আবারও আগুন সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে বিএনপি: কাদের
বিএনপি নির্বাচন বয়কট করে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়ে আবারও আগুন সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (০৮ জুন) আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে করোনাভাইরাসের সুরক্ষার সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব এখন আবার নতুন করে আন্দোলনের হাঁকডাক শুরু করেছেন। এখন আন্দোলনটা কোন বছর হবে? দেখতে দেখতে ১২ বছর, আন্দোলন হবে কোন বছর? একবার বলে এসএসসি পরীক্ষা, আবার বলে এইচএসসি পরীক্ষার পরে। আবার বলে রোজার ঈদের পরে কিংবা কোরবানির ঈদের পরে। কত ঈদ ও পরীক্ষা চলে গেলো কিন্তু বিএনপির আন্দোলনতো চোখে পড়েনি।
এখন আবার বলে গণঅভ্যুত্থান করবে, এই দেশে ’৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিলো, পরে গণআন্দোলন হয়েছে। তারা ’৬৯ পর আবার গণঅভ্যুত্থান দেখাবে, ১২ বছর ধরে দেখাচ্ছে। কখন দেখবো আল্লাহ মাবুদ জানে। বিএনপি উপ-নির্বাচন বয়কট করে ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। তারা আবারও আগুন সন্ত্রাসের পথে হাঁটছে। আন্দোলনের নামে সহিংস কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হলে আওয়ামী লীগ রাজপথে সমুচিত জবাব দেবে।
যে কোন মুহূর্তে বিএনপি বজ্রপাতে মৃত্যুর জন্য শেখ হাসিনার সরকারকে দায়ী করতে পারে বলে সন্দেহ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি সবকিছুতে সরকারের দোষ খুঁজে । আমি মাঝে মাঝে ভাবি বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। তারা আবার নাকি বলে, যে আওয়ামী লীগই দায়ী। কখন আবার বজ্রপাতে মৃত্যুর জন্য শেখ হাসিনার সরকারকে দায়ী করে। সেটাই আমি ভাবছি। এটাও তারা করবে। ঘূর্ণিঝড় আসার সময় বলেছিলো, সরকারের জন্য ঘূর্ণিঝড় হয়েছিলো। বস্তিতে আগুন লেগেছে, সেটার জন্যও আওয়ামী লীগকে দায়ী করে। আমরা আগুন লাগিয়ে মানুষের দুর্ভোগের সৃষ্টি কেন করবো? আগুন সন্ত্রাসতো তাদের ব্যাপার।
করোনাভাইরাসের সুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে বিএনপিকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল বলেন, করোনাভাইরাসের বিষয়ে সরকারের সচেতনতা এবং সতর্কতা নিয়ে যারা প্রশ্ন করেন। তারা বিরোধিতার খাতিরেই বিরোধিতা করেন। বাজেটও বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই প্রণোদনা প্যাকেজগুলো দেওয়া হলো। এই টাকা কোথা থেকে আসছে? এটা কি বিরোধী দল দিচ্ছে? এটাতো সরকারি কোষাগার থেকে জনগণকে দিচ্ছে সরকারই।
আমরা প্রথম ঢেউ অতিক্রম করেছি, দ্বিতীয় ঢেউও অতিক্রম করতে চলেছি। জীবন ও জীবিকার সমন্বয় করে সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। এতে একজন মানুষও অনাহারে মারা গেছেন বলে আমাদের জানা নাই। সরকার অন্যান্য দেশের তুলনায় সফলভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন। এটা বিএনপিকে আর কতটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে। তারা দেখেও দেখে না, শুনেও শুনে না। তারা কানে লাগিয়েছে তুলো। কিছুই শুনতে পায় না। তাদের চোখে ঠুলি। চোখেও দেখতে পায় না। ভালো কিছু তাদের চোখে পড়ে না। শুধু সমালোচনার জন্য দিনরাত বিষোদগার করছে।
কাদের বলেন, বিএনপি ফিলিস্তিনে ওষুধ পাঠিয়েছে বলে আমরা শুনেছি। তাদেরতো কতগুলো ওষুধ কোম্পানি রয়েছে। তারা অভাবে আছে তাতো না। খুবই বড় বড় ওষুধ কোম্পানি আছে। তারাতো এই সময়ে করোনা চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করতে পারেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ মোকাবিলার পরে এখন দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় আমরা ভালো অবস্থানে রয়েছি। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের সীমান্ত এলাকাগুলোতে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। প্রাণহানি বাড়ছে। এই অবস্থায় পরিস্থিতি স্টাবল এই কথা বলা যায় না। সংক্রমণ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। মুত্যু ৩০, ৩৫ বা ৪০’র কোটায় আছে। তাও বলা যায় না। করোনাভাইরাস আমাদের নিয়ন্ত্রণেই চলে এসেছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে বৃদ্ধি পায়। আসলে করোনা আনপ্রেডিক্টেবল। কখন যে কোন দিকে মোড় নিবে বলা মুশকিল। কাজেই আমাদের সবসময়ই সতর্ক থাকতে হবে।
সময়মতো টিকা সংগ্রহ করতে পারার আশা প্রকাশ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ভারত তাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে করোনা টিকা দিতে পারছে না। তারপরও অন্যান্য সোর্স থেকে সংগ্রহ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টার কোন কমতি নেই। ইনশাআল্লাহ অন্যান্য দেশ থেকে সময়মতো টিকা সংগ্রহ করতে পারবো। সেই ব্যাপারে সরকার সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। টিকার সংকট নিয়ে বিরোধী দল যেটা বলে আসছে সেটা এখানে সৃষ্টি হবে না।
রাজশাহীতে করোনা পরিস্থিতি খারাপ রূপ নিয়েছে। সেখানে হাসপাতালে অক্সিজেনের এবং বেডের কিছুটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সরকার সেটা সরবারাহ করছে। ভারতে যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিলো আমাদের এখনে তা সৃষ্টি হয় নাই। কারণ প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। তিনি ঝড়ের সময়ও যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। করোনা আরও ভয়ংকর রূপ নিতে পারে এটা তার মাথায় আছে। এই জন্য তিনি সববিষয়ে যথাযথ নজর রাখছেন এবং ব্যবস্থা নিচ্ছেন। যেসব জায়গায় সংক্রমণ বেশি, সেখানে আঞ্চলিক লকডাউন দেওয়া হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সভাপতিত্বে দলের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক রোকেয়া সুলতানা, কার্যনির্বাহী সদস্য সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।