় ৪ থেকে ৫শ টাকা।
খোলা আকাশের নিচে ভ্যানে বিক্রি করা ভেষজ শরবতের মান কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত এ নিয়ে স্বাস্থ্যসচেতন মহলের প্রশ্ন রয়েছে। তবে শামীমের দাবি শরবত স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি হয়। এতে ক্ষতিকারক কিংবা ভেজাল কিছু নেই। এই শরবতে খেয়ে কেউ অসুস্থ হয়েছেন এমনটাও শোনা যায়নি।
দাম্পত্য জীবনে শামীমের স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। বড় ছেলে হেফজ অধ্যয়ন করছে। ছোট ছেলের বয়স ২ বছর। শরবত বিক্রির আয়ে চলে তার সংসার ও সন্তানের পড়াশোনার খরচ।
করোনায় ব্যবসা বন্ধ থাকায় শামীমের ভ্যান গাড়িটি পরিত্যক্ত পড়ে ছিল। এতে করে গাড়ির চাকা, ব্যাটারি, ছাউনি ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ রোদ-বৃষ্টিতে ভিজে-পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। টাকার জন্য ভ্যান মেরামত না করতে পারায় শহরের অলি-গলি ঘুরে শরবত বিক্রি করতে পারেন না তিনি।
শামীম ফকির বলেন, দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত একা পরিশ্রম করে শরবত বিক্রি করছি। গরমের মধ্যে শরবতের চাহিদা রয়েছে। ব্যবসা ঠিকমত চালিয়ে যেতে পারলে ভ্যানগাড়িটা মেরামতের পাশপাশি আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।